মার্কিন নাগরিকদের অবিলম্বে লেবানন ছাড়ার আহ্বান
মার্কিন নাগরিকদের অবিলম্বে লেবানন ছাড়ার আহ্বান জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। মধ্যপ্রাচ্যে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার কারণে এমন আহ্বান জানানো হয়েছে। এর আগে যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ল্যামিও একই ধরনের সতর্কতা জানিয়েছেন। খবর বিবিসির।
গত বুধবার ইরানের রাজধানী তেহরানে ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের প্রধান ইসমাইল হানিয়া নিহত হন। তার মৃত্যুর ঘটনায় ইসরায়েলের বিরুদ্ধে কঠোর প্রতিশোধের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে ইরান।
বৈরুতে হিজবুল্লাহ কমান্ডার ফুয়াদ শুকরকে হত্যা করার কয়েক ঘণ্টা পরই তাকে হত্যা করা হয়। এ ধরনের পরিস্থিতির কারণে আশঙ্কা করা হচ্ছে যে লেবাননভিত্তিক হিজবুল্লাহ এবং হামাস যেকোনো সময় তীব্র প্রতিক্রিয়া জানাতে পারে।
এর আগে ইসরায়েল সফরে নিজ দেশের নাগরিকদের সতর্ক করেছে সুইডেন এবং স্লোভেনিয়া। সুইডেনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, মধ্যপ্রাচ্যের ‘গুরুতর’ নিরাপত্তা পরিস্থিতির কারণে তারা ইসরায়েল এবং ফিলিস্তিনে ভ্রমণের বিষয়ে বিধি-নিষেধ আরোপ করছে। সেখানকার পরিস্থিতি আরও খারাপ হওয়ার আশঙ্কায় এমন পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
সামাজিক মাধ্যমে এক পোস্টে সুইডেনের প্রধানমন্ত্রী উলফ ক্রিস্টারসন এক বিবৃতিতে বলেন, এখন থেকে উভয় দেশে সব ধরনের ভ্রমণের ক্ষেত্রে কঠোরভাবে পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
বৃহস্পতিবার স্লোভেনিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও জানিয়েছে যে, ইসরায়েলের বর্তমান ‘পরিস্থিতির কারণে’ ‘আমরা নিরাপত্তার কারণে সব ভ্রমণ থেকে বিরত থাকার পরামর্শ দিচ্ছি।
এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, লেবানন এবং গাজা থেকে রকেট হামলা এবং ওই অঞ্চলে উত্তেজনা বৃদ্ধি পেতে পারে এমন আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। এছাড়া ইরান থেকেও হামলা এবং হুমকি বেড়ে গেছে।
তার আগে নিজ দেশের নাগরিকদের অবিলম্বে লেবানন ছাড়ার নির্দেশ দেয় অস্ট্রেলিয়া। দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী পেনি ওং সামাজিক মাধ্যমে একটি ভিডিও শেয়ার করেছেন। সেখানে তিনি লেবাননে বসবাসরত অস্ট্রেলিয়ার নাগরিকদের অবিলম্বে দেশ ছাড়ার নির্দেশ দেন।
ওই বার্তায় তিনি বলেন, অস্ট্রেলীয় নাগরিক এবং লেবাননের বাসিন্দাদের জন্য আমার বার্তা এখনই সেখান থেকে চলে যাওয়ার সময়। তিনি বলেন, সত্যিকার অর্থে এই অঞ্চলে সংঘাত আরও তীব্র হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে। সংযম প্রতিষ্ঠা এবং সংঘাত নিরসনে ওই অঞ্চলে অংশীদারদের সঙ্গে কাজ করছে অস্ট্রেলিয়া। বর্তমানে লেবানন বংশোদ্ভূত ২ লাখ ৪৮ হাজারের বেশি মানুষ অস্ট্রেলিয়ায় বাস করছে।
গত শনিবার (২৭ জুলাই) ইসরায়েল-অধিকৃত গোলান মালভূমির মাজদাল শামস গ্রামে একটি ফুটবল মাঠে রকেট হামলায় শিশুসহ ১২ জন নিহত হন। হামলায় আহত হন আরও অন্তত ২৯ জন। লেবাননে ইসরায়েলি হামলায় সশস্ত্র গোষ্ঠীর চার সদস্য নিহত হওয়ার পর এই হামলা চালানো হয়।
ভয়াবহ এই হামলার জন্য লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহকেই দায়ী করে আসছে ইসরায়েল। তবে এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে হিজবুল্লাহ। এরই মধ্যে গত কয়েকদিনে লেবাননে হিজবুল্লাহর বেশ কিছু টার্গেটে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী।
- আরও পড়ুন
- নিজ দেশের নাগরিকদের অবিলম্বে লেবানন ছাড়ার নির্দেশ অস্ট্রেলিয়ার
- লেবাননের রাজধানী বৈরুতে ইসরায়েলের হামলা
- এবার সিরিয়ার বিমান প্রতিরক্ষা ঘাঁটিতে ইসরায়েলের হামলা
- ইসরায়েল-অধিকৃত গোলান মালভূমিতে রকেট হামলা, নিহত ১২
ফলে মধ্যপ্রাচ্যে আবারও বাজছে যুদ্ধের দামামা। যেকোনো মুহূর্তে পূর্ণমাত্রার যুদ্ধে জড়াতে পারে ইসরায়েল ও হিজবুল্লাহ। গোলান উপত্যকায় হামলার জবাব দেওয়ার ব্যাপারেও রোববারই অনুমোদন দিয়েছে ইসরায়েলি মন্ত্রিসভা।
টিটিএন