ট্রাম্পের ওপর হামলা

যুক্তরাষ্ট্রে রাজনৈতিক সহিংসতা বাড়ার আশঙ্কা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৭:১৯ পিএম, ১৪ জুলাই ২০২৪
ট্রাম্পের ওপর হামলা। ছবি: এএফপি

সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে হত্যা চেষ্টার ঘটনায় ক্ষুব্ধ তার সমর্থকরা। এরই মধ্যে স্থগিত করা হয়েছে ডেমোক্র্যাটদের ক্যাম্পেইন। ফলে নভেম্বরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন সামনে রেখে দেশটিতে রাজনৈতিক সহিংসতা বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

শনিবারের ঘটনায় রিপাবলিকান মিত্ররা ট্রাম্পকে নায়ক বলে আখ্যায়িত করছেন। এক্ষেত্রে ট্রাম্পের রক্তমাখা ছবি ব্যবহার করা হচ্ছে।

ডোনাল্ড ট্রাম্পকে হত্যা চেষ্টার জন্য সমর্থকরা বাইডেনকে দোষারোপ করছেন। ট্রাম্পকে সব সময় খারাপভাবে উপস্থাপন করার জন্যই এমন ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ।

আরও পড়ুন>

ট্রাম্পের রানিং মেট মার্কিন সিনেটর জেডি ভেন্স অব ওহিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বলেছেন, এটা কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। বাইডেনের ক্যাম্পেইনের মূল বক্তব্যই হলো ডোনাল্ড ট্রাম্প একজন কর্তৃত্ববাদী। তাই তাকে যে কোনো উপায়েই থামাতে হবে। এই বক্তব্যের কারণেই ট্রাম্পকে হত্যার চেষ্টা করা হয়।

যদিও এ ঘটনার পর পরিস্থিতি সামাল দিতে দ্রুত প্রকাশ্যে আসেন বাইডেন। এ ধরনের রাজনৈতিক সহিংসতাকে অগ্রহণযোগ্য আখ্যা দিয়ে হামলার নিন্দা করেন ও ট্রাম্পের বিরুদ্ধে নির্বাচনী বিজ্ঞাপনও সরিয়ে নিয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্রে এ ধরনের সহিংসতার কোনো স্থান নেই বলেও মন্তব্য করেছেন বাইডেন।

পেনিসিলভেনিয়ার ভোটের রেকর্ড অনুযায়ী, সন্দেহভাজন হামলাকারী একজন রেজিস্টার্ড রিপাবলিকান। ২০ বছর বয়সী ওই তরুণের নাম টমাস ম্যাথিউ ক্রুকস। কোনো উদ্দেশে সে ট্রাম্পকে লক্ষ্য করে গুলি চালিয়েছে তা এখনো জানা যায়নি।

চলতি সপ্তাহে রিপাবলিকান ন্যাশনাল কনভেনশন রয়েছে। এই হামলাকে কেন্দ্র করে সেখানে ট্রাম্পের গ্রহণযোগ্যতা আরও বাড়বে বলেও আশা করা হচ্ছে।

হামলার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ট্রাম্পের ক্যাম্পেইন গ্রুপ থেকে ভোটারদের উদ্দেশে মেসেজ দেওয়া হয়েছে। যেখানে ক্যাম্পেইনে ভোটারদের অবদান রাখার কথা বলা হয়।

তাছাড়া নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে এক বার্তায় ইলন মাস্ক ট্রাম্পের প্রতি সমর্থন জানিয়ে দ্রুত সুস্থতা কামনা করেছেন।

ট্রাম্পের প্রচারণার সহ-ব্যবস্থাপক ক্রিস লাসিভিটা এক্স বার্তায় বলেছেন, কয়েক বছর ধরে ও আজও বামপন্থি কর্মী, ডেমোক্র্যাট দাতারা ও এখন এমনকি জো বাইডেনও ডোনাল্ড ট্রাম্পকে গুলি করার বিষয়ে ঘৃণ্য মন্তব্য ও বর্ণনা দিয়েছেন। ফলে এখনই সময় তাদের জবাবদিহিতার আওতায় নিয়ে আসা। এর অন্যতম উপায় হলো ব্যালোট বক্স।

১৯৭০ সালের পর সব চেয়ে বড় রাজনৈতিক সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। ২০২১ সালের জানুয়ারিতে ক্যাপিটল হিলে হামলার ঘটনার পর অন্তত ১৪টি মারাত্মক হামলার ঘটনা ঘটেছে। এক্ষেত্রে ১৩ জন ছিলেন ডানপস্থি হামলাকারী, একজন ছিলেন বামপন্থি।

ট্রাম্প এর আগে অভিযোগ করে বলেছেন, তিনি দীর্ঘদিন ধরে ফেডারেল ডিপ স্টেটের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়েছেন। তাছাড়া বাইডেন প্রশাসন তাকে ক্ষমতায় যেতে বাধা দিচ্ছে।

তিনি নির্বাচিত না হলে রক্তপাত করারও হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন এবং বলেছিলেন যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধভাবে প্রবেশকরা অভিবাসীরা আমাদের দেশের রক্ত বিষাক্ত করছে।

আরও পড়ুন>

ডেমোক্র্যাটিক স্ট্র্যাটিজিস্ট ব্র্যাড ব্যানন বলেছেন, এই গুলির ঘটনা ট্রাম্পকে রাজনৈতিকভাবে সুবিধা দিতে পারে। এই হত্যা চেষ্টা ট্রাম্পের প্রতি সহানুভূতি বাড়বে।

চলতি বছরের মে মাসে এক পর্ন তারকাকে ঘুস দেওয়ার মামলায় ট্রাম্পকে দোষী সাব্যস্ত করেন আদালত। তবে এই রায় প্রার্থিতার ক্ষেত্রে খুব একটা প্রভাব ফেলেনি।

এদিকে প্রথম টেলিভিশন বিতর্কের পর নিজ দলের মধ্যেই চাপে পড়েছেন বাইডেন। প্রশ্ন উঠছে তার শারীরিক সক্ষমতা নিয়ে।

এমন পরিস্থিতিতে অনেক ভোটার বাইডেন ও ট্রাম্প উভয় প্রার্থীর দিক থেকেই মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন। এই দুই প্রার্থীকে ঘিরে যে বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়েছে, তাতে ভোটাররা মনে করছেন দেশের সমস্যার সমাধান হবে না এবং দলগুলোর মধ্যে যে দূরত্ব তৈরি হয়েছে তাও কমবে না।

২০১৭ সালে বন্দুক হামলার শিকার হওয়া এক রিপাবলিকান বলেছেন, নির্বাচনকে ঘিরে যে সহিংস বক্তব্য দেওয়া হচ্ছে তা বন্ধ হওয়া দরকার।

সূত্র: রয়টার্স

এমএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।