শেষ নিরাপদ স্থান থেকেও সরিয়ে দেওয়া হচ্ছে গাজাবাসীকে
দক্ষিণ গাজার রাফা শহর থেকে প্রায় ৩ লাখ ফিলিস্তিনি অন্যত্র সরে গেছে। সোমবার (৬ মে) স্থল অভিযানের উদ্দেশ্যে ইসরায়েল সরে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়ার পর থেকেই অসহায় ফিলিস্তিনিরা এই শহর থেকে পালিয়ে যেতে থাকে।
এক বিবৃতিতে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী জানিয়েছে, এখন পর্যন্ত প্রায় ৩ লাখ গাজাবাসী রাফা থেকে আল-মাওয়াসি শহরের ‘মানবিক অঞ্চলের’ দিকে চলে গেছে।
এর আগে শুক্রবার (১০ মে) জাতিসংঘ জানিয়েছিল, ৬ মে থেকে এক লাখেরও বেশি মানুষ রাফাহ থেকে পালিয়েছে। তারও আগে শনিবার (৪ মে) ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী পূর্ব রাফাহ ও উত্তর গাজা থেকেও স্থানীয় বাসিন্দাদের সরে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল।
আরও পড়ুন:
- গাজার রাফা শহর কেন এত গুরুত্বপূর্ণ?
- গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় ৮ শিশুসহ নিহত ২০
- প্রয়োজন হলে ইসরায়েল একাই যুদ্ধ চালিয়ে যাবে: নেতানিয়াহু
- ইসরায়েলকে অস্ত্র না দেওয়ার আহ্বান অ্যামনেস্টির
গত বছরের ৭ অক্টোবর ইসরায়েল রাফাকে ‘নিরাপদ অঞ্চল’ ঘোষণা করে। সেসময় গাজার উত্তরাঞ্চল থেকে পালিয়ে প্রায় ১৫ লাখ ফিলিস্তিনি শহরটিতে আশ্রয় নেয়। এখন ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী রাফায় বড় ধরনের অভিযান শুরুর ঘোষণা দিয়েছে।
এমন অবস্থায় নিরীহ মানুষজন শেষ নিরাপদ শহরটিও ছেড়ে যেতে বাধ্য হচ্ছে। জানা গেছে, তাদের বেশিরভাগই মধ্য গাজার দেইর এল-বালাহ শহরের দিকে পা বাড়িয়েছে।
সম্প্রতি ইসরায়েলের একরোখা আচরণ তার মিত্র দেশগুলোর কপালেও চিন্তার ভাজ ফেলেছে। বিশেষ করে ইহুদী রাষ্ট্রটির পরম মিত্র যুক্তরাষ্ট্র সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছে। মার্কিন প্রশাসনের চোখ রাঙানি ও একের পর এক সতর্কতা উপেক্ষা করেই গাজায় হামলা চালানো অব্যাহত রেখেছে ইসরায়েল।
আরও পড়ুন:
- ইসরায়েলকে শাসালেন বাইডেন
- বাইডেনের হুঁশিয়ারি তোয়াক্কা না করে রাফায় হামলা চালালো ইসরায়েল
- ইসরায়েল-যুক্তরাষ্ট্রের ‘ঐতিহাসিক প্রেম’
বুধবার (৮ মে) ইসরায়েলকে সতর্ক করে দিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছিলেন, গাজার অন্যান্য অঞ্চলে মার্কিন বোমা নিক্ষেপের ফলে বেসামরিক মানুষ নিহত হয়েছে। এখন ইসরায়েলি সেনাবাহিনী যদি রাফায় হামলা চালায়, তবে আমি অস্ত্র সরবরাহ বন্ধ করে দেবো।
বাইডেনের এমন হুঁশিয়ারির প্রতিক্রিয়ায় ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু বলেন, যুক্তরাষ্ট্র যদি অস্ত্রের চালান বন্ধ করে দেয়, তবে চিন্তার কিছু নেই। ইসরায়েলের কাছে পর্যাপ্ত অস্ত্রের জোগান আছে। সঙ্গে আছে আমাদের অদম্য মনোবল। দরকার হলে আমরা একাই যুদ্ধ চালিয়ে যাবো ও ঈশ্বরের সাহায্যে ইসরায়েলই বিজয়ী হবে।
এদিকে, গাজার হামাস-নিয়ন্ত্রিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গত ৭ অক্টোবর থেকে এখন পর্যন্ত গাজায় ৩৪ হাজার ৯৭১ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে ৭০ শতাংশই নারী ও শিশু। তাছাড়া ইসরায়েলি হামলায় এখন পর্যন্ত আহত হয়েছে ৭৮ হাজার ৬৪১ জন ফিলিস্তিনি।
সূত্র: আল জাজিরা
এসএএইচ