ইলন মাস্কের স্টারলিংক স্যাটেলাইট ইন্টারনেট কীভাবে কাজ করে?

খান আরাফাত আলী
খান আরাফাত আলী খান আরাফাত আলী , সহ -সম্পাদক , আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৫:১৯ পিএম, ২৯ জুলাই ২০২৪
স্টারলিংক স্যাটেলাইট। ছবি সংগৃহীত

বিশ্বের যেসব অঞ্চলে অপটিক্যাল ফাইবার পৌঁছানো দুঃসাধ্য, সেখানে খুব সহজেই পৌঁছে যেতে পারে স্যাটেলাইট ইন্টারনেট। এই পদ্ধতিতে দুর্গম এলাকায় ইন্টারনেট সেবা পৌঁছে দেওয়ার জন্য দ্রুত জনপ্রিয় হয়ে উঠছে স্টারলিংক। এটি মার্কিন ধনকুবের ইলন মাস্কের মালিকানাধীন সংস্থা স্পেসএক্সের একটি অঙ্গসংস্থা, যা হাজার হাজার স্যাটেলাইটের মাধ্যমে বিশ্বজুড়ে ইন্টারনেট সেবা দিয়ে চলেছে।

২০১৯ সালে প্রথম স্টারলিংকের স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ শুরু হয়। এ পর্যন্ত ছয় হাজারের বেশি স্যাটেলাইট আকাশে পাঠিয়েছে তারা, যেগুলো পৃথিবীর নিম্ন কক্ষপথে ঘুরে ঘুরে ৮০টির বেশি দেশে দ্রুতগতির ইন্টারনেট সেবা দিচ্ছে।

কীভাবে কাজ করে স্টারলিংক?

প্রথাগত স্যাটেলাইট ইন্টারনেট সাধারণত একটি একক জিওস্টেশনারি স্যাটেলাইটের ওপর নির্ভর করে, যা ভূপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ৩৫ হাজার কিলোমিটার ওপরে প্রদক্ষিণ করে। সেই তুলনায় স্টারলিংকের স্যাটেলাইটগুলো ভূপৃষ্ঠের অনেক কাছ দিয়ে (৫০০-৬০০ কিলোমিটার) উড়ে বেড়ায়। এর ফলে সংযোগে সময় যেমন কম লাগে, তেমনি গতিও বেড়ে যায়। স্টারলিংকের প্রতিটি স্যাটেলাইট চারটি অ্যারে অ্যান্টেনা এবং দুটি প্যারাবোলিক অ্যান্টেনা ব্যবহার করে।

আরও পড়ুন>>

স্টারলিংকের ইন্টারনেট ব্যবহার করতে হলে আপনার একটি স্টারলিংক কিট থাকতে হবে। এই কিটের মধ্যে স্টারলিংকের একটি ডিশ, একটি ওয়াইফাই রাউটার/পাওয়ার সাপ্লাই, তার এবং একটি বেজ থাকে। ডিশটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে ঘুরে ঘুরে তড়িৎচুম্বকীয় তরঙ্গের মাধ্যমে স্যাটেলাইটের সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করে। এর ফলে দুর্গম মরুভূমি, পাহাড় কিংবা সমুদ্রের মধ্যে, যেখানে সরাসরি তার বা ভূস্থাপনার মাধ্যমে ইন্টারনেট সংযোগ দেওয়া যায় না, সেখানেও কাজ করতে পারে স্টারলিংক ইন্টারনেট।

স্টারলিংক অ্যাপ ব্যবহার করে নিজের সার্ভিস পরিচালনা এবং সিগন্যালের শক্তি পরীক্ষা করতে পারেন ব্যবহারকারীরা।

স্টারলিংক ইন্টারনেটে গতি কেমন?

ইন্টারনেটের গতি পর্যবেক্ষণকারী সংস্থা ওকলার তথ্যমতে, ২০২৩ সালের প্রথম প্রান্তিকে যুক্তরাষ্ট্রে স্টারলিংক ইন্টারনেটে ডাউনলোডের গড় গতি ছিল ৬৭ এমবিপিএস (প্রতি সেকেন্ডে ৬৭ মেগাবিট ডেটা আদান-প্রদানে সক্ষম)। এটি ইলন মাস্কের প্রতিশ্রুত ৩০০ এমবিপিএসের চেয়ে অনেক কম। একই সময়ে যুক্তরাষ্ট্রে ফিক্সড ব্রডব্যান্ড সংযোগের গতির চেয়েও (১৯৩ এমবিপিএস) অনেকটা পিছিয়ে স্টারলিংক।

starlinkগাড়ি, প্লেন এবং জাহাজেও ব্যবহার করা যায় স্টারলিংক স্যাটেলাইট ইন্টারনেট। ছবি: সংগৃহীত

এরপরও ভিয়াস্যাট বা হিউজনেটের মতো প্রতিদ্বন্দ্বীদের চেয়ে স্টারলিংক ইন্টারনেটের গতি যথেষ্ট বেশি। উল্লেখিত সংস্থা দুটির সংযোগে গড় ডাউনলোড গতি যথাক্রমে ৩৪ এমবিপিএস এবং ১৫ এমবিপিএস।

আরও পড়ুন>>

গ্রাহকের সংখ্যা দ্রুত বাড়তে থাকায় স্টারলিংকের স্যাটেলাইটের ওপর বাড়তি চাপ তৈরি হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। দ্রুত আরও বেশি স্যাটেলাইট পাঠিয়ে ইন্টারনেটের গতি বাড়াতে কাজ চলছে বলে জানিয়েছে ইলন মাস্কের সংস্থাটি।

বছর দুয়েক ধরে বাংলাদেশের বাজারে প্রবেশের চেষ্টা করছে স্টারলিংক। তবে সেটি এখনো সম্ভব হয়নি। স্টারলিংকের ওয়েবসাইটের তথ্য বলছে, ২০২৫ সালে বাংলাদেশে স্টারলিংক ইন্টারনেট আসতে পারে।

কেএএ/

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।