ভারী বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত সিকিম, ক্ষতির মুখে পর্যটন ব্যবসা

পশ্চিমবঙ্গ প্রতিনিধি পশ্চিমবঙ্গ প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ১২:৩১ পিএম, ০৭ জুলাই ২০২৪

একনাগাড়ে মুষলধারে বৃষ্টি হওয়ায় ভারতের সিকিম রাজ্য থেকে পশ্চিমবঙ্গের শিলিগুড়ি-দার্জিলিং পর্যন্ত যোগাযোগব্যবস্থা বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। প্রবল বর্ষণের জেরে দার্জিলিং ও কালিম্পংয়ের বেশকিছু এলাকায় পাহাড়ধস ঘটেছে।

জানা গেছে, টানা বৃষ্টিতে পাহাড়ধসের কারণে শিলিগুড়ি থেকে সিকিম যাওয়ার ১০ নম্বর জাতীয় সড়ক বন্ধ হয়ে গেছে। সড়কটির দার্জিলিং, কালিম্পং ও সিকিম অংশের নানা জায়গায় ধস নামায় গাড়ি চলাচল একপ্রকার বন্ধ হয়ে পড়েছে।

সব যানবহন এখন কালিম্পং হয়ে সিকিম যাওয়ার বিকল্প পথ ব্যবহার করছে। এর ফলে ব্যাপক বিপাকে পড়েছেন পর্যটকরা। সেই সঙ্গে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে পর্যটন ব্যবসাও।

আরও পড়ুন: 

দার্জিলিংয়ে দেশি-বিদেশি পর্যটকদের সার্বিক নিরাপত্তার বিষয়টি নিয়ন্ত্রণ করছে গোর্খা টেরিটোরিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (জিটিএ)। শনিবার (৬ জুলাই) একটি নির্দেশিকা জারি করে তারা জানিয়েছে, ভারী বৃষ্টি ও পাহাড়ধসের কারণে দার্জিলিংয়ের রক গার্ডেনসহ গঙ্গামায় পার্ক বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

হিমালয়ান হসপিটালিটি অ্যান্ড ট্যুরিজম ডেভেলপমেন্ট নেটওয়ার্কের সাধারণ সম্পাদক সম্রাট সান্যাল জানান, ১০ নম্বর জাতীয় সড়কে পাহাড় ধসে পড়ায় পর্যটন ব্যবসা ব্যাপকভাবে ধাক্কা খেয়েছে। এই ক্ষতির প্রভাব চলতি বছরের দূর্গা পূজা পর্যন্ত থাকবে।

তিনি আরও জানান, জুন মাসে যেখানে ৮০ থেকে ৮৫ শতাংশ হোটেল-রিসোর্ট বুকিং ভর্তি থাকে। সেখানে বুকিং নেমে এসেছে দাঁড়িয়েছে ১৫ থেকে ২০ শতাংশে। বর্ষার কারণে এমনিতেই বুকিং কম থাকে। জাতীয় সড়কের হাল এমন থাকলে, তাতে ক্ষতি আরও বাড়তে পারে। পাহাড়ের হোটেল ব্যবসায়ীদের দাবি, গত মে-জুন মাসে প্রায় ৪৫-৫০ কোটি রুপির ক্ষতি হয়েছে।

আরও পড়ুন: 

গোর্খা টেরিটোরিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (জিটিএ) পর্যটন সচিব নর্দেন শেরপা জানিয়েছেন, ১০ নম্বর জাতীয় সড়ক উত্তর ভারতের লাইফলাইন। এই সড়ক দিয়ে দেশি-বিদশি পর্যটকরা শুধু সিকিমেই ঘুরতে যান না, একই সঙ্গে দার্জিলিং, কালিম্পং, ডুয়ার্সেও ঘুরতে যান। ভূমিধসের কারণে সিকিমে যাতায়াত বন্ধ হওয়ায় অন্যান্য অঞ্চলের পর্যটনশিল্পে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে।

এদিকে, বিরূপ আবহাওয়ায় ক্ষতির মুখে পড়েছে ডুয়ার্স, কালিম্পং, দার্জিলিংসহ সিকিমের গাড়িচালকরা। গাড়িচালক হরপা বাহাদুর বলেন, এমনিতেই জুন-জুলাই মাসে পর্যটকদের সংখ্যা কম থাকে। তার মধ্যে ১০ নম্বর জাতীয় সড়ক বন্ধ থাকায় অনেক পথ ঘুরে যেতে হচ্ছে। এতে খরচ অনেক বেশি হওয়ায় অনেক পর্যটক এই ঝুঁকি নিচ্ছেন না। এর ফলে হোটেলের বুকিংও অনেকটা কম হচ্ছে।

জানা গেছে, সিকিমের পাহাড় ও সমতলে বৃষ্টি অব্যাহত রয়েছে। জার জেরে তিস্তা নদীর পানি বিপৎসীমা ছুয়েছে। লাগাতার বৃষ্টিতে ক্রমেই বেড়ে চলেছে তিস্তা ও জলঢাকা নদীর পানি। মেখলিগঞ্জ থেকে বাংলাদেশ পর্যন্ত এলাকায় তিস্তা নদীতে লাল সতর্কতা জারি করা হয়েছে। এর পাশাপাশি দোমহনি থেকে বাংলাদেশ পর্যন্ত এলাকায় জলঢাকা নদীতে জারি করা হয়েছে হলুদ সতর্কতা। এরই মধ্যে তিস্তার গ্রাসে জাতীয় সড়কের অনেক অংশ ধসে গেছে।

ডিডি/এসএএইচ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।