তিস্তার পানি নিয়ে নানক বললেন, ভারতের নির্বাচনটা শেষ হতে দেন
দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে কী ধরনের সম্পর্ক থাকতে পারে ভারত-বাংলাদেশ তার রোল মডেল বলে মন্তব্য করেছেন
বাংলাদেশের বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানক। তিনি বলেছেন, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা দুই দেশের সম্পর্ককে যেভাবে মজবুত করেছেন, তা অটুট থাকবে। আমরা এই সম্পর্কে আরও সামনে এগিয়ে নিয়ে যাবো।
শুক্রবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) কলকাতার নিউটাউনের একটা পাঁচ তারকা হোটেলে ‘ইন্দো বাংলা ফ্রেন্ডশিপ অ্যাসোসিয়েশনের’ (আইবিএফএ) উদ্যোগে আয়োজিত ‘ভারত বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক’ শীর্ষক আলোচনায় অংশ নিয়ে এসব কথা বলেন পাটমন্ত্রী।
ভিসা জটিলতা প্রসঙ্গে নানক বলেন, বাংলাদেশ থেকে বহু মানুষ ভারতে আসে বিভিন্ন কারণে। সে কারণে ভিসা প্রক্রিয়া সহজ করা উচিত। ভিসা প্রদানের মেয়াদও বাড়ানো উচিত। নাহলে মানুষের ভোগান্তি হয়। আমি আশাবাদী, ভারতের সরকার সংশ্লিষ্টরা বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখবেন। আমরাও সরকারের বিভিন্ন স্তরে কথা বলে এই বিষয়ের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করেছি।
আরও পড়ুন>>
- ভারত-বাংলাদেশের ভিসা আরও সহজ হওয়া উচিত: হর্ষবর্ধন শ্রিংলা
- পশ্চিমবঙ্গে যথাযথ মর্যাদায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালিত
- ভারতে পি কে হালদারের বিচারে যে কারণে বিলম্ব
এদিন তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তি নিয়ে বলতে গিয়ে পাটমন্ত্রী বলেন, একটু অপেক্ষা করুন, ভারতের নির্বাচন শেষ হতে দেন।
এদিন ত্রিপাক্ষিক আলোচনার মধ্যে দিয়ে আগামী দিনে তিস্তার পানি বণ্টন সমস্যা মিটে যাবে বলে আশাপ্রকাশ করেছেন পশ্চিমবঙ্গ বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার।
দু’দেশের সম্পর্কের কথা বলতে গিয়ে তিনি বলেন, ভারত-বাংলাদেশের কৃষ্টি সংস্কৃতির ঝলক দেখেছি। রবীন্দ্রনাথ আমাদের একসঙ্গে বেঁধে রেখেছেন। বাংলাদেশ প্রতিবেশী রাষ্ট্র, তার জন্মলগ্ন থেকে আমাদের সম্পর্ক অটুট।
সুকান্ত আরও বলেন, আমরা যেমন রুদ্রনীল ঘোষের অভিনয় দেখি, ঠিক তেমনি মোশাররফ করিম, চঞ্চল চৌধুরীর অভিনয়ও দেখি। বাংলাদেশ ভারতের নিকট আত্মীয়। সংস্কৃতির ধারক শুধু এপার বাংলা নয়, ওপর বাংলাও। বাংলাদেশ আমাদের নিকটাত্মীয়।
আরও পড়ুন>>
- তিস্তা সংকট ২০২৬ সালের মধ্যে মিটে যাবে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
- ‘তিস্তা মহাপরিকল্পনা ভারতের জন্য হুমকি, এটি ফালতু কথা’
- তিস্তার উন্নয়নে চীন/ ভারত আপত্তি করলে ভূ-রাজনৈতিক গুরুত্ব বুঝে পদক্ষেপ নেবে বাংলাদেশ
তিস্তার পানি বণ্টন নিয়ে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জীর আপত্তির সমালোচনা করে বিজেপি বিধায়ক স্বপন মজুমদার বলেন, বৃহত্তর স্বার্থে কখনো কখনো ছোট স্বার্থকে ত্যাগ করতে হয়। বাংলাদেশকে আমরা নিজের মনে করি। বাংলাদেশের সুখ-দুঃখের পাশে দাঁড়াতে গিয়ে যদি সাময়িক কিছু ক্ষতি হয়, সেটি স্বীকার করা ভালো।
তিস্তার পানি বণ্টন হোক কিংবা অন্য কোনো বিষয়ে, আগামী দু’বছরের মধ্যেই সব সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে বলে আশাপ্রকাশ করেন এর বিজেপি নেতা। তিনি বলেন, বাংলায় বিজেপি সরকার ক্ষমতায় আসলে তিস্তার পানি বণ্টন, যশোর রোড সম্প্রসারণ- সব সমস্যা সব মিটে যাবে।
এদিনের অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাহাঙ্গীর কবির নানক। বাংলাদেশ থেকে আরও উপস্থিত ছিলেন মির্জা আজম এমপি, সাইফুল আলম চৌধুরী নাদেল, আলাউদ্দিন আহমেদ চৌধুরী নাসিম, মোহিত উর রহমান,সুজিত রায় নন্দী, শেখ ফাজেল ফাহিম, মুসেদ রহমান মুন, দিলীপ কুমার আগরওয়াল, সুমন হালদার,কলকাতার বাংলাদেশের উপ-হাইকমিশনার আন্দালিব ইলিয়াস । অনুষ্ঠানে ভারতের পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন পশ্চিমবঙ্গ বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার, সাবেক পররাষ্ট্র সচিব হর্ষবর্ধন শ্রিংলা, ডা. জিষ্ণু বসু, অগ্নিমিত্রা পাল, রুদ্রনীল ঘোষ, স্বপন মজুমদার, দীপ্তিমান বসু, দেবদত্তা মাঝি।
এর আগে, প্রদীপ প্রজ্জ্বলন মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সূচনা করেন জাহাঙ্গীর কবির নানক, সুকান্ত মজুমদার, হর্ষবর্ধন শ্রিংলাসহ দুই বাংলার প্রতিনিধিরা।
ডিডি/কেএএ