মণিপুরে নতুন করে সহিংসতা, ২ কমান্ডো নিহত

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৪:২০ এএম, ১৯ জানুয়ারি ২০২৪
ফাইল ছবি

ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় মণিপুর রাজ্যের পুলিশ বলছে নিরাপত্তা বাহিনীর ওপর হামলার দুটি পৃথক ঘটনায় দুজন পুলিশ কমান্ডো নিহত ও তিনজন বিএসএফ সদস্যসহ মোট নয়জন নিরাপত্তারক্ষী আহত হয়েছেন।

প্রথম ঘটনায় ভারত-মিয়ানমার সীমান্তের শহর মোরেতে হামলাকারীরা বন্দুক ও বিস্ফোরক নিয়ে মণিপুর রাইফেলসের একটি দলকে আক্রমণ করে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

ওয়াংখেম সমরজিৎ মেইতেই ও থাকেলাম্বাম শিলেশ্বর নামে দুই পুলিশ কর্মী নিহত হন ওই ঘটনায়, তাদের এক্স (সাবেক টুইটার) হ্যান্ডেলে জানিয়েছে মণিপুর পুলিশ।

তারা বলছে, ওই হামলায় ইন্ডিয়া রিজার্ভ ব্যাটালিয়নের ছয়জন সদস্যও আহত হয়েছেন।

এ দুজন নিহত নিরাপত্তারক্ষীর মধ্যে থাকেলাম্বাম শিলেশ্বরের মৃত্যু হয়েছে বুধবার রাতে, এমনটাই জানিয়েছে সংবাদ সংস্থা পিটিআই।

পুলিশ সূত্রগুলো জানিয়েছে মোরে শহরের হামলায় রকেট চালিত গোলাও ছোড়া হয়েছিল বাহিনীর দিকে।

দ্বিতীয় ঘটনাটি থৌবাল জেলার। বুধবার রাতে উত্তেজিত জনতা প্রথমে ইন্ডিয়া রিজার্ভ ব্যাটালিয়নের একটি দলের ওপর হামলা চালায়। সামান্য শক্তি ব্যবহার করে তাদের মোকাবিলা করা হয়।

এরপর এসব জনতা থৌবালে পুলিশ সদর দপ্তরে ঢুকতে চেষ্টা করে। ভিড়ের মধ্যে থেকেই দুষ্কৃতীরা গুলি চালায়, যাতে তিনজন বিএসএফ সদস্য আহত হন।

গত বছর অক্টোবরে এক পুলিশ অফিসারকে হত্যার অভিযোগে দুজনকে গ্রেফতার করার পরই মণিপুরে দুটি জায়গায় পুলিশের ওপর হামলার ঘটনা ঘটলো।

যে দুজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে, তারা দুজনেই কুকি জনজাতি গোষ্ঠীর। ওই গ্রেফতারের পর থেকেই কুকি জনজাতি গোষ্ঠীগুলি বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন।

বুধবারও মোরেতে সে রকমই একটা বিক্ষোভ চলছিল। ওই বিক্ষোভের মধ্যেই রকেট চালিত গোলা ছোড়া হয় নিরাপত্তা বাহিনীর দিকে। ওই গোলা আর অগ্নিসংযোগের ঘটনায় বেশ কয়েকটি বাড়িতে আগুন ধরে যায়।

আগুন নেভাতে মিয়ানমার থেকে দুটি দমকলের গাড়িও চলে আসে বলে স্থানীয় সাংবাদিকরা জানিয়েছেন।

মণিপুরে গত বছর মে মাসের গোড়া থেকে জাতিগত সহিংসতা চলছে সংখ্যাগুরু মেইতেই আর কুকি জনজাতিদের মধ্যে।

ওই সব সহিংসতায় এখন পর্যন্ত অন্তত ২০০ জন মারা গেছেন, আর কয়েক হাজার মানুষ বাড়িছাড়া হয়েছেন।

সংঘর্ষ শুরু হওয়ার পর থেকে পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে দুই গোষ্ঠীর বসবাসের এলাকা সম্পূর্ণ বিভক্ত হয়ে গেছে।

মেইতেই আর কুকিরা কেউই একে অন্যের এলাকায় যান না। মাঝে পাহারা দেয় কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা বাহিনী।

মণিপুরের সংখ্যাগুরু মেইতেই গোষ্ঠী দীর্ঘদিন ধরে তফসিলি উপজাতি বা এসটি তালিকাভুক্ত হওয়ার দাবি জানিয়ে আসছিল।

তাদের বসবাস মূলত ইম্ফল উপত্যকায়। এদিকে পাহাড়ি অঞ্চলে বসবাস করেন যে আদিবাসীরা, তাদের একটা বড় অংশ মূলত কুকি চিন জনগোষ্ঠীর মানুষ।

সেখানে নাগা কুকিরাও যেমন থাকেন কিছু সংখ্যায়, তেমনই আরও অনেক গোষ্ঠী আছে।

মেইতেইরা তফসিলি উপজাতির তকমা পেয়ে গেলে পাহাড়ি অঞ্চলের মানুষ বঞ্চিত হবেন, এই আশঙ্কা ছিলই।

এমএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।