যুদ্ধপরবর্তী গাজার নিয়ন্ত্রণ রাখতে চায় ইসরায়েল
যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজা উপত্যকার ভবিষ্যৎ নিয়ে নতুন একটি পরিকল্পনা প্রকাশ করেছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। বৃহস্পতিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভার কাছে এ পরিকল্পনা উত্থাপন করেন তিনি। খবর টাইমস অব ইসরায়েলের।
নেতানিয়াহুর ওই প্রস্তাবে বলা হয়েছে, যতদিন পর্যন্ত হামাস ও ইসলামিক জিহাদের সামরিক সক্ষমতা নির্মূল করা হবে এবং সব জিম্মিকে ফিরিয়ে আনাসহ অন্যান্য লক্ষ্য অর্জিত না হবে, ততদিন গাজায় যুদ্ধ চলবে। যুদ্ধ শেষে স্থানীয় যেসব কর্মকর্তার সঙ্গে কথিত সন্ত্রাসবাদ সমর্থনকারী দেশ ও গোষ্ঠীর কোনো সম্পর্ক থাকবে না, তারা গাজা পরিচালনা করবেন। তবে ফিলিস্তিন কর্তৃপক্ষকে (পিএ) এতে রাখা হবে কি না, তা এ পরিকল্পনায় স্পষ্ট করা হয়নি।
আরও পড়ুন:
- গাজায় আবাসিক ভবনে ইসরায়েলি হামলায় নিহত ৪০
- জেরুজালেমে গাড়ি লক্ষ্য করে গুলি, নিহত ৩
- রাশিয়াকে ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র দিয়েছে ইরান
- গাজা এখন মৃত্যুকূপ: বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা
এতে আরও বলা হয়, ইসরায়েল ‘মৌলবাদ’ দূরীকরণে সব ধর্মীয়, সামাজিক ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে একটি পোগ্রাম পরিচালনা করবে। তাতে যুক্ত থাকবে আরব দেশগুলোও। গাজাকে সম্পূর্ণভাবে নিরস্ত্রীকরণ করা হবে। এমনকি, নিরাপত্তার স্বার্থে গাজার শাসকদের যে পরিমাণ অস্ত্রের প্রয়োজন সেটিও রাখা হবে না। এসব বিষয় নিশ্চিতের পরেই গাজা পুনর্গঠনের কাজ শুরু করতে দেবে ইসরায়েল।
প্রস্তাবে আরও বলা হয়েছে, গাজায় যাতে কোনো ধরনের সশস্ত্র গোষ্ঠীর উত্থান না ঘটতে পারে, সেজন্য যে কোনো সময় ইসরায়েলি সেনারা সেখানে হামলা চালানোর অধিকার পাবে। গাজা অংশে নিরাপত্তা জোন তৈরি অব্যাহত থাকবে এবং যতদিন পর্যন্ত এ জোনের প্রয়োজনীয়তা থাকবে; ততদিন এটি থাকবে।
প্রস্তাবে বলা হয়, দখলকৃত পশ্চিম তীর থেকে যেন কোনো ধরনের হামলা না চালানো যায়, সেজন্য জর্ডানের পশ্চিমাঞ্চলের স্থল, আকাশ ও সমুদ্রসহ পুরোটির নিয়ন্ত্রণ থাকবে ইসরায়েলের হাতে।
আরও পড়ুন:
- তিন বছরে গড়ালো রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ
- ইসরায়েলের বিরুদ্ধে দফায় দফায় হামলা চালিয়েছে হিজবুল্লাহ
- যুক্তরাষ্ট্রের ভেটোয় বাতিল হলো গাজায় যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব
তবে গাজা উপত্যকার ভবিষ্যৎ নিয়ে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী যে পরিকল্পনা সামনে এনেছেন, তা প্রত্যাখ্যান করেছে ফিলিস্তিন। ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্টের কার্যালয় সূত্রে বলা হয়েছে, নেতানিয়াহু যে প্রস্তাব দিয়েছেন, তাতে ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে ইসরায়েলের দখলদারিত্ব অব্যাহত থাকবে ও এর মাধ্যমে স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব নয়।
ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্টের কার্যালয়ের মুখপাত্র নাবিল আবু রুদেইনাহ বলেন, স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের অংশ থাকবে গাজা। এর রাজধানী হবে জেরুজালেম। এছাড়া অন্য যেকোনো পরিকল্পনা ব্যর্থ হবে। এর বাইরে ভূতাত্ত্বিক পরিবর্তনের যেকোনো ইসরায়েলি প্রচেষ্টা সফল হবে না। এই অঞ্চলে নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা চাইলে ইসরায়েলি হামলা বন্ধ করতে হবে ও স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের স্বীকৃতি দিতে হবে।
সূত্র: টাইমস অব ইসরায়েল
এসএএইচ