যে কারণে ২৭ বছরে ২২ বার বাড়ি বদলালেন তরুণী

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৪:৪৪ পিএম, ১৮ মার্চ ২০২৪
প্রতীকী ছবি। এএফপি

বয়স মাত্র ২৭ বছর। এই বয়সেই ২২ বার বাড়ি পরিবর্তন করেছেন ভারতের এক তরুণী। কোথাও স্থায়ী হতে না পারার জন্য তার মনে তবু বিন্দুমাত্র আক্ষেপ নেই।

তরুণীর নাম কল্যাণী আধাভ। তার নিয়মিত বাড়ি বদলের অভিজ্ঞতা নিয়ে একটি নিবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে জনপ্রিয় সাময়িকী ভোগ ইন্ডিয়ার পাতায়। সেখানে কল্যাণী জানিয়েছেন তার বাড়ি বদলের নানা অভিজ্ঞতার কথা।

তরুণী জানান, ২৭ বছরের জীবনে এ পর্যন্ত ১০টি শহরে ২২ বার বাড়ি বদল করেছেন তিনি। কোনো নির্দিষ্ট একটি জায়গার প্রতি তার বিশেষ কোনো টান নেই। তিনি জানেন, কিছুদিন পরেই এই আবাসস্থল ছেড়ে নতুন কোথাও চেলে যেতে হবে।

আরও পড়ুন>> 

এ কারণে বাড়ির দেওয়ালে থাকা ফাটলের দাগে রঙের প্রলেপ দেওয়ার তাড়া বোধ করেন না। প্রয়োজন মনে করেন না প্রতিবেশীদের সঙ্গে কথা বলার। যেকোনো ধরনের শারীরিক বা মানসিক ঘনিষ্ঠতা তার কাছে অনর্থক মনে হয়। কারণ, কিছুদিন পরেই তো চলে যেতে হবে নতুন ঠিকানায়, সব কিছু আবারও শুরু করতে হবে একেবারে শূন্য থেকে।

কল্যাণী জানান, তার বাড়ি বদলের প্রথম অভিজ্ঞতা হয় যখন বয়স ছিল মাত্র পাঁচ বছর। ওই সময় তার বোনের জন্ম হয়। কিন্তু সে ছিল অপরিণত শিশু। এ কারণে কল্যাণীর মাকে আট মাস পূর্ণ বিশ্রামে থাকতে বলেন চিকিৎসক। মায়ের পরিশ্রম কমাতে কল্যাণীকে পাঠিয়ে দেওয়া হয় সুদূর নাগপুরে দাদির কাছে। পুরো বছরের মধ্যে মেয়েটির বাবা-মা তাকে দেখতে যেতে পারেননি। সান্তনাস্বরূপ ফ্রিজভর্তি চকলেট রাখা ছিল তার জন্য। এই অভিজ্ঞতাই কল্যাণীর পরবর্তী জীবনের পথনির্দেশক হয়ে ওঠে।

আরও পড়ুন>> 

তরুণীর কথায়, বাড়ির ধারণাটি যখন খুব ক্ষণস্থায়ী হয়, তখন আপনি অন্য জিনিস আঁকড়ে ধরতে শুরু করবেন। আমি যখন বোর্ডিং স্কুলে ছিলাম, তখন থেকে আমার জীবন নথিভুক্ত করতে থাকি। শিগগির এই সময়টা ফুরিয়ে আসবে জেনে ডিজিটাল ক্যামেরায় সব কিছুর ছবি তুলতে শুরু করি।

কল্যাণী জানান, ছোটবেলায় তিনি খুব বইপড়ুয়া ছিলেন। এমনকি পারিবারিক ছুটির সময়ও সঙ্গে উপন্যাসের বই নিয়ে যেতেন। কিন্তু বোর্ডিং স্কুল শেষে যখন উচ্চশিক্ষার জন্য কানাডায় পাড়ি জমান, তখন বইয়ের নেশায় ছেদ পড়ে। প্রিয় বইগুলো বিদেশে নিয়ে যেতে না পারার কষ্ট থেকে তিনি বই পড়াই ছেড়ে দেন। ১০ বছর পরে আজও সেই অভ্যাস ফিরে আসেনি তরুণীর।

কিন্তু, বই রেখে যেতে বাধ্য হলেও বিদেশ-বিভূঁইয়ে প্রিয় বন্ধুকে পাশে পেয়েছিলেন কল্যাণী। যখনই বাড়ির কথা মনে হতো, তখনই বন্ধুর কাছে যেতেন তিনি।

কল্যাণীর কথায়, যাদের সঙ্গে বড় হয়েছি, তাদের পাশে পাওয়ার কারণেই হয়তো নতুন বাসা আমাকে বিচলিত করেনি।

এ কারণে তার মনে হয়, বাড়ি কোনো নির্দিষ্ট জায়গা নয়, এটি একটি অনুভূতি মাত্র।

কেএএ/

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।