মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনের দাবি
যুক্তরাষ্ট্র-ইউরোপের তিনগুণ বেশি আর্টিলারি তৈরি করছে রাশিয়া
চলতি বছরের শেষদিকে ইউক্রেনে আরেকটি বড় অভিযান চালাতে যাচ্ছে মস্কো। সেই লক্ষ্যে গোলাবারুদের উৎপাদনও বাড়িয়েছে দেশটি। আর যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের তুলনায় প্রায় তিনগুণ বেশি আর্টিলারি শেল উৎপাদন করতে চলেছে রাশিয়া। সোমবার (১১ মার্চ)
ন্যাটোর গোয়েন্দা হিসাব অনুসারে রাশিয়া এখন প্রতি মাসে প্রায় আড়াই লাখ আর্টিলারি শেল তৈরি করছে, বাৎসরিক হিসাবে যা ৩০ লাখের কাছাকাছি। অন্যদিকে, কিয়েভে পাঠানোর জন্য বার্ষিক প্রায় ১২ লাখ শেল তৈরি করার সক্ষমতা রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের। আবার যুক্তরাষ্ট্রে সহায়তা প্যাকেজ আটকে যাওয়ায় ইউক্রেনের অস্ত্র উৎপাদনের মাত্রা আরও কমেছে।
আরও পড়ুন:
- গোলাবারুদের অভাবে রণক্ষেত্র থেকে পিছু হটলো ইউক্রেন
- শক্ত অবস্থানে রাশিয়ার অর্থনীতি, কাজে আসেনি নিষেধাজ্ঞা
- রাশিয়ার হামলায় নিহত ৫, অল্পের জন্য বেঁচে গেলেন জেলেনস্কি
- যুদ্ধ হারার শঙ্কায় জেলেনস্কি, দুষলেন পশ্চিমাদের
- জার্মানির ভুলে ব্রিটিশ সামরিক বাহিনীর তথ্য রাশিয়ার হাতে
যুক্তরাষ্ট্রের একজন জ্যেষ্ঠ সেনা কর্মকর্তা জানিয়েছেন, মার্কিন সামরিক বাহিনী ২০২৫ সালের শেষ নাগাদ প্রতি মাসে ১ লাখ রাউন্ড আর্টিলারি শেল উৎপাদন করার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে। এই সংখ্যা রাশিয়ার মাসিক উৎপাদনের অর্ধেকেরও কম।
পশ্চিমা কর্মকর্তাদের দাবি, রাশিয়া ইউক্রেনে বর্তমানে প্রতিদিন প্রায় ১০ হাজার শেল নিক্ষেপ করছে। যেখানে ইউক্রেনের পক্ষ থেকে দিনে মাত্র ২ হাজার গোলা ছোঁড়া হচ্ছে। আর সম্মুখ সমরের ৬০০ মাইলে উভয় বাহিনীর শেল নিক্ষেপের অনুপাতের মধ্যে আরও তফাৎ রয়েছে। অর্থাৎ সীমান্ত এলাকার যুদ্ধে ইউক্রেনীয় বাহিনী রুশ বাহিনীর চেয়ে অনেক কম শেল ছুড়ছে।
শেলের এই ঘাটতি এমন সময়ে দেখা দিয়েছে, যখন ইউক্রেন যুদ্ধ পরিচালনার ক্ষেত্রে গত দুই বছরের মধ্যে সবচেয়ে সংকটময় পরিস্থিতিতে পড়েছে। এদিকে, কিয়েভ শুধু গোলাবারুদের নয়, সামনের সারিতে যুদ্ধ করার মতো সেনা ঘাটতিতেও পড়েছে। ফলে নাগরিকদের জোরপূর্বক সেনাবাহিনীতে যোগ দিতে বাধ্য করছে জেলেনস্কি প্রশাসন।
আরও পড়ুন:
- সাহায্য না পেলে মারা যাবো, আকুতি ওলেনা জেলেনস্কির
- ইসরায়েল-ইউক্রেন সহায়তা তহবিল আটকে দিলো মার্কিন সিনেট
- প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে প্রভাব জোরালো করতে চায় চীন-রাশিয়া
- বিশ্বজুড়ে পশ্চিমা দেশগুলোর প্রভাব কমতে শুরু করেছে?
- চীনের কড়াকড়িতে ড্রোন সংকটে ইউক্রেন, প্রভাব পড়বে যুদ্ধে
সিএনএন বলছে, যুক্তরাষ্ট্র সহায়তা সরবরাহ কমিয়ে দেওয়ার পরপরই ইউক্রেন এমন বাজে অবস্থার মধ্যে পড়েছে। তাছাড়া অস্ত্র কিনতে যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনকে যে পরিমাণ অর্থ দিয়েছিল, তা শেষ হয়ে গেছে। এর মধ্যেই ইউক্রেনের জন্য নতুন করে ৬ হাজার ৮০০ কোটি ডলারের যে বিশাল অর্থ সরবরাহের প্রস্তাব বাইডেন প্রশাসন দিয়েছিল, তা মার্কিন পার্লামেন্ট কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ হাউজ অব রিপ্রেজেন্টেটিভসে আটকে গেছে।
যুক্তরাষ্ট্র ও তার পশ্চিমা মিত্ররা ইউক্রেনকে এম-১ আব্রামস ট্যাঙ্ক ও এফ-১৬ ফাইটার জেটসহ উন্নত ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা সরবরাহ করেছে। তবে সামরিক বিশ্লেষকরা বলছেন, যুদ্ধে কে জিতবে তা নির্ধারিত হবে কে বেশি কামানের গোলা ছুড়ছে, তার ওপরে।
সূত্র: সিএনএন
এসএএইচ