ভুল স্বীকার করেও যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা নেতানিয়াহুর
দুদিন আগে ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজার উপত্যকার রাফা শহরে বাস্তুচ্যুতদের তাঁবুতে বিমান হামলার ঘটনায় বিশ্বজুড়ে সমালোচনার ঝড় উঠেছে। তাছাড়া রাফায় হামলা বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে জাতিসংঘের শীর্ষ আদালত আন্তর্জাতিক বিচার আদালত (আইসিজে)। এরপরও রাফায় হামলা ও যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার কথা জানিয়েছে ইসরায়েলে প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু।
রোববার (২৬ মে) রাফার তাল আস-সুলতান শহরে অবস্থিত একটি তাঁবুতে হামলা চালায় ইসরায়েলি বাহিনী। এতে অন্তত ৪৫ জন নিহত হয়, যার অধিকাংশই নারী ও শিশু। এর আগে জাবালিয়া, নুসেইরাত এবং গাজা সিটির বিভিন্ন শরণার্থী শিবিরে হামলা চালায় ইসরায়েল। এতে কমপক্ষে ১৬০ জন নিহত হয়।
সোমবার (২৭ মে) সংসদে কথা বলার সময় নেতানিয়াহু বলেন, রোববারের বিমান হামলাটি ‘দুঃখজনক ভুল’ ছিল। তবে এর জন্য আমি যুদ্ধ থামিয়ে দিচ্ছি না। আমাদের সব লক্ষ্য পূরণ না হওয়া পর্যন্ত যুদ্ধ চলবে।
আরও পড়ুন:
- বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিদের তাঁবুতে ইসরায়েলের হামলা, নিহত ৪০
- আন্তর্জাতিক আদালতের আদেশকে অগ্রহণযোগ্য বললো ইসরায়েল
- রাফায় হামলা বন্ধ করতে ইসরায়েলকে আইসিজের নির্দেশ
তিনি আরও বলেন, অবশ্যই গাজার বেসামরিক নাগরিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা ইসসায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনীর (আইডিএফের) কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আর আমাদের সেনাবাহনী সাধারণ নাগরিকদের এই যুদ্ধের ভয়াবহতা থেকে দূরে রাখার, নিরাপদে রাখার সর্বোচ্চ চেষ্টা করছে।
‘রাফাহ থেকে আমরা এরই মধ্যে প্রায় ১০ লাখ বেসামরিক নাগরিককে সরিয়ে নিয়েছি। তাদের যাতে কোনো ক্ষতি না হয়, তা নিশ্চিতের জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা সত্ত্বেও দুর্ভাগ্যবশত দুঃখজনকভাবে ভুলটি হয়ে গেছে। আমরা ঘটনাটি তদন্ত করছি।’
রোববারের ওই হামলার পরপরই আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো ইসরায়েলের চরম সমালোচনা করে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) পররাষ্ট্রনীতিবিষয়ক জোসেপ বরেলও এই ঘটনার নিন্দা জানান। সেই সঙ্গে ইসরায়েলকে আইসিজের রায়ের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়ার পাশাপাশি আন্তর্জাতিক আইন মেনে চলতে বলেন।
আরও পড়ুন:
- ইসরায়েলগামী আরও তিন জাহাজে হুথির হামলা
- মধ্য ইসরায়েলে হামাসের রকেট হামলা
- আদালতের আদেশ উপেক্ষা করে হামলা, গাজায় নিহত বেড়ে প্রায় ৩৬ হাজার
- লেবানন থেকে রকেট হামলায় ইসরায়েলে ক্ষয়ক্ষতি
জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক প্রধান ভলকার তুর্ক বলেছেন, আইসিজে রাফায় হামলা বন্ধের রায় দিলেও ইসরায়েল তা মানছে না। তাছাড়া ইসরায়েলের যুদ্ধ কৌশল ও পদ্ধতিতে এখনো তেমন কোনো পরিবর্তন চোখে পড়েনি, যে কারণে অনেক বেসামরিক নাগরিকের প্রাণহানি ঘটছে।
এদিকে, ইসরায়েলর ‘পরম মিত্র’ যুক্তরাষ্ট্র বলেছে, রোববারের ছবিগুলো ‘হৃদয়বিদারক’। তবে ইসরায়েলেরও আত্মরক্ষার অধিকার রয়েছে। এক বিবৃতিতে হোয়াইট হাউজের জাতীয় নিরাপত্তাবিষয়ক মুখপাত্র বলেছেন, ইসরায়েলের অবশ্যই হামাসকে লক্ষ্যবস্তু করার অধিকার রয়েছে।
‘রোববারের হামলায় হামাসের দুই জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা নিহতও হয়েছেন। তবে ইসরায়েলকে অবশ্যই বেসামরিক নাগরিকদের সুরক্ষার জন্য সম্ভাব্য সব সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।’
সূত্র: বিবিসি
এসএএইচ