ট্রাম্পের ওপর হামলা
যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক ইতিহাসে নতুন কালো অধ্যায়
মার্কিন আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ক্যাম্পেইন চলাকালে রিপাবলিকান প্রার্থী ও সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ওপর হামলার ঘটনায় তোলপাড় শুরু হয়েছে। মূলত আমেরিকার রাজনৈতিক সহিংসতার যে ইতিহাস রয়েছে সেক্ষেত্রে এটি একটি নতুন কালো অধ্যায়ের সূচনা করলো বলে মনে করা হচ্ছে।
আধুনিক সময়ে সবচেয়ে উত্তেজনাকর পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যখন দেশটি অতিবাহিত করছে তখনই এই ধরনের ঘটনা ঘটলো, যা পুরো জাতিকে নাড়া দিয়েছে।
আরও পড়ুন>
সাবেক প্রেসিডেন্ট ও আসন্ন নির্বাচনের একজন প্রার্থীকে সমাবেশের সময় হামলার ঘটনাকে গণতন্ত্রের ও প্রার্থী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে মার্কিনিদের যে অধিকার রয়েছে তার ওপর হামলা বলেও মনে করা হচ্ছে।
হামলার সময় রিপাবলিকান সম্ভাব্য এই প্রার্থী মঞ্চেই ছিলেন। এ সময় তার সমর্থকরা বিভিন্নি ধরনের পোস্টার ও প্লেকার্ড নিয়ে পেছনে ও সামনে ছিলেন। এ সময় নিরাপত্তা কর্মীরা তাকে ঘিরে ধরেন।
সাবেক এই প্রেসিডেন্ট পরে বলেন, মনে হয়েছে একটি বুলেট কানের ভেতর দিয়ে চলে গেছে। এরপর রক্তমাখা অবস্থায় ঘটনাস্থল থেকে তাকে সরিয়ে নেওয়া হয়। ঘটনাস্থল থেকে সামান্য দূরের একটি বাড়ির ছাদ থেকে তাকে লক্ষ্য করে মূলত গুলি চালানো হয়।
ট্রাম্পের সমর্থক এক প্রত্যক্ষদর্শী জানান, এ ঘটনার পর সবাই ক্ষুব্ধ। যা ঘটেছে সেটা নিয়ে আমি হতভম্ব নই, তবে আমি হতভম্ব হয়েছি কারণ সেখানে আমি বসা ছিলাম ও আমার পাশেই এটি ঘটেছে। এটা অত্যন্ত ভয়াবহ।
অতীতের অনেকের মতোই এবার ট্রাম্পকে হত্যার চেষ্টা করা হলো। এটা অযৌক্তিক। রাজনীতি এমন কোনো খেলা হওয়া উচিত নয় যে কেউ সব কিছু জিতবে অথবা কেউ সব হারাবে।
হঠাৎ মুহূর্মুহু গুলির শব্দ। তারপর রাজনৈতিক নেতা নিচের দিকে শুয়ে পড়লেন। নিরাপত্তাকর্মীরা তাকে রক্ষায় চতুুর্দিক থেকে ঘিরে ধরলেন। এর মাধ্যমে ঐতিহাসিক কালো অধ্যায় ফের জেগে উঠলো।
যদিও ট্রাম্প বর্তমানে প্রেসিডেন্টে দায়িত্ব পালন করছেন না। তবে তারও আহত হওয়ার ঘটনায় এটা প্রমাণিত যে হুমকি এখনো বিদ্যমান। প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ৪৬তম প্রেসিডেন্ট। তার আগে অন্তত চারজন প্রেসিডেন্ট থাকাকালীন হত্যার শিকার হয়েছেন। সবশেষ ১৯৬৩ সালে হত্যার শিকার হন জন এফ কেনেডি।
ট্রাম্পের এই ঘটনার সঙ্গে তুলনা করা হচ্ছে ১৯৬৮ সালে ডেমোক্র্যাটিক প্রার্থী রবার্ট এফ কেনেডির সঙ্গে। ওই বছরই হত্যা করা হয়েছিল মার্টিন লুথার কিংকে। রাজনৈতিক সহিংসতার ঘটনা ঘটেছিল শিকাগোতেও।
দেশটিতে রাজনৈতিক সহিংসতা এখনো চলমান। ২০১১ সালের একটি ঘটনায় অন্তত ছয়জন নিহত হন। মাথায় আঘাত পান তখনকার এক রিপাবলিকান নেতা। ২০১৭ সালে একজন বন্দুকধারী একটি রিপাবলিকান কংগ্রেসনাল বেসবল অনুশীলনে গুলি চালায়। তৎকালীন হাউস মেজরিটি হুইপ স্টিভ স্কালিস ও অন্য তিনজনকে গুলি করা হয়।
২০২১ সালে ঘটে মার্কিন ইতিহাসে নজিরবিহীন হামলা। তখন ট্রাম্পের সমর্থকরা ক্যাপিটল হিলে হামলা চালায়।
সূত্র: সিএনএন
এমএসএম