ন্যাটোর প্রধান হচ্ছেন নেদারল্যান্ডসের প্রধানমন্ত্রী

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৬:২৯ পিএম, ২১ জুন ২০২৪
নেদারল্যাান্ডসের কার্যকরী প্রধানমন্ত্রী মার্ক রুটে/ ছবি: সংগৃহীত

যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটোর পরবর্তী সেক্রেটারি জেনারেল হচ্ছেন নেদারল্যাান্ডসের কার্যকরী প্রধানমন্ত্রী মার্ক রুটে। বর্তমান সেক্রেটারি জেনারেল স্টলটেনবার্গের পদে থাকার মেয়াদ আগামী অক্টোবরে শেষ হবে। তারপরেই দায়িত্ব নেবেন রুটে। ন্যাটো শরিকদের মধ্যে দীর্ঘ আলোচনার পরেই এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।

২০২৩ সালের জুলাইতে ১৩ বছর ধরে প্রধানমন্ত্রী থাকার পর রুটে ঘোষণা দেন যে তিনি সক্রিয় রাজনীতি থেকে অবসর নিচ্ছেন। নেদারল্যান্ডসের ইতিহাসে তিনিই সবচেয়ে বেশি সময় ধরে ক্ষমতায় থাকা প্রধানমন্ত্রী।

কিন্তু কেন রুটে রাজনীতি থেকে অবসর নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন? জানা যায়, জোটের মধ্যে অভিযোগ উঠেছিল যে রুটে অভিবাসীদের প্রতি নরম মনোভাব দেখাচ্ছেন। এর ফলে চার দলীয় জোটটি ভেঙে যায়। এরপর নির্বাচনে দক্ষিণপন্থিরা সবচেয়ে বেশি আসন পায় ও রুটে তার রাজনৈতিক জীবনের সবচেয়ে বড় হারের মুখে পড়েন।

তারপর থেকে তিনি কার্যকরী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে কাজ করছেন। কারণ দক্ষিণপন্থি দল এখনো সরকার গঠন নিয়ে আলোচনা করে যাচ্ছে।

অবসরের পরিকল্পনা বাতিল

২০২৩ সালে রাজনীতি থেকে অবসর নেওয়ার ঘোষণা দিলেও একই বছরে ৫৭ বছর বয়সী রুটে ন্যাটোর শীর্ষ পদের দায়িত্ব নেওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেন। রুটে ন্যাটো দেশগুলোর প্রধানদের সঙ্গে দেখা করতে শুরু করেন। দীর্ঘদিন ধরে নেদারল্যান্ডসের প্রধানমন্ত্রী থাকার সূত্রে সহজেই সদস্য দেশগুলোর সমর্থন আদায় করে নিতে পারেন তিনি।

এদিকে, রুটে হলেন ইউক্রেনের একনিষ্ঠ সমর্থক। এর ফলে যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন পেতেও তার অসুবিধা হয়নি। আর যুক্তরাষ্ট্র সমর্থন দেওয়া পর ন্যাটোর অন্য সদস্য দেশগুলোও তাকে সমর্থন জানায়।

তবে হাঙ্গেরির দক্ষিণপন্থি জাতীয়তাবাদী প্রধানমন্ত্রী ভিক্টর অরবানের সমর্থন পেতে তার কিছুটা দেরি হয়। অরবানের সঙ্গে রুটের সম্পর্ক আগে খুব একটা ভালো ছিল না। ফলে রুটেকে প্রতিশ্রুতি দিতে হয় যে তিনি যতদিন ন্যাটোর নেতৃত্ব দেবেন, ততদিন হাঙ্গেরিকে ন্যাটোর সীমার বাইরে ইউক্রেনকে সাহায্য করার প্রয়োজন হবে না। হাঙ্গেরির সঙ্গে রাশিয়ার সম্পর্ক খুব ভালো ও দেশটির প্রধানমন্ত্রী ইউক্রেনকে অস্ত্র সরবরাহ করতে ন্যাটোর প্রস্তাব খারিজ করে দিয়েছিলেন।

জানা গেছে, রুটে এমনিতে রসিকতাবোধ সম্পন্ন মানুষ। তিনি সাধারণ বাড়িতেই থাকেন। সাইকেলে করে অফিসে আসেন। মাঝেমধ্যে তিনি হেগ সেন্ট্রাল স্টেশনে পিয়ানোও বাজান।

তবে ন্যাটো প্রধান হিসেবে তাকে আরেকটু ভাবগম্ভীর হতে হবে ও কূটনৈতিক পথে চলতে হবে। ন্যাটোর ৩২টি সদস্য দেশের বিরোধী স্বার্থের মধ্যে ভারসাম্য করে চলতে হবে, যাতে সবাই একসুরে কথা বলতে পারে।

অন্যদিকে, ন্যাটোর প্রধান হিসাবে রুটেকে এই সম্ভাবনার কথাও মাথায় রাখতে হবে যে আসন্ন মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়ী হতে পারেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। রিপাবলিকান এই নেতা যখন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ছিলেন, তখন রুটের সঙ্গে তার সম্পর্ক ভালো ছিল। ট্রাম্প তাকে ‘বন্ধু’ বলে ডাকতেন। তবে রুটে ট্রাম্পের আর্থিক নীতির তীব্র বিরোধী ছিলেন। আরেকটা জায়গায় ট্রাম্পের সঙ্গে তার মতে মেলে না। ট্রাম্প বিরোধী হলেও, রুটে মনে করেন, ইউক্রেনকে অস্ত্র দিয়ে সাহায্য করা উচিত।

সূত্র: ডয়চে ভেলে

এসএএইচ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।