সীমান্তবর্তী অঞ্চল থেকে লোকজনকে সরিয়ে নিচ্ছে রাশিয়া
ইউক্রেনের সীমান্তে ক্রমবর্ধমান সামরিক তৎপরতা দেখে বেলগোরোদ অঞ্চল থেকে বাসিন্দাদের সরিয়ে নিতে শুরু করেছে রাশিয়া। বেলগোরোদের গভর্নর সোমবার (১২ আগস্ট) ঘোষণা করেছেন, এই অঞ্চলের একটি জেলার বেসামরিক নাগরিকদের নিরাপদ জায়গায় সরে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
বেলগোরোদ ছাড়াও সীমান্তবর্তী আরেকটি শহর কুরস্ক থেকেও বাসিন্দাদের নিরাপদ জায়গায় সরিয়ে নিয়েছে রাশিয়া। কুরস্কতে উভয় পক্ষের মধ্যে ব্যাপক যুদ্ধ চলছে বলে জানা গেছে। বেলগোরোদ অঞ্চলের গভর্নর ব্যাচেস্লাভ গ্ল্যাডকভ তার টেলিগ্রাম চ্যানেলে সতর্ক করে বলেছেন, শত্রুরা ক্রাসনোয়ারুজস্কি জেলার সীমান্তে সক্রিয় হয়ে উঠেছে।
‘জনগণের নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে আমরা ক্রাসনোয়ারুজস্কিতে বসবাসকারী লোকদের নিরাপদ স্থানে নিয়ে যেতে শুরু করেছি। আমি নিশ্চিত যে আমাদের সেনারা শত্রুদের হুমকি মোকাবিলা করার জন্য সব ধরনের পদক্ষেপ নেবে।’ তবে বেলগোরোদ থেকে ঠিক কতসংখ্যক বাসিন্দা সরিয়ে নেওয়া হয়েছে, তা স্পষ্ট করে জানাননি গ্ল্যাডকভ।
রুশ সংবাদ সংস্থা তাসের খবর অনুযায়ী, রাশিয়া এরই মধ্যে সীমান্ত এলাকা থেকে ৭৬ হাজারের বেশি মানুষকে সরিয়ে নিয়েছে। বেসামরিক ব্যক্তিদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কর্মকর্তাদের সীমান্ত এলাকা থেকে লোকজন সরিয়ে নেওয়ার কাজের গতি আরও দ্রুত করার নির্দেশ দিয়েছেন বলেও জানান ওই অঞ্চলের ভারপ্রাপ্ত গভর্নর স্মিরনভ।
পরিস্থিতি বিবেচনায় গত শনিবার ইউক্রেনের তিন সীমান্ত এলাকায় কঠোর নিরাপত্তাব্যবস্থা নিয়েছে রাশিয়া। এদিকে মস্কোর ঘনিষ্ঠ মিত্র বেলারুশ ইউক্রেন সীমান্তে আরও সেনা মোতায়েন করেছে। বেলারুশের অভিযোগ, ইউক্রেন তাদের আকাশসীমা লঙ্ঘন করেছে।
এদিকে, শনিবার (১০ আগস্ট) রাশিয়ার ভেতরে ঢুকে হামলার কথা স্বীকার করেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। সেই হামলা সোমবার সপ্তম দিনে গড়িয়েছে। ইউক্রেনের সেনাদের প্রতিরোধে পাল্টা হামলা শুরু করেছে রুশ বাহিনী। তবে এরই মধ্যে ইউক্রেনীয় সেনারা রাশিয়ার ভেতর প্রায় ৩০ কিলোমিটার ভেতরে অগ্রসর হয়েছেন।
এদিকে, রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানায়, কুরস্ক অঞ্চলে তারা শনিবার রাতে ইউক্রেনের ১৪টি ড্রোন ও ৪টি ক্ষেপণাস্ত্র ধ্বংস করেছে। এর বাইরে রাশিয়ার অন্য অঞ্চলে হামলায় ব্যবহৃত ইউক্রেনের আরও ১৮টি ড্রোন ধ্বংস করা হয়েছে।
সামরিক বিশেষজ্ঞদের চোখে রাশিয়ার ভেতরে ইউক্রেনের আকস্মিক এই হামলা ক্রেমলিনের দুর্বলতা সামনে এনেছে। তবে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন একে বড় ধরনের উসকানি হিসেবে দেখছেন।
রুশ সেনাপ্রধান ভ্যালেরি গেরাসিমভ জানিয়েছেন, ইউক্রেনের হামলা ঠেকানো হয়েছে। তবে ইউক্রেনীয় সেনাদের এখনো সীমানার ওপারে পাঠানো যায়নি। রুশ সামরিক ব্লগাররা বলছেন, কুরস্ক অঞ্চলে বাড়তি সেনা পাঠানোর পর পরিস্থিতি স্থিতিশীল রয়েছে। তবে ইউক্রেনও ওই অঞ্চলে তাদের সেনাসংখ্যা বাড়াচ্ছে।
সূত্র: আল জাজিরা
এসএএইচ