সোশ্যাল মিডিয়ায় ঝড় তুলেছে ‘অল আয়েস অন রাফা’

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৪:০৬ পিএম, ০১ জুন ২০২৪
ছবি সংগৃহীত

বিরাট এলাকাজুড়ে ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের তাঁবু, আর সেগুলো দিয়ে লেখা একটি স্লোগান ‘অল আয়েস অন রাফা’ বা ‘সব চোখ রাফার দিকে’। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সাহায্যে তৈরি এই ছবিটি কয়েকদিন ধরে ব্যাপকভাবে শেয়ার হচ্ছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে।

ছবিটি প্রথমবার শেয়ার হয়েছিল মালয়েশিয়া থেকে। এরপর দ্রুতই প্রায় সাড়ে চার কোটি ইনস্টাগ্রাম ব্যবহারকারী তা শেয়ার করেন, যাদের মধ্যে ভারত, পাকিস্তান, মধ্যপ্রাচ্যের বহু তারকাও রয়েছেন।

আরও পড়ুন>>

মূলত দক্ষিণ গাজার রাফা শহরে বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিদের একটি শরণার্থী শিবিরে ইসরায়েলি বিমান হামলার পর ছবিটি ভাইরাল হয়। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাবে, ওই হামলায় অন্তত ৪৫ জন নিহত হয়েছেন। আরও শত শত মানুষ পুড়ে যাওয়া ও শরীরে বোমার আঘাতের চিকিৎসা নিচ্ছেন।

বেশ কয়েকজন বিশ্বনেতা, রাষ্ট্রপ্রধান ও আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রধান এই হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন এবং প্রাণহানির ঘটনায় দুঃখপ্রকাশ করেছেন।

রাফার শরণার্থী শিবিরে এই হামলার পরপরই ছবিটি ভাইরাল হয়। বিবিসি অ্যারাবিকের তথ্য অনুযায়ী, ছবিটি প্রথমে মালয়েশিয়ার এক যুবক তার সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্টে পোস্ট করেছিলেন।

‘অল আয়েস অন রাফা’ স্লোগানের শুরু যেভাবে

স্লোগানটি নেওয়া হয় মূলত দখলকৃত ফিলিস্তিনি অঞ্চলে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিনিধি রিচার্ড পিপারকর্নের একটি উক্তি থেকে। গত ফেব্রুয়ারিতে তিনি সাংবাদিকদের বলেছিলেন, ‘অল আয়েস অন রাফা’ বা আমাদের সবার চোখ এখন রাফার দিকে। তিনি এর মাধ্যমে রাফায় হামলার পরিকল্পনা করা ইসরায়েলি সেনাবাহিনীকে একটি সতর্কবার্তা দেন।

জেনেভায় জাতিসংঘ সদর দপ্তরে সাংবাদিকদের সামনে পিপারকর্ন জানান, তার শঙ্কা, ইসরায়েলি সেনারা যদি রাফায় ব্যাপক অভিযান চালায়, তাহলে ‘অকল্পনীয় দুর্ভোগ’ নেমে আসবে।

আরও পড়ুন>>

এরপর থেকে পিপারকর্নের বলা ওই কথাটি অন্য কর্মকর্তা ও অ্যাক্টিভিস্টরা বারবার ব্যবহার করে আসছিলেন রাফায় ইসরায়েলি অভিযানের বিরোধিতা করতে ও তাদের উদ্বেগ জানাতে।

ছবিটি সোশ্যাল মিডিয়ায় এত ছড়ালো কেন?

‘অল আয়েস অন রাফা’ স্লোগানটি ব্যানারে লিখে দেশে দেশে বড় শহরগুলোতে প্রতিবাদ করতে দেখা গেছে।

যেসব তারকা এই স্লোগানসহ ছবিটি শেয়ার করেছেন তাদের মধ্যে রয়েছেন পপ তারকা রিকি মার্টিন, তুরস্কের অভিনেত্রী তুবা বায়ুকুস্তান, ভারতের প্রিয়াঙ্কা চোপড়া, আলিয়া ভাট, বরুণ ধাওয়ান, সিরিয়ার অভিনেত্রী কিনদা আলুশ প্রমুখ।

ই-মার্কেটিং এবং আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই) কনসালট্যান্ট মাহের নামারি জানান, ছবিটি যখন ব্যাপক আকারে শেয়ার হতে থাকে, তখন ইনস্টাগ্রামের একটি ফিচার ‘অ্যাড ইয়োরস’ এতে ব্যবহার করা হয়। ফলে মাত্র দুটি ক্লিকেই ব্যবহারকারীরা এতে অংশ নিতে পারে, যা এই প্রচারণায় মিলিয়ন মিলিয়ন মানুষকে খুব সহজে যুক্ত করে নেয়।

আরও পড়ুন>>

কিন্তু নামারি মনে করিয়ে দেন, ঘটনাটি এতটাই হৃদয়বিদারক, যার ফলে অনলাইনে এর সহজলভ্যতা ছবিটিকে দ্রুত ছড়িয়ে দিতে সাহায্য করেছে। তার কথায়, রাফায় হামলা সারাবিশ্বের মানুষকে দুঃখভারাক্রান্ত করেছে।

নামারি বলেন, আরও একটি কারণেও ছবিটি এত বেশি ছড়িয়েছে। তা হলো- এতে কোনো রক্ত, সত্যিকার মানুষ, কোনো নাম বা মর্মান্তিক দৃশ্য নেই। ইনস্টাগ্রামের নিয়ম অনুযায়ী, তাহলে এটি নিয়ন্ত্রিত হয়ে পড়তো।

সূত্র: বিবিসি বাংলা
কেএএ/

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।