নিপা ভাইরাস
কেরালায় বাড়ছে সংক্রমণ, সতর্কতা জারি
ভারতের দক্ষিণাঞ্চলীয় কেরালা রাজ্যে নিপা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে দুজনের মৃত্যু হয়েছে। দুই সপ্তাহের ব্যবধানে দুজনের মৃত্যুর ঘটনায় ওই রাজ্যে সতর্কতা জারি করা হয়েছে। এর মধ্যে একজনের মৃত্যু হয়েছে চলতি মাসের শুরুর দিকে এবং অপরজন মারা গেছেন গত ৩০ আগস্ট। কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, নিপা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়া দুজনই কোঝিকোড় জেলার বাসিন্দা ছিলেন।
এদিকে নিপা ভাইরাসে মৃত্যু হওয়া একজনের দুই স্বজনের দেহেও এই ভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়েছে। তারা বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। ২০১৮ সালের পর এ নিয়ে চতুর্থ বারের মতো কেরালায় নিপা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে।
আরও পড়ুন: ‘পবিত্র যুদ্ধে’ রাশিয়ার প্রতি পূর্ণ সমর্থনের প্রতিশ্রুতি কিমের
মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী মনসুখ মাণ্ডবীয় জানিয়েছেন, দক্ষিণের এই রাজ্যে নিপা ভাইরাস মোকাবিলায় কেরালা সরকারকে সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে একটি কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিদলও পাঠানো হয়েছে।
মঙ্গলবার সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, কেরালায় নিপা ভাইরাসের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে তা খতিয়ে দেখতে রাজ্য সরকারের সহায়তায় একটি কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিদল পাঠানো হয়েছে।
সংবাদ সংস্থা পিটিআই জানিয়েছে, ৩০ আগস্টের পর সোমবার কেরালার কোঝিকোড়ে একটি বেসরকারি হাসপাতালে দুজনের ‘অস্বাভাবিক’ মৃত্যু হয়। এই ঘটনায় স্বাস্থ্য দফতরের আশঙ্কা ছিল, তারা নিপা ভাইরাসের সংক্রমণে মারা গেছেন।
সোমবার কোঝিকোড় জেলা জুড়ে নিপা ভাইরাস বিষয়ে সতর্কতা জারি করে স্বাস্থ্য দফতর। অন্যদিকে, এই ভাইরাসের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে ইতোমধ্যেই কোঝিকোড়ে একটি কন্ট্রোল রুম খুলেছে কেরালা সরকার।
পুরো পরিস্থিতিতে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য রাজ্যবাসীকে অনুরোধ করেছেন কেরালের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন। মঙ্গলবার তিনি বলেন, এখনই আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। মৃত দুজনের সংস্পর্শে আসা ব্যক্তিদের সন্ধান মিলেছে। তাদের চিকিৎসাও শুরু হয়েছে। এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় সতর্ক থাকাটা জরুরি। এই ভাইরাস মোকাবিলায় স্বাস্থ্য দফতর যে রূপরেখা তৈরি করেছে, তা মেনে চলার জন্য সবার প্রতি অনুরোধ জানান তিনি।
আরও পড়ুন: লিবিয়ায় পাল্লা দিয়ে বাড়ছে লাশের সারি
এর আগেও নিপা ভাইরাসে মৃত্যু দেখেছে কোঝিকোড় এবং মলপ্পুরম জেলা। ২০১৮ সালে এই ভাইরাসের দুই জেলায় ১৭ জনের মৃত্যু হয়। সেই সঙ্গে ১৮ জনের দেহে নিপা ভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়ে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) জানিয়েছে, মানবদেহের পাশাপাশি পশুপাখিদের মধ্যে সংক্রমণ ঘটাতে পারে নিপা ভাইরাস। মূলত বাদুড়ের মাধ্যমে এর সংক্রমণ ঘটে। আক্রান্তদের মধ্যে সাধারণত জ্বর, পেশির ব্যথা, মাথাধরা, ঝিমুনি এবং বমি বমি ভাবের উপসর্গ দেখা দেয়।
টিটিএন