ট্রায়াল ছাড়া পি কে হালদারকে বন্দি রাখায় আপত্তি আইনজীবীর

পশ্চিমবঙ্গ প্রতিনিধি পশ্চিমবঙ্গ প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ০৮:৪৮ এএম, ২২ মার্চ ২০২৪
কলকাতায় পুলিশের গাড়ি থেকে নামছেন পি কে হালদার।

প্রায় দু’বছর আগে কলকাতায় গ্রেফতার হন বাংলাদেশ থেকে কয়েক হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ ও পাচারে অভিযুক্ত প্রশান্ত কুমার হালদার ওরফে পি কে হালদার ও তার পাঁচ সহযোগী। কিন্তু আলোচিত সেই মামলায় সেখানকার স্থানীয় আদালতে এখনো ট্রায়াল না করিয়ে কেন দিনের পর দিন কারাগারে রেখে দেওয়া হচ্ছে, তা নিয়ে প্রশ্ন তুললেন এই মামলার আসামিপক্ষের আইনজীবী মিলন মুখার্জি।

পরিকল্পিতভাবে এই কাজ করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করে কলকাতার এই জ্যেষ্ঠ আইনজীবী বলেন, এটি কোনোভাবে দেরি করানো হচ্ছে, যেন অভিযুক্তদের দীর্ঘদিন ধরে কারাগারে রেখে দেওয়া যায়।

দেশটির শীর্ষ আদালতের একটি রায়ের প্রসঙ্গ তুলে তিনি বলেন, সুপ্রিম কোর্টের রায় রয়েছে, ট্রায়াল না করিয়ে বেশি দিন কারাগারে রাখা যাবে না। আজ মহামান্য আদালতকে এই আইন সম্পর্কে অবহিত করলাম। পরবর্তী শুনানিতে জামিনের আবেদনের বিষয়টি শেষ করবো।

আরও পড়ুন>>

বৃহস্পতিবার (২১ মার্চ) কলকাতার নগর দায়রা আদালতে এ সম্পর্কিত মামলায় পি কে হালদারের ভাই প্রাণেশ কুমার হালদারের জামিন আবেদন করতে গিয়ে আদালতে এই মন্তব্য করেন তার আইনজীবী মিলন মুখার্জি।

মামলার প্রধান অভিযুক্ত পি কের হালদারের বিরুদ্ধে এরই মধ্যে বাংলাদেশের আদালতে সাজা ঘোষণা হয়েছে। কিন্তু তার রায় প্রদান এখনো সম্পূর্ণ হয়নি এবং সেই রায়ের প্রতিলিপি কলকাতার আদালতে না আসা পর্যন্ত ভারতে এই মামলার বিচার প্রক্রিয়া এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি হচ্ছে বলে জানিয়েছেন মিলন মুখার্জি।

তিনি বলেন, বাংলাদেশে এখনো এই রায়ের জাজমেন্ট দেওয়া হয়নি। কেবল প্রস্তাবিত অর্ডারটা দেওয়া হয়েছে। সে কারণে আমিও উচ্চতর আদালতে চ্যালেঞ্জ করে আপিল করতে পারছি না। আমার মনে হচ্ছে, এটি কোনোভাবে দেরি করানো হচ্ছে, যেন অভিযুক্তদের কারাগারে রেখে দেওয়া যায়।

আরও পড়ুন>>

এদিন কলকাতার নগর দায়রা আদালতে (ব্যাংকশাল) পি কে হালদারের বিরুদ্ধে থাকা অর্থপাচার মামলার শুনানি থাকলেও তা ফের পিছিয়ে যায়। মামলাটির শুনানি ছিল আদালতের বিশেষ সিবিআই কোর্ট-১ বিচারক প্রসন্ন মুখোপাধ্যায়ের এজলাসে।

এদিন কেবল প্রাণেশের জামিনের আবেদন চেয়ে সওয়াল-জবাব করেন মিলন মুখার্জি। সেক্ষেত্রে জামিনের জোরালো আবেদন জানান তিনি। মামলার তদন্তকারী সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)-এর পক্ষ থেকে জামিনের কোন বিরোধিতা করা হয়নি। মামলাটির পরবর্তী শুনানি অনুষ্ঠিত হবে আগামী ৪ এপ্রিল।

আরও পড়ুন>>

অন্যদিকে ইডি’র আইনজীবী অরিজিৎ চক্রবর্তী বলেন, প্রাণেশ কুমার হালদারের জামিনের আবেদনের শুনানি চলছে। তার হয়ে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মিলন মুখার্জি আদালতে বলছেন। এরপর আমরা জবাব দেবো। তারপর মহামান্য আদালত বিচার করে সিদ্ধান্ত নেবেন।

কয়েক দফায় বিচার বিভাগীয় হেফাজতে থাকার পর বৃহস্পতিবার অভিযুক্ত পি কে হালদার, তার ভাই প্রাণেশ হালদার, স্বপন মিস্ত্রি ওরফে স্বপন মৈত্র, উত্তম মিস্ত্রি ওরফে উত্তম মৈত্র, ইমাম হোসেন ওরফে ইমন হালদার এবং আমানা সুলতানা ওরফে শর্মী হালদারসহ ছয় অভিযুক্তকে আদালতে হাজির করা হয়।

উল্লেখ্য ২০২২ সালের ১৪ মে পশ্চিমবঙ্গের রাজারহাটের বৈদিক ভিলেজ থেকে পি কে হালদারকে গ্রেফতার করে ভারতের তদন্তকারী সংস্থা ইডি। এছাড়াও রাজ্যটির বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি অভিযান চালিয়ে তার আরও পাঁচ সহযোগীকে গ্রেফতার করা হয়। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে এরই মধ্যে আদালতে চার্জ গঠন করা হয়েছে।

বর্তমানে পি কে হালদার সহ পাঁচ পুরুষ অভিযুক্ত রয়েছে কলকাতার প্রেসিডেন্সি কারাগারে। একমাত্র নারী অভিযুক্তকে রাখা হয়েছে আলিপুর নারী সংশোধনাগারে।

ডিডি/কেএএ/

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।