তালেবানকে সন্ত্রাসী সংগঠনের তালিকা থেকে বাদ দিলো কাজাখস্তান
আফগানিস্তানের ক্ষমতায় থাকা তালেবান গোষ্ঠীকে সন্ত্রাসী সংগঠনের তালিকা থেকে বাদ দিয়েছে মধ্য এশিয়ার দেশ কাজাখস্তান। শনিবার (৩০ ডিসেম্বর) এক প্রতিবেদনে তুর্কি বার্তা সংস্থা আনাদোলু এজিন্সির বরাতে এ তথ্য জানায় যুক্তরাজ্যভিত্তিক পর্যবেক্ষণ সংস্থা মিড্ল ইস্ট মনিটর।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শুক্রবার (২৯ ডিসেম্বর) কাজাখ রাষ্ট্রীয় বার্তাসংস্থা কাজিনফর্মকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আইবেক স্মাদিয়ারভ বলেন, জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের রেজুলেশন অনুযায়ী, তালেবান সন্ত্রাসী হিসেবে স্বীকৃত সংগঠনগুলোর তালিকায় নেই। সুতরাং আমরাও তাদের সেটা বলতে পারি না।
আইবেক স্মাদিয়ারভ বলেন, কাজাখস্তান নিয়মিতভাবে প্রজাতন্ত্রে নিষিদ্ধ সন্ত্রাসী সংগঠনগুলোর তালিকা খতিয়ে দেখে থাকে। এই প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে জাতিসংঘের সঙ্গে তাল মিলিয়ে তালেবানকে এই তালিকা থেকে বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এখন জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ ও নিরাপত্তা পরিষদের অনুমোদিত প্রস্তাবের ভিত্তিতে কাজাখস্তান-আফগানিস্তানের মধ্যে ভালো সম্পর্ক গড়ে তোলার চেষ্টা করা হবে।
জানা যায়, কাজাখস্তানের সুপ্রিম কোর্ট ২০০৫ সালে আল-কায়েদা, ইস্ট তুর্কিস্তান ইসলামিক মুভমেন্ট, ইসলামিক মুভমেন্ট অব উজবেকিস্তান ও কুর্দিশ পিপলস কংগ্রেসের মতো আরও কয়েকটি সংগঠনের সঙ্গে তালেবানকেও সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে ঘোষণা করেছিলেন। তবে ২০২১ সালে তালেবান আফগানিস্তানের ক্ষমতা লাভ করার পর দেশটির সঙ্গে আরও ভালো ব্যবসায়িক সম্পর্ক গড়ে তুলেছে কাজাখস্তান।
চলতি বছরের এপ্রিল মাসে অনুষ্ঠিত কাজাখস্তান-আফগানিস্তান ব্যবসায়িক ফোরাম দেশ দুটির মধ্যে আর বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তুলতে সাহায্য করে। সে সময় দেশ দুটির মধ্যে প্রায় ২০০ মিলিয়ন বা ২০ কোটি ডলারের একটি বাণিজ্যিক চুক্তি হয়। তাছাড়া তালেবান ক্ষমতায় আসার পর কাজাখস্তান ও আফগানিস্তানের মধ্যে বার্ষিক বাণিজ্য বেড়ে প্রায় ১ বিলিয়ন বা ১০০ কোটি ডলারে পৌঁছেছে।
এই পদক্ষেপ নিয়ে রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, এই সিদ্ধান্ত কাজাখ ও আফগান কর্তৃপক্ষের সম্পর্কে ইতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। তাছাড়া এর মাধ্যমে আঞ্চলিক নিরাপত্তা বজায় রাখা, সন্ত্রাসবাদ ও মাদক নিয়ন্ত্রণে সফলতা বৃদ্ধির পাশাপাশি পারস্পরিক বিশ্বাসকে শক্তিশালী করে তুলবে।
রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আর বলে, এই পদক্ষেপ আফগানিস্তানকে আন্তর্জাতিক বিচ্ছিন্নতা থেকে বেরিয়ে আসতে এবং বৈশ্বিক রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে বড় ভূমিকা রাখবে। পাশাপাশি আফগান জনগণের জন্য মানবিক সহায়তার নতুন সুযোগ তৈরি করে দেবে।
সূত্র: দ্য আনাদোলু এজেন্সি
এসএএইচ