ইসরায়েল-হামাস সংঘাতের বিস্তার ঘটলে পরিণতি হবে ভয়াবহ: সৌদি যুবরাজ
ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের মধ্যে চলমান সংঘাতের বিস্তার ঘটলে তার পরিণতি ভয়াবহ হবে বলে সতর্ক করেছেন সৌদি আরবের যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান। বৃহস্পতিবার (১৯ অক্টোবর) সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাকের সঙ্গে বৈঠকের সময় এমন হুশিয়ারি দেন তিনি।
ইসরায়েলের প্রতি যুক্তরাজ্যের দৃঢ় সমর্থনের অংশ হিসেবে তেলআবিব সফর শেষে সৌদি আরবে যান ঋষি সুনাক।
সৌদি আরবের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা এসপিএর প্রতিবেদন অনুযায়ী, ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীকে যুবরাজ সালমান বলেন, সংঘাতের বিস্তার ঠেকাতে অবিলম্বে সম্ভাব্য সব ধরনের পদক্ষেপ নিতে হবে। এই সংঘাতের যাতে আরও বিস্তার যাতে না ঘটে, তা নিশ্চিত করতে হবে। কারণ এ সংঘাত চলতে থাকলে মধ্যপ্রাচ্যসহ পুরো বিশ্বের নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতার জন্য এর পরিণতি হবে বিপজ্জনক।
আরও পড়ুন: ইরাকে মার্কিন সেনা ঘাঁটিতে কয়েক দফায় রকেট হামলা
প্রিন্স সালমান আরও বলেন, ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় ইসরায়েল যেভাবে নির্বিচার হামলা চালাচ্ছে, তা স্পষ্টতই ‘গর্হিত অপরাধ’। গাজার বেসামরিক নাগরিকদের ওপর ইসরায়েলের বোমা বর্ষণকে পাশবিক হামলা হিসেবে বিবেচনা করছে সৌদি আরব। একই সঙ্গে গাজায় এসব নিরীহ মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিতের ওপর জোর দেন সৌদি যুবরাজ।
এদিকে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের বিবৃতি অনুযায়ী, ইসরায়েল ও গাজায় গত দুই সপ্তাহ ধরে অসংখ্য নিরীহ মানুষের প্রাণহানি যে ভয়ংকর এক ঘটনা এ ব্যাপারে দুই রাষ্ট্রনেতা একমত হয়েছেন। এছাড়া অবরুদ্ধ গাজায় পানি-খাবার ও ওষুধের মতো জরুরি পণ্য পৌঁছানোর বিষয়েও জোরারোপ করেছেন তারা।
টানা দুই সপ্তাহ ধরে গাজা উপত্যকায় বিমান হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। এমনকি, ইসরায়েলের পূর্ণ অবরোধ আরোপের ফলে বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন গাজা বর্তমানে ভয়ানক মানবিক সংকটের সম্মুখীন হয়েছে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ভূখণ্ডটিতে পানি, খাবার, জ্বালানি ও চিকিৎসা সরঞ্জামের মজুত শেষ হয়ে যাচ্ছে।
আরও পড়ুন: হামাসকে রাশিয়ার সঙ্গে তুলনা করলেন বাইডেন
মুসলিমদের তৃতীয় পবিত্র ধর্মীয় স্থান আল-আকসা মসজিদের পবিত্রতা লঙ্ঘন ও অবৈধ বসতি স্থাপনকারীদের অত্যাচারের জবাব দিতে গত ৭ অক্টোবর ‘অপারেশন আল-আকসা ফ্লাড’ নামের একটি অভিযান চালায় হামাস। হামাসের ওই অভিযানে কার্যত বাকরুদ্ধ হয়ে পড়ে ইসরায়েল।
হামাস যোদ্ধারা ইসরায়েলে ঢুকে হামলা চালালে কমপক্ষে ১৪০০ ইসরায়েলি নিহত হয়। নিহতদের মধ্যে ২৮৬ জন সেনাসদস্য রয়েছে বলেও আনুষ্ঠানিকভাবে নিশ্চিত করেছে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী। তাছাড়া হামাসের হামলায় আহত হয়েছেন প্রায় সাড়ে ৪ হাজার ইসরায়েলি। এছাড়া ১৯৯ জনকে ইসরায়েল থেকে জিম্মি গাজায় নিয়ে গেছে হামাস।
আরও পড়ুন: ইরাকে মার্কিন সেনা ঘাঁটিতে কয়েক দফায় রকেট হামলা
পরে প্রতিশোধ হিসেবে গাজায় পাল্টা বিমান হামলা শুরু করে ইসরায়েল। গত ৭ অক্টোবর থেকে ইসরায়েলি বিমান হামলা ও অভিযানে অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় নিহত ফিলিস্তিনিদের সংখ্যা বেড়ে ৩ হাজার ৮০৮ জনে পৌঁছেছে। তাছাড়া আহত হয়েছেন ১২ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি।
সূত্র: আনাদোলু এজেন্সি, আল জাজিরা
এসএএইচ