সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন হলো বাংলা ভাগের খেলা: মমতা ব্যানার্জী

পশ্চিমবঙ্গ প্রতিনিধি পশ্চিমবঙ্গ প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ০৫:২৯ পিএম, ১২ মার্চ ২০২৪
উত্তর ২৪ পরগনা জেলার হাবড়ার প্রশাসনিক সভায় পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী

সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) বাংলা ভাগের খেলা, আমি জীবন দেব তবুও বাংলায় ডিটেনশান ক্যাম্প হতে দেবো না। মঙ্গলবার (১২ মার্চ) উত্তর ২৪ পরগনা জেলার হাবড়ার প্রশাসনিক সভা থেকে এমনই মন্তব্য করলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী।

এদিনের প্রশাসনিক সভা থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী সিএএ নিয়ে বলেন, দেশজুড়ে সোমবার (১১ মার্চ) সিএএ চালু হয়েছে। আদৌ এটা বৈধ কি না, তা নিয়ে আমার সন্দেহ আছে। পুরোটাই ভাওতা। নির্বাচনের আগে যুদ্ধ-যুদ্ধ খেলা। আর ইচ্ছা করেই কালকের দিনটা বেছে নেওয়া হয়েছে, কারণ কাল থেকে রমজান শুরু হয়েছে।

‘এখন যাদের দরখাস্ত করতে বলা হচ্ছে, তারা দরখাস্ত করলেই নাগরিকত্ব থাকা সত্ত্বেও আপনারা বেআইনি অনুপ্রবেশকারী হয়ে যাবেন। আপনাদের সম্পত্তি, চাকরি-বাকরি, ছেলে-মেয়েদের পড়াশুনা কি হবে? সবটাই বেআইনি হয়ে যাবে? আপনাদের আর কোনো অধিকার থাকবে না।’

আরও পড়ুন: 

‘এটা অধিকার কেড়ে নেওয়ার খেলা। ২০১৯ সালে আসামে এনআরসির নামে ১৩ লাখ হিন্দুর নাম বাদ দেওয়া হয়েছিল। এতে অনেক মানুষ দুঃখে আত্মহত্যা করেছিল। আপনারা যেই দরখাস্ত করবেন, সেই আপনাদের নাগরিকত্ব বাতিল করে দিয়ে ডিটেনশন ক্যাম্পে নিয়ে চলে যাওয়া হবে। এই দরখাস্ত করার আগে বারবার ভাববেন, হাজার বার ভাববেন।’

এরপর মুখ্যমন্ত্রী মনিপুরের অশান্তির ঘটনা তুলে ধরে তিনি বলেন, মনিপুরে কতগুলো চার্চ পুড়িয়েছে। সেখানকার মেয়েদের উলঙ্গ করে নৃত্য করানো হয়েছে। তখন কোথায় ছিলেন বিজেপির নেতারা? একবার জবাব দেবেন।

‘বিজেপি বাঙালিদের সহ্য করতে পারে না। বিজেপি শিখ দেখলেই বলে খালিস্তানি, মুসলিম দেখলেই বলে পাকিস্তানি, আর বাঙালি দেখলেই বলে বাংলাদেশি। বিজেপি ভয়ানক ও কুৎসিত দল। তৃণমূল কংগ্রেসের সবাই চোর নয়, সিপিএম থেকে আসা কয়েকজন হতে পারে। কিন্তু বিজেপির সবাই চোর। ঘরে ঘরে ইডি-সিবিআই পাঠিয়ে দিচ্ছে।

আরও পড়ুন: 

বিজেপি আসলে হিন্দুদের মানে না। তারা রামকৃষ্ণ,পঞ্চানন বর্মা,সারদা মা,মতুয়া ঠাকুরদের মানে না। মোদীর দল আমাদের সংস্কৃতি নষ্ট করতে চাই, কিন্তু আমাদের সঙ্গে পেরে ওঠে না। ওরা আমাকে লাঠি দেখালে আমি ডাণ্ডা দেখাই।

সিএএ বাংলাকে ভাগ করার একটা চক্রান্তের অভিযোগ তুলে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী বলেন, সিএএ কীভাবে বাস্তবায়িত হবে, তা নিয়ে পরিষ্কারভাবে কিছু জানানো হয়নি। তফশিলি, আদিবাসী, মতুয়াদের সংরক্ষণ নিয়ে কি হবে তাও পরিষ্কার করা নেই।

‘মনে হচ্ছে, বাংলাকে আবার ভাগ করার খেলা। মুসলিম, নমঃশূদ্র বাঙালিদের তাড়ানোর খেলা এটা। আমরা এটা করতে দিচ্ছি না, দেবো না। এনআরসিও করতে দেব না। আমরা সবাই নাগরিক। সিএএ করলেই যারা নাগরিক, তারা অনুপ্রবেশকারী হয়ে যাবে।’

ডিডি/এসএএইচ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।