বাবার সন্দেহ

চিকিৎসক তরুণীকে খুন-ধর্ষণ করা হয়েছিল অন্য জায়গায়?

পশ্চিমবঙ্গ প্রতিনিধি পশ্চিমবঙ্গ প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ১১:১৩ এএম, ১৮ আগস্ট ২০২৪
সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলছেন মৌমিতা দেবনাথের বাবা।

আর জি কর হাসপাতালের মধ্যে কর্মরত অবস্থায় ধর্ষণের পর হত্যার অভিযোগ উঠেছে মেডিকেল শিক্ষার্থী মৌমিতা দেবনাথকে। কিন্তু আদৌ তাকে সেখানেই হত্যা করা হয়েছে, নাকি অন্য কোথাও হত্যার পর ঘটনাস্থলে নিয়ে আসা হয়েছিল, এবার তা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করলেন ছাত্রীর বাবা শেখর রঞ্জন দেবনাথ।

শনিবার (১৭ আগস্ট) সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমার মনে হচ্ছে, ওখানে যে খুন করা হয়েছিল, তা নিয়েও সন্দেহ রয়েছে। তাহলে কি অন্য ঘরে খুন হয়েছে? হতে পারে। হয়তো তথ্য-প্রমাণ লোপাটের জন্যই এটি করে থাকতে পারে।

আরও পড়ুন>>

এ ঘটনার পেছনে পুরো কর্তৃপক্ষ জড়িত বলে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগীর বাবা। কর্তৃপক্ষের গাফিলতি না থাকলে এমন নৃশংস ঘটনা ঘটতো না বলে বিশ্বাস তার।

তবে ইন্টার্নদের মধ্যে কয়েকজনের বিরুদ্ধে সন্দেহ প্রকাশ করে তাদের একটি নামের তালিকা সিবিআই’র হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে বলে একটি মহল থেকে যে প্রচার করা হচ্ছিল, সেটি অস্বীকার করেছেন শেখর রঞ্জন দেবনাথ।

গোটা ঘটনার পেছনে একটি বড় চক্র কাজ করছে বলে অভিযোগ করেছেন তিনি। তবে সেই বড় চক্রটা কি তা জানাতে পারেননি। হাসপাতালে কি অবৈধ কাজকর্ম হতো? শেখর রঞ্জনের উত্তর, ‘নিশ্চয়ই হতো।’

কর্তৃপক্ষের গাফিলতির অভিযোগ তুলে নিহত ছাত্রীর মা বলেন, পুলিশের হাতে গ্রেফতার হওয়া সিভিক পুলিশ সঞ্জয় রায় আসল দোষী হিসেবে মনে করছি না। কারণ আমার মেয়ে ওইদিন সিঙ্গেল রুমে ছিল। এটি ভেতরের কেউ না জানালে সঞ্জয় রায় জানতো না।

মায়ের স্পষ্ট বক্তব্য, আমার মেয়ের মরদেহ দেখে কখনোই মনে হয়নি কোনো একা ব্যক্তির পক্ষে এই কাজ করা সম্ভব। এমনকি, ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ কর্মকর্তারাও তাদের বাড়িতে এসে একাধিক ব্যক্তি জড়িত থাকার কথা বলেছেন।

আরও পড়ুন>>

সিবিআই তদন্ত নিয়ে তিনি বলেন, পুলিশের তদন্ত নিয়ে কিছু গাফিলতি আমরা লক্ষ্য করেছিলাম। সেজন্যই সিবিআই তদন্তের আবেদন জানিয়েছিলাম।

কলকাতার আর জি কর মেডিকেল কলেজের পোস্ট গ্ৰ্যাজুয়েটের ছাত্রী মৌমিতা দেবনাথকে গত ৯ আগস্ট আর জি কর মেডিকেল কলেজে ধর্ষণের পর খুনের অভিযোগ ওঠে। এ নিয়ে সরগরম রাজ্য রাজনীতি। কলকাতা পুলিশের স্পেশাল ইনভেস্টিগেশন টিম এই খুনের ঘটনার সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগে সঞ্জয় রায় নামে এক সিভিক ভলেন্টিয়ারকে গ্ৰেফতার করেছে।

তবে পুলিশের তদন্তের ওপর ভরসা রাখতে না পেরে গত ১৩ আগস্ট কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানমের এজলাসে মামলা করে নিহত ছাত্রীর পরিবার। সেই মামলায় কলকাতা হাইকোর্ট পশ্চিমবঙ্গ সরকারের দেওয়া কেস ডায়েরি দেখার পর সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেন।

গত ১৪ আগস্ট এই নির্মম হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে দেশজুড়ে নারীদের ‘রাত দখলের’ কর্মসূচি আহ্বান করা হয়। পাশাপাশি, এই নির্মম হত্যার প্রতিবাদে পশ্চিমবঙ্গের সব সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে কর্মবিরতি পালন করেন চিকিৎসকরা।

ডিডি/কেএএ/

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।