বিশ্বের ‘সবচেয়ে দূরপাল্লার’ ড্রোন উন্মোচন করলো ইরান
বিশ্বের ‘সবচেয়ে দূরপাল্লার’ ড্রোন প্রকাশ্যে এনেছে ইরান। একইসঙ্গে ব্যালিস্টিক ও হাইপারসনিক মিসাইলও প্রদর্শন করে প্যারেডে করেছে তেহরান। প্রতিবেশী দেশ ইরাকের সঙ্গে ইরানের ১৯৮০- এর দশকের যুদ্ধ বার্ষিকীতে এসব অস্ত্র প্রদর্শন করে মধ্যপ্রাচ্যের এ দেশ।
ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শুক্রবারের (২২ সেপ্টেম্বর) প্যারেডে ওই ড্রোন প্রথমবারের মতো উন্মোচন করা হয়। প্যারেডে প্রদর্শিত অন্য ড্রোনগুলো হলো মোহাজের, শাহেদ ও আরশ।
আরও পড়ুন: ‘অনুপযুক্ত পোশাক’ পরলে ১০ বছরের জেল, ইরানে বিল পাস
ইরানের সামরিক সূত্রগুলো জানিয়েছে, এ ড্রোন একইসঙ্গে কয়েকটি লক্ষ্যবস্তুকে চিহ্নিত করে একই সময়ে আঘাত হানতে সক্ষম। স্থিতিশীল লক্ষ্যবস্তুর পাশাপাশি চলমান লক্ষ্যবস্তুতেও আঘাত হানতে পারে এই ড্রোন।
অবশ্য গত মাসে ইরান জানিয়েছিল, তারা ‘মোহাজের-১০’ নামের নতুন একটি ড্রোন উন্মোচন করেছে। ড্রোনটি মোহাজের-৬ এর একটি উন্নত সংস্করণ। এটি উন্নত অস্ত্র ধারণের পাশাপাশি অধিকতর উচ্চতায় দীর্ঘ সময়ের জন্য উড়তে পারে।
ইরানের সরকারি বার্তা সংস্থা ইরনা জানিয়েছিল, ড্রোনটি ৭ হাজার ফুট উচ্চতায় ও ২ হাজার কিলোমিটারের পরিচালন পরিসীমাসহ সর্বোচ্চ ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত উড়তে পারে। ইরান থেকে ইসরাইলের দূরত্ব প্রায় ২ হাজার কিলোমিটার। যার অর্থ এটি ইসরাইলের লক্ষবস্তুতে আঘাত হানতে সক্ষম।
আরও পড়ুন: হিজাব না পরা নারীদের শনাক্তে ক্যামেরা বসাচ্ছে ইরান
ড্রোনটি ঘণ্টায় ২১০ কিলোমিটার গতিতে ভ্রমণ করতে পারে। এটি সাম্প্রতিক ইলেকট্রনিক ও ইন্টেলিজেন্স ব্যবস্থায় সজ্জিত। পাশাপাশি মনুষ্যবিহীন ড্রোনটি ৩০০ কেজি ওজন পর্যন্ত ভার বহনে সক্ষম, যা আগের মডেলের তুলনায় দ্বিগুণ। ইরানের দাবি, ড্রোনটি সব ধরনের বোমা ও গোলাবারুদ বহনেও সক্ষম।
মার্কিন কর্মকর্তারা ইরানের বিরুদ্ধে ইউক্রেন যুদ্ধে ব্যবহারের জন্য রাশিয়ার কাছে মোহাজের-৬ ড্রোন বিক্রি করার অভিযোগ এনেছে। তবে তেহরান বরাবরই সে অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
রাজধানী তেহরানে শুক্রবারের কুচকাওয়াজে প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি বলেন, আমাদের বাহিনী এ অঞ্চলে ও পারস্য উপসাগরে নিরাপত্তা নিশ্চিত করছে। আমরা এই অঞ্চলের মানুষকে বলতে চাই, প্রতিরোধই এখন টিকে থাকার পথ। একমাত্র প্রতিরোধই শত্রুকে পিছু হটতে বাধ্য করে।
আরও পড়ুন: কোরআন হাতে জাতিসংঘে ইরানের প্রেসিডেন্ট, অবমাননার নিন্দা
১৯৮০ সালের ২২ সেপ্টেম্বর ইরাকের তৎকালীন সাদ্দাম সরকার ইরানে সামরিক আগ্রাসন শুরু করে। প্রায় ৮ বছর ধরে চলা যুদ্ধ ১৯৮৮ সালে জাতিসংঘের মধ্যস্থতায় আলজিয়ার্স চুক্তির মাধ্যমে শেষ হয়। তারপর থেকে প্রতি বছর ইরাকি আগ্রাসন শুরুর দিন থেকে জাতীয় প্রতিরক্ষা সপ্তাহ উদযাপন করে আসছে ইরান।
সূত্র: রয়টার্স, দ্য টাইমস অব ইসরায়েল
এসএএইচ