কলকাতায় মিলছে বাংলাদেশি ভর্তা-ডালের স্বাদ

পশ্চিমবঙ্গ প্রতিনিধি পশ্চিমবঙ্গ প্রতিনিধি কলকাতা
প্রকাশিত: ০৬:০৩ পিএম, ১২ নভেম্বর ২০২৩

আলোর উৎসব দীপাবলিতে কলকাতাবাসীর জন্য আরও একবার বাংলাদেশি খাবারের স্বাদ দিতে শহরে হাজির হয়েছেন শেফ নয়না আফরোজা। এবার তার আয়োজনে থাকছে বাংলাদেশের নানা স্বাদের বাহারি ভর্তা ও ডাল।

শুক্রবার (১০ নভেম্বর) কলকাতায় নিযুক্ত বাংলাদেশের উপ-হাইকমিশনার আন্দালিব ইলিয়াস সস্ত্রীক এই আয়োজনের সূচনা করেন। এ সময় দূতাবাসের সব কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন।

কলকাতার মেয়ে নয়না সেনগুপ্ত, বর্তমানে বাংলাদেশি বধূ নয়না আফরোজ। স্বাভাবিকভাবেই দুই বাংলাকে বেশ ভালোভাবে চেনেন তিনি। বেশ কয়েক বছর ধরে কলকাতার বিভিন্ন নামিদামি রেস্তোরাঁর শেফদের নিয়ে বাংলাদেশি ফুড ফেস্টিভ্যালের আয়োজন করে আসছেন নয়না।

আরও পড়ুন: নির্মাণাধীন টানেলে ধস, ভেতরে আটকা ৪০ শ্রমিক

তবে এবারের দীপাবলিতে নয়না আফরোজ কলকাতা শহরের বিখ্যাত রেস্তোরাঁ ‘সিক্স বালিগঞ্জ প্লেস’র সঙ্গে জোট বেঁধেছেন। রেস্তোরাঁটির সব আউটলেটে এসব খাবার পাওয়া যাবে ১০ থেকে ১৯ নভেম্বর পর্যন্ত।

jagonews24

এবার কলকাতাবাসীর জন্য নয়নার আয়োজনের মূল আকর্ষণ- বিভিন্ন রকমের বাংলাদেশি ভর্তা ও ডাল। এই দুইকে কেন্দ্র করে ‘আমার রসনার বাংলা’ শীর্ষক আয়োজনে ৮ রকমের ভর্তা ও ডালের ৪টি পদ নিয়ে আসছেন তিনি।

ভর্তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- বেগুন-কাঁচা টমেটোর ভর্তা, চিংড়ি ভর্তা, টাকি ভর্তা, তিসি বালাচাও ভর্তা, ডিম কলিজা ভর্তা, পাঠার মাংসের ভর্তা, আলু মিক্সড পোস্ত ভর্তা এবং তিল-বাদামের ভর্তা। বাড়তি রয়েছে মরিচ ভর্তা।

আরও পড়ুন: দীপাবলিতে মেতে উঠেছে পশ্চিমবঙ্গ

এছাড়া ডালের পদের মধ্যে রয়েছে- হাতে মাখা মসুর ডাল, মেহেরপুরের আদলে ঘি-অড়হর ডাল, ইলিশের মাথা দিয়ে মাষকলাইয়ের ডাল ও কলকাতাবাসীর ‍খুব প্রিয় মুগ-খাসী ডাল। জিভে জল আনা এসব তরকারি পরিবেশন হচ্ছে ঢেকিছাঁটা হেতুমারী লাল চালের ভাত দিয়ে। চাইলে কেউ সাদা ভাতও নিতে পারেন।

এই রসনা উৎসব সম্পর্কে সিক্স বালিগঞ্জ প্লেস রেস্তোরার প্রধান শেফ সুশান্ত সেনগুপ্ত বলেন, বাংলাদেশের দুটো বিষয় আমাদের কাছে অত্যন্ত আকর্ষণীয় ও শিক্ষণীয়। প্রথমত, বাঙালি খাবার দ্বিতীয়ত আতিথেয়তা।

‘কালীপুজা ও দীপাবলির কথা ভেবে কলকাতাবাসীর জন্য প্রথম ধাপে রাখা হলো বাংলাদেশের আদলে ডাল ও ভর্তা। সাধারণত কলকাতা শহরবাসী ভর্তার সঙ্গে তেমন একটা অভ্যস্ত নন। তাই এটা একটা চমক ভাবতে পারেন। তাছাড়া আক্ষরিক অর্থে আমরা সৌভাগ্যবান যে, শেফ নয়না আফরোজকে পেয়েছি।’

আরও পড়ুন: কলকাতায় ডেঙ্গুর পর আতঙ্কের নাম ম্যালেরিয়া

উপ-হাইকমিশনার আন্দালিব ইলিয়াস বলেন, শেফ নয়নার রান্না করা খাবার আমি আগেও খেয়েছি। তার রান্নায় শুধু স্বাদ নয়, একটা নস্টালজিক ব্যাপার থাকে। কারণ যতই হোক, এটা বিদেশের মাটি। এখানে বাংলাদেশের স্বাদ পাওয়াটা আমাদের কাছে বাড়তি প্রাপ্তি। পরিবারের কথা মনে পড়ে যায়।

jagonews24

‘নয়নার আরও একটা বিষয় ভালো লাগে। তিনি প্রতিবার নতুন কিছু করেন। আমরা বলি, মাছে-ভাতে বাঙালি। কিন্তু বাংলাদেশি হিসেবে আমি সংযোজন করবো, আমরা ভর্তা-ভাতেও বাঙালি। সেই ভর্তার স্বাদ কলকাতায় ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে, চেনানো হচ্ছে। এটা সত্যিই আমাদের কাছে ভালো লাগার বিষয়।’

নয়না আফরোজ বলেন, কলকাতায় সেই অর্থে অথেনটিক বা খাঁটি বাংলাদেশি খাবার পাওয়া যায় না। বাংলাদেশি খাবার বলে যা চালানো হয়, তার অনেকগুলো বাংলাদেশের তো নয়ই, এমনকি স্বাদেও মেলে না। বাংলাদেশিরা কলকাতায় এলে এটা অবশ্যই বুঝতে পারেন। কিন্তু শহরবাসী এসব জানেন না।

আরও পড়ুন: পশ্চিমবঙ্গে চিকিৎসা নিতে যাওয়া বাংলাদেশি নারীর অস্বাভাবিক মৃত্যু

‘কলকাতা শহরবাসীর সিংহভাগের শিকড় বাংলাদেশে গাঁথা। তারা কোথাও বাংলাদেশের খাবার পাওয়া যায়, শুনলেই সেটার স্বাদ নেওয়ার চেষ্টা করেন। অথচ তারা খাঁটি বাংলাদেশি খাবার পান না। সেই অর্থে বলা যায়, তাদের ঠকানো হচ্ছে।’ নয়নার অভিমত, যে অঞ্চলের রান্না, সেই রান্নার মূল উপাদান সেখানকারই ব্যবহার করতে হবে। তবেই আসল স্বাদ মেলে।

জানা গেছে, খুব শিগগির নয়না নিজেই রেস্তোরাঁ খুলতে চলেছেন। কিন্তু কোথায়? সেই প্রশ্নে, হাসতে হাসতে তার উত্তর, অপেক্ষা করুন, সবকিছুই জানতে পারবেন।

ডিডি/এসএএইচ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।