দ্য ইকোনমিস্টের প্রতিবেদন
ভারতের অর্থনীতি কতটা শক্তিশালী?
ভারতে চলছে লোকসভা নির্বাচন। এরই মধ্যে শেষ হয়েছে দ্বিতীয় ধাপের ভোটগ্রহণ। সপ্তম ধাপে শেষ হবে এই ভোটগ্রহণ প্রক্রিয়া। ধারণা করা হচ্ছে, বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী তৃতীয় বারের মতো জয় পাবেন।
ফলে নেহেরুর পরেই জনপ্রিয় নেতার মর্যাদা পাবেন তিনি। এই চা-বিক্রেতার ছেলের নির্বাচনী সাফল্য মূলত তার রাজনৈতিক দক্ষতা, হিন্দু-জাতীয়তাবাদী আদর্শের শক্তি ও গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানের ক্ষয়ের প্রতিফলন ঘটায়। তবে এটি সাধারণ ভোটার ও অভিজাতদের মধ্যে একটি ধারণাও প্রতিফলিত করবে, যে তিনি ভারতকে সমৃদ্ধি ও শক্তিশালী অবস্থানে নিয়ে আসছেন।
আরও পড়ুন>
- এক দশকে ভারতের আর্থিক ব্যবস্থায় নাটকীয় উন্নতি
- যে কারণে বিশ্বের সবচেয়ে দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনীতির দেশ হচ্ছে ভারত
অবিশ্বায়ন ও স্ট্রংম্যান নেতৃত্বের অধীনে কীভাবে ধনী হওয়া যায়, তার একটি পরীক্ষামূলক উদাহরণ হতে পারে মোদীর ভারত। আগামী ১০ থেকে ২০ বছরে দ্রুত প্রবৃদ্ধি ও অস্থিতিশীলতা পরিহারের ওপর নির্ভর করবে একশ ৪০ কোটি মানুষের ভাগ্য ও বিশ্ব অর্থনীতি। তবে ভারতের সাফল্য স্থায়ী হবে কি না বা মোদীর ক্ষমতায় থাকার ওপরই এটা নির্ভর করে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন আছে।
ভারত হচ্ছে বিশ্বের দ্রুত বর্ধনশীল দেশ, যা বছরে ছয় থেকে সাত শতাংশ হারে বাড়ছে। প্রকাশিত নতুন তথ্যে দেখা গেছে, বেসরকারিখাতের কনফিডেন্স ২০২০ সালের পর বর্তমানে সর্বোচ্চ পর্যায়ে রয়েছে। তাছাড়া ভারত বর্তমানে পঞ্চম বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ। বলা হচ্ছে, ২০২৭ সালের মধ্যে তৃতীয় অর্থনীতির দেশে পরিণত হবে এটি।
ভারতে মার্কিন কোম্পানিগুলোতে ১৫ লাখের মতো কর্মী রয়েছে, যা অন্য যেকোনো দেশের তুলনায় বেশি। দেশটির শেয়ারবাজারের মূল্যও বিশ্বের মধ্যে চতুর্থতম। অ্যাভিয়েশন মার্কেটে দেশটির স্থান তৃতীয়। অর্থনীতি বাড়ার মানেই হলো ভূ-রাজনৈতিকভাবে আরও শক্তিশালী অবস্থানে যাওয়া।
পারস্য উপসাগরে হুথিদের হামলা শুরু হওয়ার পর মধ্যপ্রাচ্যে অন্তত ১০টি যুদ্ধজাহাজ মোতায়েন করে ভারত।
তবে উৎপাদনের ক্ষেত্রে ভারত পরবর্তী চীনে হবে না। কারণ ভারত এমন এক সময় উন্নত হচ্ছে, যখন পণ্য বাণিজ্য ও কারখানার অটোমেশনে স্থবিরতা চলছে। তাই প্রবৃদ্ধির জন্য একটি নতুন মডেল প্রয়োজন। এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভ হলো অবকাঠামোগত উন্নয়ন। বর্তমানে ১৪৯টি বিমানবন্দর রয়েছে ভারতে, যা এক দশক আগের চেয়ে দ্বিগুণ। বছরে ১০ হাজার কিলোমিটার রাস্তা ও ১৫ জিডব্লিউ সোলার এনার্জি ক্যাপাসিটি যুক্ত করছে দেশটি।
ভারতের কিছু কিছু অবকাঠামো রয়েছে যা দেখা যায়না। এর মধ্যে রয়েছে, ডিজিটাল পেমেন্ট, আধুনিক ক্যাপিটাল মার্কেট ও ব্যাংক, ডিজিটাল ট্যাক্স সিস্টেম।
দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভ হলো সার্ভিস রপ্তানি, যা এরই মধ্যে জিডিপির ১০ শতাংশে পৌঁছেছে। নতুন ওয়েলফেয়ার সিস্টেমে লাখ লাখ দরিদ্র ভারতীয় ব্যাংকিং সুবিধা পাচ্ছে। দেশটিতে দারিদ্রের হার ২০১১ সালের ১২ শতাংশ থেকে কমে ৫ শতাংশে নেমে এসেছে।
তবে এত কিছুর পরেও ভারতের একটি বড় সমস্যা রয়েছে। সেটি হলো বেকারত্ব। দেশটির কর্মক্ষম জনসংখ্যার একটি বিশাল অংশই বেকার। ফলে প্রবৃদ্ধি ধরে রাখতে হলে ভারতকে অবশ্যই কর্মসংস্থান তৈরি করতে হবে।
সূত্র: দ্য ইকোনমিস্ট
এমএসএম