জলবায়ু পরিবর্তনে পুরুষদের চেয়ে নারীদের আর্থিক ক্ষতি বেশি: জাতিসংঘ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ১২:২৯ পিএম, ০৮ মার্চ ২০২৪
মাঠে গরু চরাতে নিয়ে যাচ্ছেন এক ভারতীয় নারী। ছবি: এএফপি

জলবায়ু পরিবর্তনে উন্নয়নশীল দেশের পুরুষদের তুলনায় নারীদের আর্থিক ক্ষতি বেশি হচ্ছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ। সংস্থাটির সাম্প্রতিক গবেষণা বলছে, নারী-পুরুষের ক্ষয়ক্ষতির হিসাবের এই ব্যবধান ভবিষ্যতে আরও বাড়তে পারে।

গত ৫ মার্চ জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তাপজনিত কারণে গ্রামীণ এলাকার পুরুষপ্রধান পরিবারগুলো যতটা আয় হারাচ্ছে, তার চেয়ে নারীপ্রধান পরিবারগুলোর আয় কমেছে আট শতাংশ বেশি। বন্যার ক্ষেত্রেও পুরুষদের তুলনায় নারীদের আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ প্রায় তিন শতাংশ বেশি।

এ ব্যবধানের অর্থ হলো, বিশ্বের নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোতে পুরুষদের তুলনায় নারীদের হারানো আয় তাপের ক্ষেত্রে ৩ হাজার ৭০০ কোটি মার্কিন ডলার বেশি এবং বন্যার ক্ষেত্রে ১ হাজার ৬০০ কোটি ডলার বেশি।

গবেষকদের অনুমান, দীর্ঘমেয়াদি গড় তাপমাত্রা ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে পুরুষপ্রধান পরিবারগুলোর তুলনায় নারীপ্রধান পরিবারগুলোর আয় প্রায় এক-তৃতীয়াংশ কমে যাবে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চরম উচ্চ তাপমাত্রার মধ্যেও পুরুষদের তুলনায় নারী ও শিশুদের বেশি কাজ করতে হয়। এমন পরিবেশে গ্রামাঞ্চলের শিশুরা সপ্তাহে গড়ে প্রায় এক ঘণ্টা অতিরিক্ত কাজ করে।

এফএও’র অন্তর্ভুক্তিমূলক গ্রামীণ রূপান্তর ও লিঙ্গ সমতা বিষয়ক উপ-পরিচালক এবং প্রতিবেদনের সহ-লেখক লরেন ফিলিপস বলেন, বিশ্বের সরকারগুলো নারীদের অসুবিধার কারণগুলো বিবেচনায় নিতে ব্যর্থ হচ্ছে। জলবায়ু সহায়তাও এমনভাবে নির্ধারণ করা হয়নি, যা লিঙ্গ সমতা ব্যবধানের সমাধান করবে। তিনি বলেন, প্রথমবারের মতো এ প্রতিবেদনেই আর্থিক ক্ষতির ব্যবধান পরিষ্কারভাবে পরিমাপ করা হয়েছে।

জলবায়ু পরিবর্তনে পুরুষদের চেয়ে নারীদের আর্থিক ক্ষতি বেশি: জাতিসংঘ

ঘরের সামনে কাজ করছেন পানামার তিন নারী। ছবি: এএফপি

ফিলিপস বলেন, এ লিঙ্গ ব্যবধান জিডিপি বৃদ্ধিতে নাটকীয় প্রভাব ফেলতে পারে। নারীদের ওপর নজর দিয়ে আমরা যদি সাড়ে চার কোটি মানুষের নিরাপত্তাহীনতা কমাতে পারি, তবে সেটি বৈশ্বিক জিডিপি এক শতাংশ বাড়িয়ে দিতে পারে।

যেভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন নারীরা
জলবায়ু সংকটের কারণে নারীরা পুরুষদের তুলনায় বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার অন্যতম কারণ হলো, এর প্রভাব সমাজে বিদ্যমান নারী-পুরুষ বৈষম্যকে আরও বাড়িয়ে তোলে; যেমন- ভূমি শাসনের অসম অধিকার, নারীদের জন্য অর্থনৈতিক সুযোগের অভাব প্রভৃতি। নারীরা পানি, জ্বালানি ও খাদ্য সরবরাহের ভারও বেশি বহন করেন।

বিশ্বব্যাপী জলবায়ু অর্থায়নের দুই শতাংশেরও কম ক্ষুদ্র খাদ্য উৎপাদকদের কাছে যায় বলে ধারণা করা হয়।

ফিলিপস বলেন, সরকার এবং দাতারা সহায়তার লক্ষ্যমাত্রা আরও ভালোভাবে নির্ধারণ করে এ সমস্যার সমাধান করতে পারে।

তিনি বলেন, নারীদের এমনভাবে টার্গেট করতে হবে, যেন তাদের ক্ষমতায়ন আরও বেশি লাভজনক হয়। নারীদের জলবায়ু অর্থায়নকে নিশানা করলে একাধিক লাভ ও সুবিধা রয়েছে। বিনিয়োগে অনেক বেশি রিটার্ন পেতে আমাদের এসব বিষয়ের ওপর নজর দিতে হবে।

সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

কেএএ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।