তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ মাত্র এক কদম দূরে: পুতিন

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৪:৪৬ পিএম, ১৮ মার্চ ২০২৪
রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন/ ছবি: এএফপি

নির্বাচনে জিতেই তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ নিয়ে পশ্চিমাদের সতর্ক করে দিলেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। সোমবার (১৮ মার্চ) সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় তিনি বলেন, রাশিয়া-যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে ন্যাটো জোটের মধ্যে সরাসরি সংঘাত মানে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ থেকে পৃথিবী মাত্র এক কদম দূরে। তবে আমি নিশ্চিত কেউই নিশ্চয় এই যুদ্ধ দেখতে চায় না।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি বলছে, ১৯৬২ সালে কিউবার ক্ষেপণাস্ত্র সংকটের পর ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে পশ্চিমাদের সঙ্গে রাশিয়ার সম্পর্কের তীব্র সংকট শুরু হয়। মাঝে মধ্যেই পুতিন পারমাণবিক যুদ্ধের ঝুঁকি নিয়ে সতর্ক করেছেন। কিন্তু তিনি এও বলেন, ইউক্রেনে পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের প্রয়োজনীয়তা তিনি কখনো অনুভব করেননি।

আরও পড়ুন: 

তবে গত মাসে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ বলেন, ভবিষ্যতে তিনি ইউক্রেনে ন্যাটো সেনা মোতায়েনের সম্ভাবনাকে উড়িয়ে দিচ্ছেন না। যদিও অনেক পশ্চিমা দেশ এটি চায়নি, তবে পূর্ব ইউরোপের কয়েকটি দেশ এতে সমর্থন দিয়েছে।

ম্যাক্রোঁর এ মন্তব্যের বিষয়ে রয়টার্সের প্রশ্নের জবাবে ব্যঙ্গ করে পুতিন বলেছিলেন, আধুনিক যুগে সবকিছুই সম্ভব’। সবার কাছেই এটি পরিষ্কার যে পূর্ণ মাত্রায় তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হতে আর সামান্য বাকি। তবে আমি জানি কেউ এই দৃশ্য দেখতে চায় না। তাই আমি আশা করি, ম্যাক্রোঁ ইউক্রেন যুদ্ধ আরও উসকে দেওয়া থেকে বিরত থাকবেন ও শান্তি প্রতিষ্ঠায় ভূমিকা রাখবেন।

রুশ প্রেসিডেন্ট আরও বলেন, আমরা এরই মধ্যে ইউক্রেনে ন্যাটোর সামরিক কর্মীদের উপস্থিতির প্রমাণ পেয়েছি। রাশিয়া যুদ্ধক্ষেত্র থেকে ইংরেজ ও ফরাসি সেনাদের গ্রেফতার করেছে। এটা মোটেই ভালো কিছু না। যুদ্ধে ইউক্রেনের সৈন্যরা ছাড়াও এ ধরনের সেনারাও ব্যাপক সংখ্যায় প্রাণ হারাচ্ছেন।

আরও পড়ুন: 

এদিকে রাশিয়ার ১৫ থেকে ১৭ মার্চের নির্বাচনকে সামনে রেখে দু’দেশের সীমান্তবর্তী অঞ্চলগুলোতে হামলা জোরদার করে কিয়েভ। দফায় দফায় গোলাবর্ষণ ও বিমান হামলায় হতাহতের ঘটনাও ঘটেছে।

ইউক্রেনের এই হামলা নিয়ে পুতিন বলেছেন, যদি ইউক্রেনের হামলা অব্যাহত থাকে, তাহলে রাশিয়ার অঞ্চলগুলোকে রক্ষা করার জন্য ‘বাফার জোন’ বানাবেন তিনি। আমরা যখন উপযুক্ত মনে করবো, তখন কিয়েভ শাসনাধীন অঞ্চলগুলিতে একটি নির্দিষ্ট ‘স্যানিটারি প্রোটেকশন জোন’ তৈরি করতে বাধ্য হবো।

এদিকে রাশিয়ার নির্বাচন বৈধ না হওয়ার যে অভিযোগ যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমাদেশগুলো করেছে, তা উড়িয়ে দিয়েছেন পুতিন। উলটো তামাশা করে বলেছেন, অধিকাংশ পশ্চিমা দেশের থেকে রাশিয়ার গণতন্ত্র বেশি স্বচ্ছ। এই নির্বাচন যুক্তরাষ্ট্রের ‘মেইল-ইন’ ভোটের মতো নয়। সেখানে ১০ ডলারের বিনিময়ে একটি ভোট কেনা যায়।

আরও পড়ুন: 

পুতিন আরও বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে যা ঘটছে, তাতে সারা বিশ্ব হাসাহাসি করছে। এটা কেবল একটি বিপর্যয়, গণতন্ত্র নয়। ডোলান্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান সরকার রাষ্ট্রক্ষমতা ব্যবহার করছে। একজন প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থীকে চাপে রাখতে প্রশাসন ও বিচারব্যবস্থাসহ অন্যান্য বিষয়ের ব্যবহার করা কি গণতান্ত্রিক? মোটেই না।

রাশিয়ায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ১৫ মার্চ থেকে ১৭ মার্চ পর্যন্ত তিনদিন ধরে ভোট গ্রহণ করা হয়। এতে পুতিনের প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থীরা কোনো চ্যালেঞ্জ তৈরি করতে না পারায় নিরঙ্কুশ জয় পান তিনি। প্রায় ৮৭ শতাংশ ভোট পেয়ে পঞ্চমবারের মত দেশটির প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন পুতিন।

সূত্র: এনডিটিভি

এসএএইচ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।