আটা-বিদ্যুতের দামবৃদ্ধি

পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে বিক্ষোভ-সহিংসতায় নিহত ৪

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৬:৩৩ পিএম, ১৪ মে ২০২৪
শনিবার (১১ মে) পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের রাজধানী মুজাফফরাবাদে পুলিশ ও বিক্ষোভকারীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে/ /ছবি: সংগৃহীত

পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে আটা ও বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির প্রতিবাদে বিক্ষোভ দেখা দিয়েছে। এতে বেশকিছু হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, সোমবার (১৩ মে) সন্ধ্যায় এই অঞ্চলে আধাসামরিক বাহিনীর সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষে এক পুলিশ সদস্যসহ চারজন নিহত ও শতাধিক আহত হয়েছেন।

নিহত চারজনের মধ্যে একজন পুলিশ কর্মকর্তা বলে জানিয়েছে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ। পাকিস্তানের সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালের এক চিকিৎসক জানিয়েছেন, নিহতদের মধ্যে দুইজন গুলির আঘাতে মারা গেছেন। নিহতদের স্মরণে ১৩ মে দিনটিকে কালো দিবস হিসেবে ঘোষণা করার দাবি তুলেছে জম্মু-কাশ্মীর জয়েন্ট আওয়ামী অ্যাকশন কমিটি (জেএএসি)।

আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, মুদ্রাস্ফীতি, নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি, চড়া রাজস্ব ও বিদ্যুৎসংকটের প্রতিবাদে শুক্রবার (১০ মে) থেকে বিক্ষোভের ডাক দেয়ে জেএএসি। তাদের আহ্বানে সাড়া দিয়ে রাস্তায় নেমে আসে হাজার হাজার মানুষ। বিক্ষোভ ক্রমেই বাড়েতে থাকে ও শনিবার বিক্ষোভকারীরা আঞ্চলিক রাজধানী মুজাফফরাবাদের দিকে অগ্রসর হতে থাকে।

আরও পড়ুন: 

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ওই অঞ্চলের ইন্টারনেট ও মোবাইল সেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়। বন্ধ করে দেওয়া হয় স্থানীয় সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, গণপরিবহণ ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। এমন পরিস্থিতির মধ্যে সোমবার বিক্ষোভ থামাতে আঞ্চলিক রাজধানী মুজাফফরাবাদে আধাসামরিক বাহিনী রেঞ্জার্স পাঠায় কর্তৃপক্ষ। সেসময় তারা বেশ কয়েকজন জেএএসি নেতা ও বিক্ষোভকারীকে আটক করে।

জেএএসি নেতাদের আটকের ঘটনায় আরও ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন বিক্ষোভকারীরা। একপর্যায়ে তারা আধাসামরিক জওয়ানদের ওপর চড়াও হন। সেসময় রেঞ্জার্স বাহিনী বিক্ষোভকারীদের ওপর গুলি ও কাঁদানে গ্যাস ছোড়ে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে থাকায় সোমবারই জেএএসি নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে বসে পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় সরকার।

আলোচনা শেষে আটা ও বিদ্যুতের মূল্যে ভর্তুকি দেওয়ার জন্য ২৩০০ কোটি রুপির প্যাকেজ ঘোষণা করে পাকিস্তান সরকার। দাবি মেনে নেওয়ায় চলমান বিক্ষোভ প্রত্যাহারের ঘোষণা দেয় জেএএসি। তবে বিক্ষোভে নিহতদের স্মরণে মঙ্গলবার বিকেল ৩টা পর্যন্ত ধর্মঘট পালন করা কথা জানায় তারা। সেই সঙ্গে রেঞ্জারের গুলিতে নিহতদের পরিবারকে আর্থিক ক্ষতিপূরণ দাবি করে তারা।

আরও পড়ুন: 

জেএএসি চেয়ারম্যান শওকত নওয়াজ মীর বলেছেন, আমাদের সমর্থকরা শান্তিপূর্ণভাবে বিক্ষোভে করছিলেন। কিন্তু সরকার রেঞ্জার মোতায়েন করে আমাদের উপর চাপ প্রয়োগ করতে চায়। আধাসামরিক সেনাদের গুলিতে তিনজন নিহত হয়েছেন। ঘটনাটি অত্যন্ত ন্যক্কারজনক।

পাকিস্তান শাসিত কাশ্মীর একটি আধা-স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল যার নিজস্ব আঞ্চলিক সরকার রয়েছে। কাশ্মির নিয়ে দীর্ঘ ৭০ বছর ধরে দ্বন্দ্ব চলে আসছে পাকিস্তান ও ভারতের মধ্যে। অঞ্চলটিকে এককভাবে নিজেদের বলে দাবি করে উভয় দেশই। তাছাড়া কাশ্মির নিয়ে দুই দেশের মধ্যে দুইবার যুদ্ধও হয়েছে।

সূত্র: বিবিসি, আল জাজিরা

এসএএইচ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।