পাকিস্তানে হঠাৎ ভিপিএনের চাহিদা দ্বিগুণ
২০২৪ সালে বিশ্বের যেসব দেশে সবচেয়ে বেশি সময় ইন্টারনেট সেবা বন্ধ ছিল, তাদের মধ্যে তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে পাকিস্তান। এর ফলে দেশটিতে আগের বছরগুলোর তুলনায় ভার্চুয়াল প্রাইভেট নেটওয়ার্ক বা ভিপিএনের চাহিদা বেড়েছে দ্বিগুণেরও বেশি।
পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম জিও নিউজ জানিয়েছে, বিশ্বজুড়ে দীর্ঘতম সোশ্যাল মিডিয়া ব্ল্যাকআউটের তালিকায় পাকিস্তানকে তৃতীয় স্থানে রেখেছে রিভিউ ওয়েবসাইট টপ১০ভিপিএন। দেশটিতে প্রায় দেড় মাস যাবৎ বন্ধ সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্স (সাবেক টুইটার)।
আরও পড়ুন>>
- পাকিস্তানে ভোটের মধ্যে ইন্টারনেট সংযোগ বিচ্ছিন্ন
- চতুর্থবারের মতো টিকটক বন্ধ করলো পাকিস্তান
- নারী টিকটকারের ওপর হামলে পড়ল কয়েকশ পাকিস্তানি, ভাইরাল ভিডিও
ডেটা, দরবারের সহ-প্রতিষ্ঠাতা মুতাহের খান দ্য নিউজকে বলেন, ডেটা ডট এআই’র তথ্যমতে, ভিপিএন সেবা এবং ওয়েব এক্সিলারেটরগুলো ২০২৩ সালে সবচেয়ে দ্রুত বর্ধনশীল সাবজনরার মধ্যে ছিল, যা ৪২ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। ইন্টারনেট বিধিনিষেধের জেরে সে বছর পাকিস্তানেও ভিপিএন ব্যবহারে বাড়তে দেখা গেছে।
পাকিস্তান গত ১৭ ফেব্রুয়ারি এক্সের অ্যাক্সেস ব্লক করে। টপ১০ভিপিএনের লাইভ ট্র্যাকারে দেখা যায়, এর দুদিন পরেই, অর্থাৎ ১৯ ফেব্রুয়ারি দেশটিতে ভিপিএনের ব্যবহার বেড়ে গিয়েছিল ১৩১ শতাংশ।
পরের কয়েক দিনে চাহিদা কিছুটা কমলেও ফেব্রুয়ারির শেষ নাগাদ তা আবার গড়ের চেয়ে ৮০ শতাংশ বেশিতে পৌঁছায়।
কেন বেড়েছে ভিপিএনের ব্যবহার?
ডিজিটাল অধিকার কর্মী এবং বোলো ভি উসামা খিলজির পরিচালক জানান, যারা শত্রু রাষ্ট্র এবং অ-রাষ্ট্রীয় সত্ত্বাগুলোর নজরদারি থেকে বাঁচতে চান, তাদের নিরাপত্তা প্রদান করে ভিপিএন। এই ধরনের অ্যাপের ব্যবহার বেশ নিরপেক্ষ এবং কিছু ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয়ও। বিশেষ করে পাকিস্তানে, যেখানে সরকার ইন্টারনেটকে এমনভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে চায়, যেন সবচেয়ে মৌলিক সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলোও সহজলভ্য না হয়।
- পাকিস্তানে যুক্তরাষ্ট্রে তৈরি অস্ত্র ব্যবহার করছে সন্ত্রাসীরা
- ২৫ মার্চ রাতে বাংলাদেশকে স্বাধীনতা দিবসের শুভেচ্ছা পাকিস্তানের
- ২০২৩ সালে বায়ুদূষণে শীর্ষে বাংলাদেশ, দ্বিতীয় পাকিস্তান
তিনি বলেন, এ ধরনের কঠোর পদ্ধতি প্রযুক্তির ক্ষেত্রে কাজ করবে না। কারণ সেক্ষেত্রে উদ্ভাবন সবসময়ই বিধিনিষেধকে ছাড়িয়ে যাবে।
গ্লোবাল ভিপিএন অ্যাডপশন ইনডেক্স অনুসারে, পাকিস্তান ৮৬টি দেশের মধ্যে ১৯ নম্বরে রয়েছে, যেখানে ভিপিএনের ব্যবহার বেশি। দেশটিতে ২০২৩ সালে কমপক্ষে ২ কোটি ৭৬ লাখ ২২ হাজার ৩৮৯ বার ভিপিএন ডাউনলোড করা হয়েছে, যা ২০২২ সালের চেয়ে অন্তত ৫০ শতাংশ বেশি।
খিলজি জানান, বিশ্বব্যাপী সেবার জন্য অবস্থানের ভিত্তিতে অ্যাক্সেসের প্রয়োজন, এমন বেশ কয়েকটি ব্যবসার অপরিহার্য অংশ হলো ভিপিএন। এটি আর্থিক লেনদেন ও অন্যান্য সংবেদনশীল বিষয়গুলোর নিরাপত্তা রক্ষা করে এবং কিছু নির্দিষ্ট ব্যবস্থায় অ্যাক্সেস না-ও থাকতে পারে এমন বস্তুগুলোতে অ্যাক্সেস দিতে সক্ষম।
স্টার্টআপএইচকিউ’র প্রতিষ্ঠাতা শাহরুখ মালিক জানান, ভিপিএনের ব্যবহার কেবল ইন্টারনেট বিধিনিষেধ এড়ানোর মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। কিছু লোক রয়েছেন যারা সক্রিয়ভাবে ভিপিএন সেবার জন্য অর্থপ্রদান করে থাকেন। তাদের বেশিরভাগই হয় নিয়মিত বিদেশ ভ্রমণ করেন অথবা অন্য দেশ থেকে বিনোদন অপশনগুলো অ্যাক্সেস করতে হয়। এটি ছাড়া কিছু নির্দিষ্ট ব্যবহারের ক্ষেত্রে রয়েছে, যেখানে ব্যবসার স্থানীয় নেটওয়ার্কগুলোতে ভিপিএন অ্যাক্সেসের প্রয়োজন হয়।
কেএএ/