বিশ্বে ম্যালেরিয়ার প্রথম গণটিকাদান শুরু করলো ক্যামেরুন

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৯:৩০ পিএম, ২২ জানুয়ারি ২০২৪
ছবি: সংগৃহীত

বিশ্বে প্রথমবারের মতো মশাবাহিত সংক্রামক ও প্রাণঘাতী ব্যাধি ম্যালেরিয়ার গণটিকা দিতে শুরু করেছে মধ্য-আফ্রিকার দেশ ক্যামেরুন। সোমবার (২২ জানুয়ারি) দেশটির রাজধানী ইয়াউন্দের একটি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ড্যানিয়েলা নামের এক শিশুকে প্রথম ডোজের টিকা দেওয়ার মাধ্যমে এই কর্মসূচির উদ্বোধন করা হয়।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) মতে, বিশ্বে ম্যালেরিয়া রোগে যত মানুষের মৃত্যু ঘটে তার ৯৫ শতাংশ ঘটে আফ্রিকায়। এই মহাদেশে প্রতি বছর প্রায় ৬ লাখ মানুষ মারা যায় ম্যালেরিয়ায়। এই প্রাণহানির অন্তত ৮০ শতাংশই পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশু।

ডব্লিউএইচও আরও জানিয়েছে, ক্যামেরুনে প্রতি বছর প্রায় ৬০ লাখ ম্যালেরিয়া রোগীর তথ্য রেকর্ড করা হয়। তাদের মধ্যে চিকিৎসাকেন্দ্রেই মারা যায় অন্তত ৪ হাজার, যাদের বেশিরভাগই পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশু। আশা করা হচ্ছে, এই গণটিকা কর্মসূচি আফ্রিকাজুড়ে হাজার হাজার শিশুর জীবন বাঁচাবে।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি বলছে, ক্যামেরুন ছয় মাস বয়স পর্যন্ত সব শিশুকে বিনামূল্যে ম্যালেরিয়ার আরটিএস,এস ভ্যাকসিন দিচ্ছে। একজন রোগীকে মোট চারটি ডোজ টিকা নিতে হয়। মার্কিন গবেষকদের তথ্যানুযায়ী, ম্যালেরিয়ার এই টিকা অন্তত ৩৬ শতাংশ ক্ষেত্রে কার্যকর। অর্থাৎ, এই টিকা প্রত্যেক তিনজনের মধ্যে একজনের জীবন বাঁচাতে সক্ষম।

আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলোর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিশ্বে ক্যামেরুন প্রথম দেশ, যারা নিয়মিতভাবে শিশুদের ম্যালেরিয়ার এই টিকা দেবে। চলতি বছর ও আগামী বছর প্রায় আড়াই লাখ শিশুকে ম্যালেরিয়ার টিকা দেওয়ার আশা করছে। দেশটির স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা এই কর্মসূচিকে আফ্রিকা মহাদেশে মশাবাহিত রোগ নিয়ন্ত্রণে কয়েক দশকের দীর্ঘ প্রচেষ্টার একটি মাইলফলক হিসেবে বর্ণনা করেছেন।

ভ্যাকসিন ব্যবস্থাপনার বৈশ্বিক জোট গ্লোবাল অ্যালায়েন্স ফর ভ্যাকসিন ইনিশিয়েটিভের (গ্যাভি) তথ্যমতে, ঘানা ও কেনিয়ায় সফল পরীক্ষার পরে, ক্যামেরুন হলো প্রথম দেশ যারা ম্যালেরিয়ার নিয়মিত টিকা কর্মসূচি শুরু করেছে। চলতি বছরে আফ্রিকার আরও ১৯টি দেশে এই কর্মসূচি চালু করা হবে। এই দেশগুলোর প্রায় ৬৬ লাখ শিশুকে ২০২৪-২৫ সালের মধ্যে ম্যালেরিয়ার টিকা দেওয়ার লক্ষ্য নেওয়া হয়েছে।

ক্যামেরুন সম্প্রতি অনুমোদিত ম্যালেরিয়ার দুটি টিকার মধ্যে প্রথমটি ব্যবহার করবে, যা ‘মসকিউরিক্স’ নামে পরিচিত। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা দুই বছর আগে এই টিকা অনুমোদন করেছিল। সংস্থাটির মতে, টিকাটির প্রভাব যদিও অসম্পূর্ণ, তবু এর ব্যবহার নাটকীয়ভাবে গুরুতর সংক্রমণ ও হাসপাতালে ভর্তির সংখ্যা কমিয়ে দেবে।

যুক্তরাজ্যের বিখ্যাত ওষুধ প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান জিএসকে প্রায় ৩০ বছর ধরে গবেষণা চালিয়ে আরটিএস,এস ভ্যাকসিন তৈরি করেছে। কেনিয়া, ঘানা ও মালাবিতে সফল পরীক্ষা চালানোর পর ক্যামরুনে ম্যালেরিয়ার এই ভ্যাকসিনের প্রয়োগ শুরু হয়েছে।

সূত্র: বিবিসি, এবিসি

এসএএইচ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।