হুথির হামলায় ডুবে গেলো গ্রিক জাহাজ
ইয়েমেনের ইরান-সমর্থিত সামরিক গোষ্ঠী হুথির হামলার এক সপ্তাহ পরে গ্রিসের মালিকানাধীন একটি জাহাজ ডুবে গেছে। বুধবার (১২ জুন) লোহিত সাগর দিয়ে যাওয়া কয়লাবাহী ওই জাহাজে হামলা চালায় হুথি। তবে এই ঘটনায় হতাহতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি। তবে হামলার সময় ইঞ্জিনরুমে থাকা একজন ক্রু নিখোঁজ রয়েছেন বলে জানা গেছে।
গুরুত্বপূর্ণ জলপথে মালিকদের এবং সামরিক বাহিনীর জন্য বাণিজ্যিক শিপিং পর্যবেক্ষণ ও ট্র্যাককারীয় সংস্থা ইউনাইটেড কিংডম মেরিটাইম ট্রেড অপারেশনস (ইউকেএমটিও) জানিয়েছে, মঙ্গলবার (১৮ জুন) ‘টিউটর’ নামক ওই জাহাজটি সর্বশেষ যেখানে দেখা গিয়েছিল, তার চারপাশে ধ্বংসাবশেষ ও তেল দেখা গেছে। অন্যান্য জাহাজকেও এই এলাকায় সতর্কতা বজায় রাখার পরামর্শ দিয়েছে ইউকেএমটিও।
এর আগে ১২ জুন মনুষ্যবিহীন সারফেস বোট, ড্রোন ও ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে ওই জাহাজে হামলা চালায় হুথি। চলতি বছরের ২ মার্চ হুথির হামলায় ডুবে যায় ৪১ হাজার টনেরও বেশি সার বহনকারী ব্রিটিশ জাহাজ ‘রুবিমার’। এরপরেই টিউটরের ডুবে যাওয়ার খবর এলো।
গত সপ্তাহেও হুথির হামলায় মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল পালাউয়ের পতাকাবাহী ইউক্রেনের মালিকানাধীন ও পোল্যান্ড-চালিত ‘ভারবেনা’ নামক জাহাজ। কাঠবোঝাই জাহাজটি মালয়েশিয়া থেকে ইতালি যাওয়ার পথে হামলার শিকার হয়।
এর আগে চলতি বছরের ৩ মে ইসরায়েলগামী সব জাহাজে হামলার হুমকি দেয় হুথি। সেদিন গোষ্ঠীটির সামরিক মুখপাত্র ইয়াহিয়া সারি এক টেলিভিশন বক্তৃতায় এ ঘোষণা দেন। দক্ষিণ গাজার রাফাহ শহরে ইসরায়েলি বাহিনীর স্থল অভিযানের ঘোষণা দেওয়ার পর, এমন হুঁশিয়ারি দিয়েছিল হুথি।
ইয়াহিয়া সারি বলেছিলেন, ভূমধ্যসাগর দিয়ে ইসরায়েলি বন্দরের দিকে যাওয়া যেকোনো জাহাজ আমাদের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হবে। সম্প্রচারের সঙ্গে সঙ্গে এই ঘোষণা কার্যকর হবে। আর আমাদের অস্ত্রগুলো যেকোনো অঞ্চলে হামলা চালাতে সক্ষম।
গত বছরের নভেম্বর থেকে লোহিত সাগর, বাব আল-মান্দাব প্রণালী ও এডেন উপসাগরের গুরুত্বপূর্ণ শিপিং চ্যানেলে ইসরায়েলগামী জাহাজে লক্ষ্য করে বারবার ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা করে আসছে। মূলত ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকার ইসরায়েলি আগ্রাসন বন্ধের দাবিতে এই হামলা চালাচ্ছে গোষ্ঠীটি।
তাদের হামলার কারণে বেশ কয়েকটি বড় শিপিং কোম্পানি লোহিত সাগর দিয়ে জাহাজ চলাচল স্থগিত করেছে। এসব জাহাজ এখন আফ্রিকা ঘুরে কয়েক হাজার মাইল পথ অতিরিক্ত পাড়ি দিয়ে এশিয়া থেকে ইউরোপ-আমেরিকায় যাতায়াত করছে। এর ফলে পণ্য পরিবহনের খরচ যেমন বেড়ে গেছে, তেমনি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বিশ্ব বাণিজ্য।
সূত্র: আল জাজিরা
এসএএইচ