সংক্ষিপ্ত নোটিশে ভারতে যাওয়ার অনুরোধ জানিয়েছিলেন শেখ হাসিনা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৪:৪৭ পিএম, ০৬ আগস্ট ২০২৪
শেখ হাসিনা/ ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশের ইতিহাসে এক নতুন দিনের সূচনা হয়েছে গত ৫ আগস্ট। কোটা সংস্কার বিরোধী আন্দোলন থেকে এক দফা দাবির প্রেক্ষিতে শেষ পর্যন্ত ক্ষমতা ছেড়ে দেশ থেকে পালাতে বাধ্য হন শেখ হাসিনা। বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করার পরই ভারতে পালিয়ে যান তিনি।

এ বিষয়ে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর মঙ্গলবার (৬ আগস্ট) বলেন, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগের পর সংক্ষিপ্ত নোটিশে ভারতে আসার জন্য অনুরোধ জানিয়েছিলেন শেখ হাসিনা। বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি, ভারতের প্রতিক্রিয়া এবং আনুমানিক ১৯ হাজার ভারতীয় নাগরিকের অবস্থা সম্পর্কে পার্লামেন্টে এক ব্রিফিংয়ে জয়শঙ্কর বলেন, বাংলাদেশে অবস্থানরত ভারতীয়দের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ এবং সার্বক্ষণিক যোগাযোগ বজায় রেখেছে ভারত। একই সঙ্গে ভারতীয় নাগরিকদের প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য বাংলাদেশের কাছে আহ্বান জানানো হয়েছে।

এর আগে মঙ্গলবার (৬ আগস্ট) সকালে বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনার জন্য সর্বদলীয় বৈঠক বসেছিল ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার। ভারতীয় পার্লামেন্টে অনুষ্ঠিত বৈঠকে নেতৃত্ব দেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। এসময় বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি এবং ভারত সরকারের নেওয়া পদক্ষেপগুলোর বিষয়ে উপস্থিত নেতাদের ব্রিফ করেন তিনি।

এনডিটিভি জানিয়েছে, জয়শঙ্কর ছাড়াও সর্বদলীয় এই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং এবং সংসদীয় বিষয়ক মন্ত্রী কিরেন রিজিজু।

এনডিটিভি জানিয়েছে, শেখ হাসিনাকে সাময়িকভাবে ভারতে থাকার অনুমোদন দিয়েছে নয়াদিল্লি। তবে এই সময়ের মধ্যে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে তার সাক্ষাৎ হবে কি না, তা নিশ্চিত নয়।

বাংলাদেশের পরিস্থিতির দিকে নজর রাখা হচ্ছে বলে জানান জয়শঙ্কর। তিনি বলেন, আমরা আমাদের কূটনৈতিক মিশনের মাধ্যমে বাংলাদেশে ভারতীয় নাগরিকদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ এবং ক্রমাগত যোগাযোগ রাখছি। বর্তমানে বাংলাদেশে ১৯ হাজার ভারতীয় নাগরিক রয়েছে যার মধ্যে প্রায় ৯ হাজারই শিক্ষার্থী।

তিনি বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় আমরা ঢাকার সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ করছি। সংখ্যালঘুদের প্রশ্নে তিনি বলেন, আমরা সংখ্যালঘুদের বিষয়ে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি।

এদিকে বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে স্থায়ীভাবে আশ্রয় দেওয়ার কোনো পরিকল্পনা নেই ভারতের। তিনি যুক্তরাজ্যে রাজনৈতিক আশ্রয় চেয়েছেন বলে শোনা যাচ্ছে। তবে এখন পর্যন্ত এ বিষয়ে কোনো নিশ্চয়তা দেয়নি ব্রিটিশ সরকার।
যুক্তরাজ্যে আশ্রয়ের আবেদন গৃহীত না হওয়া পর্যন্ত শেখ হাসিনা ভারতেই থাকবেন বলে জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলো।

মঙ্গলবার (৬ আগস্ট) দিল্লিতে সর্বদলীয় এক বৈঠকে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর জানিয়েছেন, এখনো দিল্লিতেই রয়েছেন বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী। তাকে কিছু দিন সময় দিচ্ছে ভারত। তার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কী, তা তিনি ভারত সরকারকে জানাবেন। হাসিনার পরিকল্পনা জানার পর পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবে নয়াদিল্লি।

এর ফলে প্রশ্ন উঠছে, যুক্তরাজ্য যদি আশ্রয় আবেদন প্রত্যাখ্যান করে, তাহলে কী করবেন শেখ হাসিনা? তিনি ভারতে থাকার সময় দীর্ঘায়িত করার চেষ্টা করবেন নাকি তৃতীয় কোনো দেশ খুঁজবেন? এখন পর্যন্ত এ বিষয়ে নিশ্চিত কোনো তথ্য জানা যায়নি।

এ অবস্থায় কূটনৈতিক টানাপোড়েনে পড়েছে ভারত সরকার। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি বলছে, পদত্যাগকারী প্রধানমন্ত্রীকে প্রকাশ্যে অতিরিক্ত সমর্থন দিলে বাংলাদেশের নতুন প্রশাসনের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক জটিল হয়ে উঠতে পারে। এই ঝুঁকি নিতে রাজি নয় নয়াদিল্লি।

টিটিএন

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।