জাপানে জেগে উঠলো নতুন দ্বীপ
জাপানের প্রশান্ত মহাসাগরীয় উপকূল অঞ্চল ইয়ো জিমায় নতুন একটি দ্বীপ জেগে উঠেছে। জাপানের আবহাওয়া সংস্থা (জেএমএ) জানিয়েছে, সমুদ্রের তলদেশে আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাতের প্রভাবে ৩৩০ ফুট চওড়া, বৃত্তাকার এ দ্বীপ সৃষ্টি হয়েছে। এখনো দ্বীপটির কোনো নাম ঠিক করেনি জাপান কর্তৃপক্ষ।
নতুন শনাক্ত হওয়া এই দ্বীপটি জাপানের মূল ভূখণ্ড থেকে ১২০০ কিলোমিটার দক্ষিণ দিকে ও ইয়ো জিমা থেকে ১ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। এলাকাটি ভূমিকম্পপ্রবণ ও এর আগেও সেখানে নতুন দ্বীপ গড়ে উঠতে দেখা গেছে। কিন্তু প্রতিবারই সেগুলো কয়েক মাসের মধ্যে আবার সমুদ্রে হারিয়ে গেছে।
জাপান টাইমস জানিয়েছে, গত ১ নভেম্বর দ্বীপটিকে শনাক্ত করে জাপানের নৌবাহিনী। তারা দ্বীপটির ছবিও তুলেছে। এতে দেখা যাচ্ছে, ছোট্ট দ্বীপটি তখনো আগ্নেয়গিরির আগুনে পুড়ছে ও এটি থেকে ধোঁয়া বের হচ্ছে।
যে এলাকায় নতুন দ্বীপটি আবিষ্কার হয়েছে, সে এলাকাটিতে গত এক বছর ধরে আগ্নেয়গিরির কার্যকলাপ রেকর্ড করছে জেএমএ। টোকিও বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূমিকম্প গবেষণা ইনস্টিটিউট জানিয়েছে, নতুন দ্বীপ সৃষ্টি হওয়ার মতো শক্তিশালী অগ্ন্যুৎপাতের ঘটনা ঘটে গত মাসের শেষে।
টোকিও বিশ্ববিদ্যালয়ের আগ্নেয়গিরির ইমেরিটাস অধ্যাপক সেটসুয়া নাকাদা জাপান টাইমসকে বলেন, ওই এলাকায় পানির নিচে অনেক দিন ধরেই ম্যাগমা সৃষ্টি হচ্ছিল। যেটি গত ৩০ অক্টোবর ভেসে ওঠে। অগ্নুৎপাত যদি চলতে থাতে তাহলে দ্বীপের আয়তন আরও বাড়তে পারে।
ইউনিভার্সিটি অব টোকিওর গবেষকরা জানিয়েছেন, নবজাতক ওই দ্বীপ ঘিরে জলের রং এই মুহূর্তে ফ্যাকাশে ও চারদিকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে ঝামাপাথর। সচ্ছিদ্র ওই ঝামাপাথর অগ্ন্যুৎপাতে ফলেই সৃষ্টি হয় জানান বিজ্ঞানীরা।
গবেষকরা বলছেন, ওই দ্বীপের নীচে, সমুদ্রগর্ভে কোনো গহ্বর সৃষ্টি হয়নি, ফলে এটি দীর্ঘকাল জলের উপর ভেসে থাকবে। পরবর্তীকালে সেটি ইয়ো জিমার সঙ্গে লেগে যেতে পারে বলেও মনে করছেন গবেষকদের একাংশ।
বিগত কয়েক বছরে জাপান উপকূলের অদূরে, প্রশান্ত মহাগরে এমন একাধিক অগ্ন্যুৎপাতের ঘটনা সামনে এসেছে। এর ফলে লাভা মাটি ফুঁড়ে উপরে উঠে আসে। জলের সংস্পর্শে এসে লাভা, ম্যাগমা, পাথর ও অন্যান্য সামগ্রী দ্রুত কঠিন আকার ধারণ করে।
জাপান সংলগ্ন সমুদ্রগর্ভে এমন লাভা উদগীরণের ঘটনা নতুন নয়। বরং সারা বছর এত অগ্ন্যুৎপাত ঘটে যে, প্রতিবছর ইয়োজিমার উচ্চতা ৩ দশমিক ৩ ফুট করে বাড়ছে। এর আগে, ২১ অক্টোবরও ওই এলাকায় অগ্ন্যুৎপাত ও তার জেরে কম্পনের ঘটনা সামনে আসে। প্রতি দুই মিনিট অন্তর তা অব্যাহত ছিল।
সূত্র: জাপান টাইমস
এসএএইচ