ছেলের ‘অপরাধ’ বাইডেনের প্রচারণায় প্রভাব ফেলবে?

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৫:৩৪ পিএম, ১২ জুন ২০২৪
জো বাইডেন ও হান্টার বাইডেন। ছবি: সংগৃহীত

জো বাইডেনের ছেলে হান্টার বাইডেন ২০১৮ সালে আগ্নেয়াস্ত্র কেনার সময় মিথ্যা তথ্য দিয়েছেন বলে মঙ্গলবার (১১ জুন) দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষমতাসীন কোনো প্রেসিডেন্টের সন্তানের দোষী সাব্যস্ত হওয়ার ঘটনা এটিই প্রথম।

.৩৮ ক্যালিবার রিভলভার কেনার সময় হান্টার বাইডেনকে যে ফরম পূরণ করতে হয়েছিল, সেখানে হান্টার লিখেছিলেন, তিনি মাদকাসক্ত নন। তার বিরুদ্ধে অবৈধভাবে আগ্নেয়াস্ত্র রাখারও অভিযোগ আনা হয়েছিল।

৫৪ বছর বয়সী হান্টার বাইডেন অবশ্য নিজেকে নির্দোষ বলে দাবি করেছেন। আগ্নেয়াস্ত্র কেনার ওই সময়টায় তিনি মাদকাসক্তি থেকে বের হয়ে আসার পথে ছিলেন বলে দাবি করেছেন।

আরও পড়ুন>>

তবে ১২ সদস্যের জুরি মঙ্গলবার হান্টার বাইডেনকে দোষী সাব্যস্ত করেছে। তার যে অপরাধ, তা সর্বোচ্চ ২৫ বছরের শাস্তি হতে পারে। যদিও প্রথমবার অভিযুক্ত হওয়ায় সেটি হওয়ার আশঙ্কা কম। আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে তার সাজার বিষয়ে রায় দেওয়া হবে।

ছেলে অভিযুক্ত হওয়ার পর তার সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন প্রেসিডেন্ট বাইডেন। এক বিবৃতিতে তিনি ছেলের প্রতি ‘ভালোবাসা ও সমর্থন’ জানিয়ে বলেন, আমি প্রেসিডেন্ট, কিন্তু আমি একজন বাবাও।

হান্টার বাইডেন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রথম স্ত্রীর সন্তান। তার প্রথম স্ত্রী ১৯৭২ সালে এক সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যান। ওই দুর্ঘটনায় হান্টার বাইডেন ও তার ভাই বিউ বাইডেন বেঁচে গেলেও তাদের বোন মারা যান।

২০১৫ সালে বিউ বাইডেন মস্তিষ্কের ক্যানসারে মারা যাওয়ার পর প্রেসিডেন্ট বাইডেন হতাশায় ডুবে গিয়েছিলেন, আর হান্টার বাইডেন মাদক ও অ্যালকোহলের দিকে ঝুঁকেছিলেন।

নির্বাচনী প্রচারণায় প্রভাব পড়বে?

ব্যবসার নথিপত্র গোপন করার দায়ে দুই সপ্তাহ আগে অভিযুক্ত হয়েছেন আগামী প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জো বাইডেনের প্রতিপক্ষ ডোনাল্ড ট্রাম্প।

হান্টার বাইডেনের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ এবং চীন ও ইউক্রেনের সঙ্গে তার ব্যবসায়িক চুক্তি বিষয়ে বিতর্ক তৈরি করে রিপাবলিকানরা অনেকদিন ধরেই জো বাইডেনকে আক্রমণ করে আসছে। মঙ্গলবার হান্টার বাইডেনের বিরুদ্ধে রায়ের পরও ট্রাম্পের নির্বাচনী প্রচারণা দল বাইডেন পরিবারকে নিয়ে বিবৃতি দিয়েছে।

আরও পড়ুন>>

ট্রাম্প নিজেও ২০২০ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে বিতর্কের সময় হান্টার বাইডেনকে নিয়ে বক্তব্য দিয়ে ভোটারদের আকর্ষণ করার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু এতে উল্টো জো বাইডেনেরই লাভ হয়েছিল। কারণ, তিনি ক্যামেরার দিকে তাকিয়ে বলেছিলেন, এমন একজন ছেলের বাবা হয়ে তিনি গর্বিত, যে আসক্তি থেকে বের হয়ে আসতে পেরেছে।

প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক জুলিয়ান জেলিজার মনে করছেন, মঙ্গলবারের রায়টি হান্টার বাইডেনকে নিয়ে হলেও ট্রাম্প এর সঙ্গে প্রেসিডেন্ট বাইডেনকে জড়ানোর চেষ্টা করবেন। তিনি বলেন, নিজের বিরুদ্ধে রায়ের পর ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের বিচারব্যবস্থায় রাজনীতিকরণের অভিযোগ এনেছিলেন। কিন্তু হান্টার বাইডেনের মামলা প্রমাণ করছে, মার্কিন বিচারব্যবস্থা পুরোপুরি কার্যকর রয়েছে।

বারাক ওবামার সঙ্গে দীর্ঘদিন কাজ করা স্ট্র্যাটেজিস্ট ডেভিড অ্যাক্সেলরড ওয়াশিংটন পোস্টকে বলেছেন, আমার মনে হয় না, ছেলের আসক্তি ও তার কর্মকাণ্ডের জন্য ভোটাররা জো বাইডেনকে দায়ী করবেন।

সূত্র: এএফপি, ডয়েচে ভেলে
কেএএ/

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।