ছুরি হামলায় শিশু নিহত, বিক্ষোভে উত্তাল যুক্তরাজ্য
নাচের ক্লাসে ছুরি হামলায় ৩ শিশু নিহত হওয়ার ঘটনায় যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন স্থানে ব্যাপক বিক্ষোভ হয়েছে। এ ঘটনায় ১০০ জনের বেশি বিক্ষোভকারীকে গ্রেফতার করেছে স্থানীয় পুলিশ। এদিকে, ছুরি হামলা করে হত্যার অভিযোগে ১৭ বছরের এক কিশোরকে বৃহস্পতিবার (১ আগস্ট) আদালতে হাজির করা হয়।
সোমবার (২৯ জুলাই) স্থানীয় সময় বেলা ১১টার দিকে সাউথপোর্টের একটি নাচের কর্মশালায় আকস্মিক ছুরি হামলা ঘটে। এতে ৯ ও ৭ বছর বয়সী দুই শিশু নিহত হয়। গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে নেওয়ার পর মারা যায় আরও এক শিশু। এছাড়া হামলায় আহত হয়েছে আরও সাতজন। হামলাকারীকে বাধা দিতে গিয়ে গুরুতর আহত দুজন অবস্থাও আশঙ্কাজনক।
এদিকে, হামলার ঘটনায় হত্যা ও খুনের চেষ্টার সন্দেহভাজন হিসেবে ল্যাঙ্কাশায়ারের ব্যাঙ্কস থেকে ১৭ বছর বয়সী এক কিশোরকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তার কাছ থেকে একটি ছুরিও জব্দ করা হয়।
জানা গেছে, হামলার পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভুল তথ্য ছড়িয়ে পড়ে যে হামলার ঘটনায় সন্দেহভাজন ব্যক্তি একজন উগ্র ইসলামপন্থি অভিবাসী। এরপর মঙ্গলবার (৩০ জুলাই) স্থানীয় বাসিন্দারা বিক্ষোভ শুরু করেন। সাউথপোর্টে শুরু হওয়া বিক্ষোভ একপর্যায়ে বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে পড়ে।
সাউথপোর্টে বিক্ষোভকারীরা পুলিশ ভ্যানে আগুন ধরিয়ে দেয়। এতে ৫০ জনেরও বেশি পুলিশ কর্মকর্তা আহত হন। বুধবার (৩১ জুলাই) বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে ম্যানচেস্টারে। বিক্ষোভকারীরা সন্ধ্যার দিকে ওল্ডহাম রোডে হলিডে ইন হোটেলের বাইরে সমবেত হয়।
এদিন রাজধানী লন্ডনেও প্রধানমন্ত্রীর ডাউনিং স্ট্রিটের বাসভবনের কাছে হাজার হাজার মানুষ জড়ো হয়। সেসময় তারা ‘আমাদের বাচ্চাদের বাঁচাও’, ‘আমরা আমাদের দেশ ফেরত চাই’ বলে স্লোগান দেন। সেইসঙ্গে অভিবাসী প্রবেশ বন্ধ করার দাবিও তোলেন বিক্ষোভকারীরা।
হার্টেলপুলে ছড়িয়ে পড়া বিক্ষোভ-সহিংসতায় কয়েকজন পুলিশ কর্মকর্তা আহত হন ও একটি পুলিশের গড়িতে আগুন দিয়ে দেন বিক্ষোভকারীরা। সেখান থেকে গ্রেপ্তার করা হয় ৮ জন বিক্ষোভকারীকে। অন্যদিকে, হোয়াইটহলে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের পর ১০০ জনেরও বেশি বিক্ষোভকারীকে আটক করা হয়।
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার এই হামলার ঘটনায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ানো বিক্ষোভকারীদের ‘সহিংসতাকারী’ আখ্যা দিয়ে বলেছেন, তাদের সবাইকে আইনের আওতায় আনা হবে। এরই মধ্যে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বিষয়ে পুলিশ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠক করেছেন স্টারমার।
এদিকে, বিক্ষোভে উত্তাল অবস্থার মধ্যেই ছুরি হামলায় অভিযুক্ত কিশোরকে লিভারপুল ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টে হাজির করা হয়। তবে বয়স আঠারো বছরের কম হওয়ায় তার নাম-পরিচয় প্রকাশ করেনি পুলিশ। পুলিশের বক্তব্য অনুযায়ী, হামলাটি সন্ত্রাসবাদের সঙ্গে সম্পর্কিত নয় ও সন্দেহভাজন হামলাকারীর জন্ম যুক্তরাজ্যতেই।
সূত্র: বিবিসি, রয়টার্স
এসএএইচ