‘পুতিনের বড় জয়’
ইউক্রেনের ‘প্রতিরোধের প্রতীক’ আভদিভকা শহর দখলে নিলো রাশিয়া
ইউক্রেনীয় প্রতিরোধের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত আভদিভকা শহরের দখল নিয়েছে রাশিয়া। যুদ্ধ চালানোর মতো গোলাবারুদের অভাব এবং চতুর্দিক থেকে ঘেরাও হওয়া এড়াতে গত শনিবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) শহরটি থেকে সৈন্য ফিরিয়ে নিয়েছে ইউক্রেন। এর ফলে রাশিয়ায় নির্বাচনের আগ মুহূর্তে যুদ্ধের ময়দানে আরও একটি প্রতীকী জয় পেলেন প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।
পূর্ব ইউক্রেনের ডনবাস অঞ্চলের ছোট্ট শিল্প শহর আভদিভকা। ২০১৪ সালে রুশ আগ্রাসন শুরুর পর থেকেই শহরটি ইউক্রেনীয় প্রতিরোধের প্রতীক হয়ে উঠেছিল। ওই বছরের জুলাইয়ে মস্কোপন্থি যোদ্ধারা সাময়িকভাবে আভদিভকার দখল নিয়েছিল। কিন্তু কিছুদিন পরেই ইউক্রেনীয় বাহিনী ফের এর নিয়ন্ত্রণ নেয়।
আরও পড়ুন>>
সাম্প্রতিক লড়াইয়ের আগে আভদিভকায় প্রায় ৩৪ হাজার মানুষ বসবাস করতেন। কিন্তু এখন সেটি প্রায় জনশূন্য এবং বেশিরভাগ ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত বা পরিত্যক্ত।
পুতিনের ‘বড় জয়’
শনিবার আভদিভকার পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে রাশিয়া। এর কয়েক ঘণ্টা আগেই শহরটি থেকে সৈন্য প্রত্যাহারের কথা জানিয়েছিল ইউক্রেন।
রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, রাশিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী সের্গেই শোইগু প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে এই অগ্রগতির কথা জানিয়েছেন।
আরও পড়ুন>>
- রাশিয়ার আক্রমণ থামাতে হলে জমি ছাড়তে হবে ইউক্রেনকে: স্লোভাকিয়া
- পশ্চিমা সহায়তায় টান/ রাশিয়াকে আর কতদিন ঠেকাতে পারবে ইউক্রেন?
ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমকে বলেছেন, ‘আমাদের সামরিক বাহিনী ও যোদ্ধাদের এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ বিজয়ের জন্য অভিনন্দন জানিয়েছেন প্রেসিডেন্ট পুতিন’।
ইউক্রেন যুদ্ধে গত মে মাসের পর থেকে এটিই রাশিয়ার সবচেয়ে বড় জয় বলে মনে করা হচ্ছে।
মিত্রদের দুষছে কিয়েভ
কেবল গোলাবারুদের ঘাটতির কারণেই আভদিভকা শহর থেকে সৈন্য ফিরিয়ে নিতে হয়েছে বলে দাবি করেছেন ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। আর এই সংকটের জন্য পশ্চিমা মিত্রদের দায়ী করেছেন তিনি। জেলেনস্কির দাবি, ইউরোপে ‘বিপর্যয়কর’ পরিস্থিতি এড়াতে চাইলে ইউক্রেনকে দ্রুত সামরিক সহায়তা দেওয়া উচিত।
জার্মানিতে একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলনে অংশ নিয়ে ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট বলেন, ইউক্রেনে ‘অস্ত্রের কৃত্রিম ঘাটতি’ কেবল রাশিয়াকেই সাহায্য করবে।
আরও পড়ুন>>
- ইউক্রেনের সহায়তা তহবিল আটকে দিলো মার্কিন সিনেট
- সাহায্য না পেয়ে `গোসসা' করেছেন জেলেনস্কি, মার্কিন সিনেটে ভাষণ বাতিল
কিয়েভকে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক সহায়তা দেওয়ার বিষয়টি কয়েক মাস ধরে মার্কিন কংগ্রেসে আটকে রয়েছে। এর ফলে ইউক্রেনের গোলাবারুদের ঘাটতি আরও তীব্র হয়েছে।
রণক্ষেত্রে পিছু হটার কথা স্বীকার করে মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলনে জেলেনস্কি বলেন, ‘কেবল শক্তির পর্যাপ্ততার’ কারণেই ইউক্রেনের প্রচেষ্টা সীমাবদ্ধ হয়ে পড়েছে।
ইউক্রেনের পাশে না দাঁড়ালে ভবিষ্যতে পুতিন পশ্চিমের অন্য দেশগুলোতেও ‘বিপর্যয়কর’ পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে পারেন বলে সতর্ক করেন ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট। তিনি বলেন, যুদ্ধ কখন শেষ হবে ইউক্রেনকে জিজ্ঞেস করবেন না। নিজেদের জিজ্ঞেস করুন, কেন পুতিন এখনো এটি চালিয়ে যেতে পারছেন?
সূত্র: এএফপি, বিবিসি, এনডিটিভি
কেএএ/