এবার টিকটককে জরিমানা করলো ইইউ
এবার টিকটককে ৩৪ কোটি ৫০ লাখ ইউরো জরিমানা করেছে আয়ারল্যান্ড-ভিত্তিক ইউরোপীয় ইউনিয়নের নিয়ন্ত্রক সংস্থা ডেটা প্রটেকশন কমিশন (ডিপিসি)। শিশুদের নিরাপত্তাসংক্রান্ত সুরক্ষা দেওয়ার ক্ষেত্রে চীনাভিত্তিক এই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ব্যর্থতার দায়ের কথা উল্লেখ করে এই জরিমানার ঘোষণা দেওয়া হয়। খবর এপির।
ডিপিসি এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, দুই বছর ধরে তদন্তের পর টিকটকের ব্যর্থতার বিষয়টি সামনে আসে। এর আগে গত ১৮ আগস্ট নিরাপত্তাজনিত কারণে সরকারি ডিভাইসে টিকটক নিষিদ্ধ করে নিউইয়র্ক। চীনা টেক জায়ান্ট বাইটড্যান্সের মালিকানাধীন অ্যাপটির ওপর চীনা সরকারের প্রভাব নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই সতর্কতা জানিয়ে আসছেন মার্কিন আইন প্রণেতারা।
আরও পড়ুন: এবার সরকারি ডিভাইসে টিকটক নিষিদ্ধ করলো অস্ট্রেলিয়া
সম্প্রতি নিউইয়র্ক সিটির মেয়র এরিক অ্যাডামসের এক মুখপাত্র বলেন, শহরের প্রযুক্তিগত নেটওয়ার্কের নিরাপত্তার জন্য ক্রমেই হুমকি হয়ে উঠছে টিকটক। এ কারণেই অ্যাপটি ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে।
২০২০ সালে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও টিকটকের নতুন ডাউনলোডে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার চেষ্টা করেন। তবে আদালতের একাধিক রায়ে তা সফল হয়নি। তবে বরাবরই মার্কিন প্রশাসনের এ অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে টিকটক। চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকেও বলা হয়েছে, বিদেশি কোম্পানিগুলোকে চাপে রাখতে ক্ষমতার অপব্যবহার করছে যুক্তরাষ্ট্র।
ভিডিও কন্টেন্ট তৈরি ও শেয়ারিংয়ের দিক দিয়ে টিকটক বর্তমান বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় অ্যাপ। প্রতি মাসে বিশ্বজুড়ে ১০০ কোটিরও বেশি মানুষ অন্তত একবার হলেও অ্যাপটিতে লগইন করেন। আর ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত প্রায় ৩৫০ কোটি বার ডাউনলোড করা হয়েছে এ অ্যাপ। চীনা এই অ্যাপের বিরুদ্ধে অনেকদিন থেকেই তথ্য চুরির অভিযোগ করে আসছে বিভিন্ন সাইবার সিকিউরিটি সংস্থা।
তরুণদের মধ্যে টিকটকের ব্যাপক জনপ্রিয়তা রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রে এর দেড় কোটি এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নে এক কোটি ৩০ লাখের বেশি মানুষ টিকটক ব্যবহার করেন। তবে ইইউ’র জরিমানার বিষয়ে টিকটক বলছে, তারা এর সঙ্গে একমত নয়।
আরও পড়ুন: যুক্তরাষ্ট্রে ২০টির বেশি রাজ্যে সরকারি ডিভাইসে টিকটক নিষিদ্ধ
সম্প্রতি সরকারি কাজে ব্যবহৃত ফোন-ট্যাবের মতো ডিভাইসগুলোতে টিকটক নিষিদ্ধ করেছে অস্ট্রেলিয়াও। এর আগেও নিরাপত্তাজনিত কারণে অনেক দেশেই নিষিদ্ধ হয় এই অ্যাপ।
এদিকে টিকটক নিয়ে ডিপিসি তদন্ত শুরু করেছিল ২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে। টিকটকের বিভিন্ন সেটিংস তদন্ত করে দেখা হয়েছে। ১৮ বছরের কম বয়সীদের ব্যক্তিগত তথ্য সংগ্রহ ও তা ব্যবহারের ক্ষেত্রে সঠিক নিয়ম মেনে চলা হচ্ছে কি না তা খতিয়ে দেখা হয়। এতে দেখা গেছে, কম বয়সীদের ঝুঁকির বিষয়টি যথাযথভাবে মূল্যায়ন করতে ব্যর্থ হয়েছে টিকটক।
টিটিএন