শেখ হাসিনা ছাড়া চীন সফরে আরও ৩ দেশের সরকারপ্রধান

খান আরাফাত আলী
খান আরাফাত আলী খান আরাফাত আলী , সহ -সম্পাদক , আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৫:২৬ পিএম, ০৯ জুলাই ২০২৪
শেখ হাসিনা ছাড়াও চীন সফর করছেন আরও ৩ দেশের সরকারপ্রধান। ছবি: সংগৃহীত

চারদিনের রাষ্ট্রীয় সফরে বর্তমানে চীনে রয়েছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রায় একই সময় তিনি ছাড়া আরও তিনটি দেশের সরকারপ্রধান বেইজিং সফর করছেন। একসঙ্গে চার বিদেশি নেতার চীন সফরকে বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন বিশ্লেষকেরা। চীনের দাবি, পশ্চিমের ‘অপ্রচলিত স্নায়ুযুদ্ধের মানসিকতার’ বিপরীতে পারস্পরিক শ্রদ্ধা, বোঝাপড়া এবং সমর্থনের বাস্তবতা প্রদর্শন করছে বিশ্বনেতাদের এসব সফর।

কে কে রয়েছেন চীনে

গত সোমবার (৮ জুলাই) বেলা ১১টার দিকে ঢাকা থেকে বেইজিংয়ের উদ্দেশে রওয়ানা দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পৌঁছান সন্ধ্যা নাগাদ। সফরের দ্বিতীয় দিন মঙ্গলবার সকালে বেইজিংয়ের একটি হোটেলে ‘বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্য এবং বিনিয়োগ সুবিধা’ শীর্ষ সম্মেলনে অংশ নিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। সফরকালে চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং ও প্রধানমন্ত্রী লি কিয়াংয়ের সঙ্গেও সাক্ষাৎ করবেন তিনি। সফর শেষে আগামী বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) দেশে ফেরার কথা রয়েছে শেখ হাসিনার।

আরও পড়ুন>>

চীনের রাষ্ট্রয়াত্ত সংবাদমাধ্যম গ্লোবাল টাইমস জানিয়েছে, শেখ হাসিনার সফর চলাকালে আরও দুটি দেশের সরকারপ্রধান চীন সফর করবেন। তারা হলেন- প্রশান্ত মহাসাগরীয় দেশ ভানুয়াতুর প্রধানমন্ত্রী শার্লট সালওয়াই এবং সলোমন দ্বীপপুঞ্জের প্রধানমন্ত্রী জেরেমিয়া মানেলে।

চীনা প্রধানমন্ত্রীর আমন্ত্রণে ৭ থেকে ১২ জুলাই চীন সফর করবেন ভানুয়াতুর প্রধানমন্ত্রী। আর সলোমন দ্বীপপুঞ্জের প্রধানমন্ত্রী চীনে থাকবেন ৯ থেকে ১৫ জুলাই পর্যন্ত।

আকস্মিক সফরে হাঙ্গেরির প্রধানমন্ত্রী

এদিকে, পূর্বঘোষিত কর্মসূচি ছাড়াই সোমবার হঠাৎ চীনে পৌঁছান হাঙ্গেরির প্রধানমন্ত্রী ভিক্টর অরবান। ওইদিনই বেইজিংয়ে চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে বৈঠক করেছেন তিনি।

এর আগে গত সপ্তাহে রাশিয়া এবং ইউক্রেন সফরে গিয়েছিলেন অরবান। এসব সফরকে ‘শান্তি মিশন’ বলে উল্লেখ করছেন ইউরোপের এ নেতা।

আরও পড়ুন>>

হাঙ্গেরি চলতি মাসে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সভাপতির দায়িত্ব গ্রহণ করেছে এবং তারপর থেকে এই ‘শান্তি মিশন’ শুরু করেছেন অরবান। অবশ্য তার এই উদ্যোগে অন্যান্য ইউরোপীয় দেশগুলোর সমর্থনের অভাব রয়েছে।

সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্স-এ হাঙ্গেরিয়ান প্রধানমন্ত্রী লিখেছেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে শান্তির পরিস্থিতি তৈরিতে চীন একটি প্রধান শক্তি। এ কারণেই আমি বেইজিংয়ে প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে দেখা করতে এসেছি। এর মাত্র দুই মাস আগেই বুদাপেস্ট সফরে এসেছিলেন চীনা প্রেসিডেন্ট।

কী বলছেন বিশ্লেষকেরা

একসঙ্গে একাধিক বিদেশি সরকারপ্রধানের চীন সফরকে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ বলে উল্লেখ করছে চীনা সংবাদমাধ্যম। গত রোববার গ্লোবাল টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চীন এবং গ্লোবাল সাউথের মধ্যে পারষ্পরিক সহযোগিতা থেকে উদ্ভূত ফলপ্রসূ সাফল্যের প্রমাণ হলো এসব সফর। এটিকে স্বাগত জানিয়েছেন দেশ-বিদেশের পর্যবেক্ষকরা।

আরও পড়ুন>>

চায়না ফরেন অ্যাফেয়ার্স ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক লি হাইডংয়ের মতে, তিন দেশের (বাংলাদেশ, ভানুয়াতু এবং সলোমন দ্বীপপুঞ্জ) নেতাদের চীন সফর পশ্চিমের ‘অপ্রচলিত স্নায়ুযুদ্ধের মানসিকতার’ বিপরীতে পারস্পরিক শ্রদ্ধা, বোঝাপড়া এবং সমর্থনের বাস্তবতা প্রদর্শন করবে।

সিংহুয়া ইউনিভার্সিটির ন্যাশনাল স্ট্র্যাটেজি ইনস্টিটিউটের গবেষণা বিভাগের পরিচালক কিয়ান ফেং বলেছেন, উদীয়মান অর্থনীতিগুলোর উন্নয়ন প্রচেষ্টাকে ‘ধোঁকা বা বাধা’ দেওয়ার লক্ষ্যে পশ্চিমারা যেসব ‘হয়রানিমূলক কৌশল’ অবলম্বন করে থাকে, সেগুলোর বিরুদ্ধে শক্তিশালী প্রতিরোধ হিসেবে কাজ করবে এসব কূটনৈতিক ব্যস্ততা।

কেএএ/

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।