রাখাইনে জান্তা বাহিনীর দুই কর্নেলসহ ২৩ সেনা সদস্য নিহত

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৫:০২ পিএম, ০৭ মার্চ ২০২৪
জানুয়ারিতে রাখাইন রাজ্যের সীমান্তবর্তী চিন রাজ্যের পালেতওয়া টাউনশিপের সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর আরাকান আর্মির সৈন্যরা/ ছবি: সংগৃহীত

মিয়ানমারের রাখাইন প্রদেশে বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মির (এএ) সঙ্গে ব্যাপক সংঘাতে জান্তা বাহিনীর দুই কর্নেল ও একজন মেজরসহ ২৩ সেনা সদস্য নিহত হয়েছেন। বুধবার (৬ মার্চ) এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানায় আরাকান আর্মি।

বিবৃতিতে আরাকান আর্মি জানিয়েছে, রাখাইনের পোন্নাজ্ঞিয়ুন শহরে গত ২১ ফেব্রুয়ারি থেকে সামরিক বাহিনীর ৫৫০তম লাইট ইনফ্যান্ট্রি ব্যাটালিয়নের (এলআইবি ৫৫০) সঙ্গে সংঘাত শুরু হয় তাদের। ১৩ দিন ধরে ব্যাপক যুদ্ধ চলার পর গত ৪ মার্চ এলআইবি ৫৫০’র হেড কোয়ার্টার দখলে নেয় আরাকান আর্মি।

হেড কোয়ার্টার ও তার আশপাশের এলাকা থেকে এই সেনা কর্মকর্তা ও সদস্যদের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে বলে বিবৃতিতে জানিয়েছে আরাকান আর্মি। নিহত সেনা কর্মকর্তাদের পরিচয়ও উদ্ধার করা হয়েছে। তারা হলেন কর্নেল মায়ো মিন কো কো, লেফটেন্যান্ট কর্নেল ফিও দু অং ও মেজর সো হাতওয়ে।

আরও পড়ুন: 

৫৫০তম লাইট ইনফ্যান্ট্রি বিভাগের হেডকোয়ার্টার দখলের পশাপাশি সেখান থেকে বিপুল পরিমাণ অস্ত্রশস্ত্র, গোলাবারুদ, সামরিক সরঞ্জাম ও কয়েকটি সাঁজোয়া যান জব্দ করেছে আরাকান আর্মি। সেই সঙ্গে পোন্নাজ্ঞিয়ুন শহরকে মুক্ত অঞ্চল ঘোষণা করেছে গোষ্ঠীটি।

রাখাইনের রাজধানী সিতওয়ে থেকে পোন্নাজ্ঞিয়ুনের দূরত্ব মাত্র ৩৩ কিলোমিটার। পোন্নাজ্ঞিয়ুনের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার আগে সিতওয়ের নিকটবর্তী পাউকতাও শহরও দখল করে আরাকান আর্মি।

২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সামরিক সরকার ক্ষমতা দখলের পর থেকেই উত্তেজনা চলতে থাকলেও এতোটা কোনঠাসা পরিস্থিতিতে সেনাবাহিনীকে এর আগে আর পড়তে হয়নি। গত বছরের অক্টোবরে জাতিগত বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর আক্রমণ শুরু হওয়ার পর থেকে সামরিক টহল চৌকি, অস্ত্রাগার ও বেশ কিছু শহরের নিয়ন্ত্রণ চলে গেছে বিদ্রোহীদের হাতে।

সবশেষ ঘুমধুম সীমান্তে বিদ্রোহীদের আক্রমণের মুখে মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর অনেক সদস্য বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নিয়েছে, যাদের অনেকেই আহত। শুধু বাংলাদেশ নয়, প্রতিবেশী আরও দুটি দেশ চীন ও ভারতেও আশ্রয় নেয় মিয়ানমারের সেনারা। এ ধরনের জয় বিদ্রোহী অন্য গোষ্ঠীগুলোকেও সামরিক বাহিনীর উপর আক্রমণে উৎসাহিত করেছে।

আরও পড়ুন: 

মিয়ানমার ন্যাশনাল ডিফেন্স অ্যালায়েন্স-এমএনডিএএ, আরাকান আর্মি এবং তাং ন্যাশনাল লিবারেশন আর্মি যৌথভাবে থ্রি ব্রাদারহুড অ্যালায়েন্স নামে পরিচিত। তারা জানুয়ারিতে উত্তরাঞ্চলের শান রাজ্য থেকে সামরিক বাহিনীকে বিতাড়িত করেছে।

ধারণা করা হয়েছিল যে, এর পাল্টা অভিযান চালানো হবে। কিন্তু সেটি এখনো হয়নি। এই রাজ্যে বেশ কয়েকজন জেনারেল-সহ সেনারা আত্মসমর্পণ করেছে এবং বর্তমানে একটি ভঙ্গুর অস্ত্রবিরতি চলছে।

আঞ্চলিক পর্যবেক্ষকরা বলছেন, সামরিক বাহিনীর জন্য এটা শুধু এখন একটি পরাজয় নয়, বরং এটা ইঙ্গিত দিচ্ছে যে, জনপ্রিয়তা হারিয়ে সামরিক বাহিনীর দিন ফুরিয়ে আসছে।

সূত্র: ইরাবতী

এসএএইচ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।