জলপাইগুড়িতে পানির স্রোতে ভেসে আসছে মরদেহ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ০১:১৭ পিএম, ০৫ অক্টোবর ২০২৩
ছবি সংগৃহীত

সিকিমে তিস্তার ধ্বংসলীলায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন। পাহাড়ি ঢলের কারণে পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জেলাও প্লাবিত হচ্ছে। পানিতে ভেসে গেছে ঘর-বাড়ি। আতঙ্কে দিন কাটছে মানুষের। এর মধ্যেই জলপাইগুড়িতে পানির স্রোতের সঙ্গে একাধিক মরদেহ ভেসে আসতে দেখা গেছে।

স্থানীয়রা জানিয়েছেন, তিস্তার পানির স্রোতে ভেসে আসছে মরদেহ, জামাকাপড়, বাসনপত্র, গবাদি পশু, রান্নার গ্যাসের সিলিন্ডারসহ বিভিন্ন জিনিসপত্র। এসব দেখে সাধারণ মানুষ আরও আতঙ্কিত হয়ে পড়ছে।

আরও পড়ুন: তিস্তার ধ্বংসলীলায় বিপর্যস্ত সিকিম, সেনাসহ নিখোঁজ শতাধিক

জলপাইগুড়ির তিস্তা রেল সেতুর কাছেও পানি বেড়ে গেছে। সমতলে তিস্তার দু’পার থেকে অন্তত পাঁচ হাজার বাসিন্দাকে উদ্ধার করেছে প্রশাসন। জলপাইগুড়ি এবং কোচবিহার মিলিয়ে খোলা হয়েছে ২৮টি ত্রাণশিবির।

জলপাইগুড়ির গজলডোবা এলাকায় এক নারীসহ তিনটি মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, সিকিম বা রাজ্যের পাহাড়ি এলাকা থেকে ভেসে এসেছে এসব মরদেহ। জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর চারটি দল শিলিগুড়ি এবং জলপাইগুড়ি জেলায় উদ্ধারকাজের জন্য এসেছে। রয়েছে রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলার আরও সাতটি দল।

বুধবার (৪ অক্টোবর) ভোরে ভারী বৃষ্টির জেরে লোনক হ্রদের পানি প্রবল বেগে ছুটে আসে তিস্তায়। ফলে সিকিমে আকস্মিক বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়। যতই সময় যাচ্ছে সেখানকার পরিস্থিতি আরও খারাপ হচ্ছে। এখন পর্যন্ত সেখানে ১৪ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। সিকিমের সরকারি সূত্র অনুযায়ী, এখনও ২২ জন সেনাসহ অন্তত ১২০ জন নিখোঁজ রয়েছে।

স্থানীয় কর্মকর্তারা আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন যে মৃত্যুর সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। বুধবার সকালে ২৩ সেনা নিখোঁজ হয়। তাদের মধ্যে এখন পর্যন্ত একজনকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। উদ্ধার হওয়া ওই সেনার শারীরিক অবস্থা আপাতত স্থিতিশীল বলে সেনা সূত্র নিশ্চিত করেছে। এক সরকারি কর্মকর্তা বলেন, ১৪টির মতো ব্রীজ ধসে পড়েছে। এছাড়া রাজ্যের বিভিন্ন স্থানে আটকা পড়েছেন তিন হাজারের বেশি পর্যটক।

jagonews24.com

উত্তর সিকিমের লোনাক হ্রদের ওপর ভারীর বৃষ্টির কারণেই এই বিপর্যয় ঘটেছে। এদিকে আকস্মিক বন্যার পানির স্রোতে সিকিমের চুংথাম বাঁধ ভেঙে গেছে। সে কারণেই অস্বাভাবিক ভাবে বেড়ে গেছে তিস্তার পানি। নদীর তাণ্ডবে আশপাশের এলাকা পরিণত হয়েছে ধ্বংসস্তূপে। পূজার আগে সিকিমের এই বিপর্যয়ের কারণে সেখানে ঘুরতে যাওয়া বহু পর্যটক আটকে পড়েছেন প্রতিবেশী রাজ্যে।

পশ্চিমবঙ্গের অন্তত দু’হাজার পর্যটক সিকিমে আটকা পড়েছেন বলে জানা গেছে। জাতীয় সড়কে যান চলাচলও বন্ধ রয়েছে। ফলে আপাতত ফেরার পথও বন্ধ। রাজ্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে সিকিম সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করে তাদের উদ্ধারের চেষ্টা চালানো হচ্ছে।

আরও পড়ুন: সিকিমে আকস্মিক বন্যায় ১০ জনের মৃত্যু

কাদা-মাটিতে চাপা পড়েছে বহু বসতি, রাস্তাঘাট, সেনাছাউনি। পরিস্থিতি জরিপ করে আগামী ৮ অক্টোবর পর্যন্ত পাকিয়ং, গ্যাংটক, নামচি এবং মঙ্গনের সব স্কুল বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। চালু করা হয়েছে একাধিক জরুরি পরিষেবার নম্বর।

এদিকে তিস্তার পানি বেড়ে যাওয়ায় বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলের মানুষের মধ্যেও আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। বুধবার তিস্তা নদীর পানি দ্রুত বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ২৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হতে শুরু করে। তবে রাত ১০টায় তিস্তার পানি কমে গিয়ে বিপৎসীমার ১০ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানি নিয়ন্ত্রণের ব্যারাজের ৪৪টি গেট খুলে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

টিটিএন

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।