জার্মানিতে অভিবাসন নীতি নিয়ে বাড়ছে অসন্তোষ
জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎস শনিবার প্রকাশিত এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, বার্লিন সীমান্ত নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে অনিয়মিত অভিবাসন আটকাতে চায়।
জার্মানিতে অভিবাসন নীতি নিয়ে অসন্তোষ বেড়েই চলেছে ৷ সম্প্রতি পোল্যান্ডের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ভিসা দেওয়ার বিনিময়ে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ ওঠে। যদিও দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, ভিসার বিনিময়ে কর্মকর্তাদের ঘুষ নেওয়ার দাবি প্রত্যাখ্যান করেছে। কিন্তু ওয়ারশ থেকে আসা ব্যাখ্যায় ইইউ সন্তুষ্ট নয়। এরপরই জার্মান ব্রডকাস্ট নেটওয়ার্ক রেডাকসিওননেটভের্ক ডয়েচলান্ডে শলৎসের এই মন্তব্য তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।
চ্যান্সেলর বলেন, এই মুহূর্তে জার্মানিতে আসতে চাওয়া শরণার্থীর সংখ্যা অনেক বেশি। তিনি আরও বলেন, ৭০ শতাংশের বেশি শরণার্থীর আগে কোনো নিবন্ধন হয়নি। তারা প্রায় সবাই ইইউয়ের অন্যান্য দেশে ছিল।
চ্যান্সেলর জার্মানির সব রাজ্যজুড়ে পৌরসভাগুলোর জন্য একটি স্থায়ী ব্যবস্থা শুরু করতে চান।
তিনি বলে, নভেম্বরে জার্মান রাজ্যগুলোর প্রধানদের সঙ্গে বৈঠকের পরিকল্পনা আছে। তখন তিনি ফ্লেক্সিবল ক্যাপ নিয়ে আলোচনা করবেন। যাতে শরণার্থীদের আশ্রয়-সংখ্যার ভিত্তিতে রাজ্যগুলোকে অর্থায়নের প্রস্তাব দেওয়া যায়।
তার কথায়, বার্লিন ওয়ারশকে নিশ্চিত করতে বলেছে, শরণার্থীদের কাছে সহজে জার্মানি আসার ভিসা যেন বিক্রি করা না হয়।
শলৎস বলেন, ইউরোপীয় ইউনিয়নে অনিয়মিত অভিবাসন বন্ধ করার বিষয়ে এই সরকার সম্পূর্ণ চুক্তিবদ্ধ। যা শুধু সংহতির মাধ্যমে করা যেতে পারে। জার্মানি সাহায্য করার জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা করবে।
বার্লিন সম্প্রতি প্রতিবেশী পোল্যান্ড ও চেক প্রজাতন্ত্রের সঙ্গে সীমান্ত নজরদারির ঘোষণা করেছে। চলতি বছরে আশ্রয় আবেদন প্রায় ৮০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। তিনটি দেশই আনুষ্ঠানিকভাবে শেনজেন সাধারণ ভিসা এলাকার অংশ, যেখানে মানুষ দীর্ঘদিন ধরে কঠোর নজরদারি ছাড়াই সীমান্ত পেরোতে পারেন।
শলৎসের ওপর ক্রমশ চাপ বাড়ছে। কারণ অতি-ডান, অভিবাসীবিরোধী অল্টারনেটিভ ফর জার্মানি (এএফডি) পার্টি জনপ্রিয়তা পাচ্ছে। এদিকে তার দল সোশ্যাল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এসপিডি), তার জোটের অংশীদারদের ক্ষেত্রে উল্টোটাই হচ্ছে।
২০২৩ সালে জার্মানিতে প্রায় এক লাখ ৭৫ হাজার জন আশ্রয়ের আবেদন করেছেন। তবে এদের মধ্যে ইউক্রেনীয়রা নেই। জার্মানি ১০ লাখেরও বেশি ইউক্রেনীয় শরণার্থীকে আশ্রয় দিয়েছে।
২০১৫ সালে লাখো সিরীয় তাদের গৃহযুদ্ধ থেকে পালিয়ে এসেছিল। তখন ইউরোপীয় ইউনিয়নে অভিবাসী সংকটের সময় জার্মানিতে ১০ লাখ শরণার্থী এসেছিলেন।
এদিকে, জার্মান সরকার প্রায় ২০ লাখ শূন্যপদ পূরণের জন্য অভিবাসীদের আনতে চায়। জুন মাসে স্কিলড ওয়ার্ক ইমিগ্রেশন ল আইনটি সংস্কারের পক্ষে ভোট দিয়েছেন জার্মান আইনপ্রণেতারা।
সূত্র: ডয়েচে ভেলে
এমএসএম