বাংলাদেশে অস্থিরতায় ‘লালবাত্তি’ কলকাতা নিউমার্কেটে
বাংলাদেশের কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে অস্থিরতার প্রভাব পড়েছে কলকাতার নিউমার্কেট এলাকার ব্যবসাগুলোতে। পরিস্থিতি উত্তপ্ত থাকায় পেট্রাপোল স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশি পর্যটক প্রবেশে ধস নেমেছে। এর নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে পশ্চিমবঙ্গের ব্যবসা-বাণিজ্যে। বিশেষ করে, কলকাতা নিউমার্কেট এলাকার হোটেল, জুতা, পোশাক, প্রসাধনী থেকে শুরু করে ক্ষতির মুখে পড়েছে পরিবহন ব্যবসায়ীরাও। অনেকেই বলেছেন, বাংলাদেশি পর্যটক কমে যাওয়ায় তাদের দোকানভাড়া তোলাও কষ্টকর হয়ে পড়েছে।
স্বাভাবিক পরিস্থিতিতে পেট্রাপোল স্থলবন্দর দিয়ে প্রতিদিন কয়েক হাজার বাংলাদেশি পর্যটক কলকাতায় আসেন। কিন্তু সাম্প্রতিক ছাত্র আন্দোলনের জেরে উত্তপ্ত পরিস্থিতিতে পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে বাংলাদেশি পর্যটক প্রবেশ অন্তত ৭০ শতাংশ কমে গেছে। তাতে লালবাত্তি জ্বলেছে কলকাতা নিউমার্কেট এলাকার ব্যবসা-বাণিজ্যে।
আরও পড়ুন>>
- কোটা আন্দোলনের সমর্থনে কলকাতায় বিক্ষোভ
- মমতার বক্তব্যের কড়া প্রতিবাদ জানালো বাংলাদেশ
- বাংলাদেশে অস্থিরতা/ ফিরে গেলেন সাড়ে ৪ হাজার ভারতীয় শিক্ষার্থী
কলকাতা নিউমার্কেট চত্বরের হোটেল থেকে শুরু করে ছোট-বড় বেশিরভাগ ব্যবসা বাংলাদেশি পর্যটকদের ওপর নির্ভরশীল।
এই এলাকার হোটেল ব্যবসায়ী মনতোষ সাহা জাগোনিউজকে বলেন, বাংলাদেশে কোটা সংস্কার আন্দোলনের জেরে বর্তমানে বাংলাদেশি পর্যটকের সংখ্যা অনেকটা কমে গেছে। এ কারণে হোটেল থেকে শুরু করে প্রায় সব দোকানপাটই ফাঁকা।
তিনি বলেন, গোটা নিউমার্কেট চত্বর দেখলেই বোঝা যাবে পরিস্থিতি কী যাচ্ছে। বাংলাদেশের পরিস্থিতি দ্রুত স্বাভাবিক না হলে এখানকার অবস্থা আরও ভয়ানক হবে।
কলকাতায় বাংলাদেশি পর্যটকদের প্রধান পছন্দের জায়গা নিউমার্কেট চত্বরের সদরস্ট্রিট, মার্কুইজ স্ট্রিট, ফ্রি-স্কুল স্ট্রিট, রফিক আহমেদ স্ট্রিটসহ পার্শ্ববর্তী এলাকাগুলো।
আরও পড়ুন>>
- বাংলাদেশ নিয়ে যা বলেছি, ঠিক বলেছি: মমতা
- তিস্তার পানি চুক্তি নিয়ে ফের সরব মমতা
- পশ্চিমবঙ্গের পেঁয়াজ বাংলাদেশে চলে যাচ্ছে, দাবি মমতার
কেউ আসেন চিকিৎসা করাতে, আবার কেউ আসেন বেড়াতে। বাংলাদেশি পর্যটকদের কেনাকাটার জন্যই সারা বছর চাঙ্গা থাকে নিউমার্কেট চত্বরের অর্থনীতি। এসব এলাকার মানি এক্সচেঞ্জ ব্যবসায়ীরাও মূলত নির্ভর করেন বাংলাদেশি পর্যটকদের ওপর।
কলকাতা নিউমার্কেট চত্বরে মানি এক্সচেঞ্জ ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, বাংলাদেশ থেকে পর্যটক আসা অনেকটাই কমে গেছে। তার ফলে মুদ্রা বিনিময় ব্যবসায় ধস নেমেছে। তারা আশা করছেন, বাংলাদেশের পরিস্থিতি দ্রুত স্বাভাবিক হবে।
বাংলাদেশি পর্যটক কমে যাওয়ায় ক্ষতির মুখে পড়েছেন কলকাতা-পেট্রাপোল পরিবহন ব্যবসায়ীরাও। আগে স্থলবন্দর দিয়ে প্রতিদিন তিন থেকে চার হাজার বাংলাদেশি যাতায়াত করতেন। এখন তা ৫০০র নিচে নেমে এসেছে। এই মুহূর্তে বেশিরভাগ বাংলাদেশি পর্যটক মেডিকেল ভিসায় চিকিৎসা করাতে আসছেন।
অন্যান্য ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা বলছেন, বাংলাদেশি পর্যটক কমে যাওয়ায় কলকাতা নিউমার্কেট চত্বরের ব্যবসায়ীদের দোকানভাড়া তোলা কঠিন হয়ে যাচ্ছে। তাই তারা প্রার্থনা করছেন, বাংলাদেশের পরিস্থিতি দ্রুত স্বাভাবিক হোক। প্রতিবেশী দেশে যত দ্রুত স্থিতিশীলতা ফিরে আসবে, কলকাতার ব্যবসায়ীদের আর্থিক ক্ষতিও তত কম হবে।
ডিডি/কেএএ/