এমপি আনারের মরদেহ গুম করা সিয়াম কলকাতায় গ্রেফতার
কলকাতার নিউটাউনে বাংলাদেশি সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনার হত্যায় দুজনকে গ্রেফতার করেছে পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ। এদের মধ্যে সিআইডির হাতে গ্রেফতার একজন বাংলাদেশি নাগরিক। তার নাম সিয়াম। ১৩ মে হত্যাকাণ্ডের দিন তিনি সঞ্জীবা গার্ডেনসের ওই ফ্ল্যাটে ছিলেন বলে জানা গেছে। এমপির মরদেহের খণ্ডিত অংশ গুমের দায়িত্ব ছিল সিয়ামের ওপর।
ওই একই ঘটনায় জুবের নামে এক ক্যাবচালককেও আটক করেছেন তদন্তকারী কর্মকর্তারা। টানা জিজ্ঞাসাবাদ চলছে তাকে। এরই মধ্যে তার গাড়িটিও জব্দ করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার ভোর রাতে জব্দ করা হয় সাদা রঙের মারুতি গাড়িটিকে।
আরও পড়ুন
- এমপির মরদেহ টুকরো করে রাখা হয় ফ্রিজে, ফেলা হয় ট্রলিব্যাগে করে
- এমপি আনারের মরদেহ গুমে ব্যবহৃত গাড়ি জব্দ, চালক গ্রেফতার
- নিউটাউনে যেভাবে সন্ধান মেলে আনোয়ারুল আজীমের
পুলিশ সূত্রে খবর, গত ৩০ এপ্রিল অনলাইন রেন্টালের মাধ্যমে গাড়িটি ভাড়া করেছিলেন আততায়ীরা। গত ১২ মে ভারতে আসেন ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনার। তিনি ওঠেন বরানগরের পূর্ব পরিচিত গোপাল বিশ্বাসের বাড়িতে। পরদিন, ১৩ মে চিকিৎসা করাতে যাবেন বলে গোপালের বাড়ি থেকে বের হন এমপি আনার।
ওইদিন রাতেই নিউটাউনের সঞ্জীবা গার্ডেনসের একটি ফ্ল্যাটে তাকে খুন করা হয় বলে অভিযোগ। ১৪ মে প্রথম পর্যায়ে এমপির মরদেহের খণ্ডিত অংশ একটি ট্রলিব্যাগে করে ফ্ল্যাট থেকে বের করা হয়। এরপর তোলা হয় ওই সাদা রঙের ক্যাবে।
সূত্র জানিয়েছে, সিআইডির হাতে গ্রেফতার সিয়ামের দায়িত্ব ছিল ওই মরদেহের টুকরোগুলোকে সরিয়ে দেওয়া।
সঞ্জীবা গার্ডেনসের ওই ফ্ল্যাট থেকে বেশ কিছু প্লাস্টিক ব্যাগ পাওয়া গেছে। পুলিশের ধারণা, এমপি আনারের মরদেহের টুকরোগুলো সরানোর উদ্দেশ্যে ব্যাগগুলো আনা হয়েছিল।
আরও পড়ুন
- ‘দিল্লি পৌঁছেছি, সঙ্গে ভিআইপি আছে’
- আনোয়ারুল আজীমের মরদেহ নিয়ে ধোঁয়াশা
- কলকাতায় বাংলাদেশি এমপি খুন, যা বলছে ভারতের মিডিয়াগুলো
জিজ্ঞাসাবাদে ক্যাবচালক জানিয়েছেন, গত ১৪ মে এক নারী ও দুই পুরুষকে ট্রলিব্যাগসহ অ্যাকসিস শপিং মলের সামনে নামিয়ে দেন তিনি।
সিসিভিটি ফুটেজ দেখে সিআইডি জানতে পেরেছে, অ্যাক্সিস শপিং মলে নামানোর আগে নজরুল তীর্থের কাছে গাড়িটি প্রায় ১৫ মিনিট দাঁড়িয়ে ছিল।
সেই সময় দেহাংশ কোথায় ফেলা হবে তা নিয়ে আলোচনা হয় গাড়ির মধ্যেই। সিআইডি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ক্যাবচালক সেই আলোচনা শুনতে পারেন। এরপর অভিযুক্তদের অ্যাক্সিস শপিং মলের সামনে নামিয়ে দেন তিনি। ফলে ক্যাবচালক অনেক কিছুই জানেন, যা তিনি বলছেন না বলে অনুমান তদন্তকারীদের।
বাংলাদেশি এমপি খুনের ঘটনায় এরই মধ্যে নিউটাউন থানায় একটি মামলা দায়ের হয়েছে।
এদিকে, এই ঘটনায় আরও একটি গাড়ি জব্দ করা হয়েছে। ওই গাড়িতে চড়ে এমপি আনার কলকাতা নিউমার্কেট ও সঞ্জীবা গার্ডেনসে গিয়েছিলেন। বুধবার সন্ধ্যায় নিউটাউন থানার সামনে এনে গাড়িটির ভেতর থেকে আলামত সংগ্রহ করেছে ফরেনসিক টিম। জানা গেছে, মালিক গাড়িটিকে ভাড়ায় ব্যবহার করতে দিয়েছিলেন। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে নিউটাউন থানার পুলিশ।
ডিডি/কেএএ/