ইরানে হিজাব আইন বাতিল করবেন ‘পশ্চিমাপন্থি’ নতুন প্রেসিডেন্ট?

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৪:৫৮ পিএম, ০৬ জুলাই ২০২৪
মাসুদ পেজেশকিয়ানের জনসভায় এক নারী সমর্থক। ছবি: এএফপি

ইরানের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়ী হয়েছেন সংস্কারপন্থি নেতা মাসুদ পেজেশকিয়ান। এই লড়াইয়ে তার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন রক্ষণশীল নেতা সাঈদ জলিলী। গত শুক্রবার (৫ জুলাই) ১৪তম প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের দ্বিতীয় পর্বের ভোটাভুটিতে জলিলীর চেয়ে প্রায় ২৮ লাখ ভোট বেশি পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন পেজেশকিয়ান।

গত মে মাসে ইরানের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়ে নিহত হওয়ায় আগাম নির্বাচনের আয়োজন করা হয়েছিল। গত ২৮ জুন অনুষ্ঠিত নির্বাচনে ছয়জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। তবে কেউ এককভাবে ৫০ শতাংশের বেশি ভোট না পাওয়ায় নির্বাচন গড়ায় দ্বিতীয় পর্বে।

আরও পড়ুন>>

শুক্রবারের ভোটাভুটিতে দেশটির সাবেক সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী পেজেশকিয়ান পেয়েছেন ১ কোটি ৬৩ লাখ ৮৪ হাজার ৪০৩ ভোট। আর তার প্রতিদ্বন্দ্বী সাবেক প্রধান পরমাণু আলোচক সাঈদ জলিলীর প্রাপ্ত ভোট সংখ্যা ১ কোটি ৩৫ লাখ ৩৮ হাজার ১৭৯। এর ফলে, ইরানের নবম প্রেসিডেন্ট হতে চলেছেন নির্বাচনে বিজয়ী পেজেশকিয়ান।

সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা গেছে, বিভিন্ন শহরে আনন্দ-উল্লাস করছেন পেজেশকিয়ানের সমর্থকরা। রাস্তায় নেচে-গেয়ে, গাড়ির হর্ন বাজিয়ে উদযাপন করছেন তারা।

৬৯ বছর বয়সী পেজেশকিয়ান পেশায় একজন হার্ট সার্জন ছিলেন। ইরানের উত্তরাঞ্চলীয় তাবরিজ অঞ্চল থেকে পাঁচবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ২০০১ থেকে ২০০৫ সাল পর্যন্ত ছিলেন ইরানের স্বাস্থ্যমন্ত্রী। দেশটির ১০ম জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকারের দায়িত্ব পালনেরও অভিজ্ঞতা রয়েছে তার।

প্রতিশ্রুতি রাখতে পারবেন পেজেশকিয়ান?

এবারের নির্বাচনে লড়াই করা ছয় প্রার্থীর মধ্যে একমাত্র মাসুদ পেজেশকিয়ানকেই কিছুটা উদারমনা ও সংস্কারপন্থি হিসেবে দেখা হচ্ছিল। তার নির্বাচনী এজেন্ডাগুলোর মধ্যে ইরানের কঠোর হিজাব আইন সংস্কার এবং পশ্চিমাদের সঙ্গে সম্পর্কোন্নয়নের প্রতিশ্রুতি ছিল অন্যতম।

আরও পড়ুন>>

পেজেশকিয়ানের মতে, ইরানকে অবশ্যই বিশ্বের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে হবে। ২০১৫ সালের পরমাণু চুক্তির কিছু সংস্করণ ফের চালু করার জন্য পশ্চিমাদের সঙ্গে আলোচনায় বসতে চান তিনি।

ক্ষমতাগ্রহণের পর এসব বিষয়ে বিশ্বনেতাদের কাছ থেকে পেজেশকিয়ান বিপুল সমর্থন পাবেন বলে আশা করা হচ্ছে। তবে নিজ দেশের সরকারের কাছেই বাধার মুখে পড়তে পারেন তিনি।

কারণ, ইরানে রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোতে সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনির সিদ্ধান্তই শেষ কথা। তাছাড়া, সরকারের অন্য পদগুলোতে এখনো রক্ষণশীলদের আধিপত্য রয়েছে।

ফলে, হিজাব আইন সংস্কার বা পররাষ্ট্রনীতি পরিবর্তন করতে হলে পেজেশকিয়ানকে বড় চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হবে, তা বলাই বাহুল্য।

সূত্র: স্কাই নিউজ, পার্স টুডে
কেএএ/

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।