বেবি কেয়ার ব্যবসায় পরিবর্তন আনছে জাপানের প্রবীণরা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ০১:২৪ পিএম, ০৬ জুলাই ২০২৪
জাপানের বয়স্করা ব্যায়াম করছেন। ছবি: এএফপি (ফাইল)

জাপানে বয়স্ক জনসংখ্যার সংকট প্রকট আকার ধারণ করেছে। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে অর্থনীতি। দেশটিতে একদিকে যেমন বয়স্ক জনসংখ্যা বাড়ছে। অন্যদিকে খুব কম দম্পতিই সন্তান নিতে আগ্রহী।

জুন মাসের শুরুর দিকে জানানো হয়, জাপানে ধারাবাহিকভাবে ৮ বছর জন্মহার কমেছে। ২০২৩ সালে রেকর্ড নিম্ন জন্মহার দেখেছে দেশটি। জন্ম হয় মাত্র ৭ লাখ ২৭ হাজার ২৭৭ শিশুর।

কয়েক মাস আগে জাপানের পক্ষ থেকে জানানো হয়, প্রতি দশজনের মধ্যে একজনের বয়স ৮০ বা তার বেশি। এতে বিশ্বের শীর্ষ বয়স্ক জনসংখ্যার দেশের তকমা পায় জাপান। গত বছর জাপানের মোট জনসংখ্যার প্রায় ৩০ শতাংশের বয়স ৬৫ বা তার অধিক ছিল।

আরও পড়ুন>

২০২৩ সালের জুনে জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিহিদা জন্মহার বাড়াতে পরিবারগুলোকে উৎসাহিত করতে কয়েক বিলিয়ন ডলারের প্রকল্প ঘোষণা করেন। মূলত জনসংখ্যাকেন্দ্রিক যে সংকট দেখা দিয়েছে, তা সমাধান করার চেষ্টা চালাচ্ছে দেশটির কর্তৃপক্ষ। জাপানে একদিকে যেমন কর্মী শক্তি কমছে, অন্যদিকে বয়স্কদের দিক থেকে নানা চাহিদা বাড়ছে।

বয়স্ক জনসংখ্যা ভোক্তা পণ্য বাজার পরিবর্তনে ভূমিকা পালন করছে। জাপানে অ্যাডাল্ট ডায়াপারের চাহিদা বাড়ছে উল্লেখযোগ্য হারে। যদিও শিশুদের ডায়াপারের চাহিদা কমেছে।

বাজার গবেষণা প্রভাইডার ইউরোমনিটর ইন্টারন্যাশনালের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালে অ্যাডাল্ট ডায়াপারের বৈশ্বিক বাজার মূল্য ছিল ১২ দশমিক ৮ বিলিয়ন ডলার। আশা করা হচ্ছে, ২০২৬ সালের মধ্যে এই বাজার মূল্য বেড়ে ১৫ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার হতে পারে।

২০২৩ সালে জাপানের অ্যাডাল্ট ডায়াপারের বাজার মূল্য ছিল ১ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলার ও ২০২৬ সালের মধ্যে দেশটিতে এই বাজার মূল্য দাঁড়াতে পারে ১ দশমিক ৯ বিলিয়ন ডলার, যা বিশ্বের ১২ শতাংশ।

জাপানি কোম্পানি ওজি হোল্ডিংস এই পরিবর্তনের সঙ্গে খাপ খাওয়ানোর জন্য পদক্ষেপ নিয়েছে। মার্চে তারা জাপানি বাজারে শিশুদের জন্য ডায়াপার তৈরি বন্ধ ও বয়স্কদের জন্য প্রয়োজন এমন পণ্যে নজর দেওয়ার কথা জানায়।

যদিও বিদেশি বাজারের জন্য শিশু ডায়াপার তৈরি অব্যাহত রাখার কথা জানায় কোম্পানিটি। ২০২৩ সালে অভ্যন্তরীণ বাজারে শিশু ডায়াপার বিক্রি কমলেও চীন, ইন্দোনেশিয়া ও মালিয়েশিয়ায় তাদের বিক্রি বেড়েছে।

জাপানের অন্যান্য কোম্পানিও এই পরিবর্তনের সঙ্গে খাপা খাওয়ানোর চেষ্টা করছে। যেমন দেশটির ইলেকট্রনিক্স কোম্পানি প্যানাসনিক বয়স্কদের জন্য প্রয়োজন এমন পণ্যে নিয়ে গবেষণা করছে ও তৈরি করছে।

তাছাড়া রান্নাঘরের পণ্যসামগ্রী প্রস্তুতকারক জোজিরুশি বয়স্ক নাগরিকদের বিবেচনায় নিয়ে অনৈক পণ্য বাজারে এনেছে।

এশিয়ায় বয়স্ক জনসংখ্যার ক্ষেত্রে শুধু জাপানেই সমস্যা নয়। দক্ষিণ কোরিয়াও এক্ষেত্রে সংকটে রয়েছে। ২০২৩ সালের হিসাব অনুযায়ী, দেশটিতে নারী প্রতি শিশুর সংখ্যা শূন্য দশমিক ৭২। সম্প্রতি এবিষয়ে একটি নতুন মন্ত্রণালয়ও চালু করেছে দক্ষিণ কোরিয়া। জন্মহার কমেছে হংকং, চীন ও তাইওয়ানেও।

সূত্র: সিএনএন

এমএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।