বাংলাদেশ দূতাবাসে চিঠি
ইলিশ আমদানিতে ৬০ দিন সময় চান কলকাতার মাছ ব্যবসায়ীরা
কথায় আছে- মাছে ভাতে বাঙালি। আর সেই মাছ যদি বাংলাদেশের ইলিশ হয় তো আর কথা নয়। যদিও পশ্চিমবঙ্গ তথা ভারতের মাছপ্রিয় বাঙালিদের প্রায় নাগালের বাইরে চলে যেতে বসেছে বাংলাদেশের পদ্মার এই রুপালি ইলিশ।
তবে প্রতিবছর শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে বাংলাদেশের উপহার হিসেবে ইলিশের স্বাদ পায় পশ্চিমবঙ্গসহ সমগ্র ভারতের বাঙালিরা।
গত বছর (২০২২ সালে) দুর্গাপূজার আগে বাংলাদেশ থেকে ২ হাজার ৯০০ টন ইলিশ ভারতে রপ্তানির অনুমতি মেলে। তবে গতবছর ভারতের মাছ আমদানিকারকরা মাত্র এক হাজার ৩০০ টন ইলিশ আমদানি করতে পেরেছিল। ফলে স্বভাবতই গতবছর দুর্গাপূজায় কলকাতার বাজারে বাংলাদেশের এই সুস্বাদু ইলিশের দাম ছিল সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে।
জানা গেছে, ইলিশ রপ্তানিতে গত বছরের মতো পরিস্থিতি এড়াতে এ বছর সময় নিয়েই আসন্ন দুর্গাপূজা উপলক্ষে ইলিশ রপ্তানির অনুমতি দিতে যাচ্ছে বাংলাদেশ সরকারের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। এ খবর পাওয়ার পর ইলিশ আমদানির অনুমোদন পেতে গত ১ সেপ্টেম্বর কলকাতার ফিস ইমপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন কলকাতায় বাংলাদেশের উপ-দূতাবাসে চিঠি দিয়েছে।
এরপর ৪ সেপ্টেম্বর কলকাতায় বাংলাদেশের উপ- হাইকমিশনের প্রথম সচিব (বাণিজ্যিক) শামছুল আরিফ ভারতে ইলিশ মাছ আমদানির অনুমতি চেয়ে বাংলাদেশ সরকারকে একটি চিঠি দেন। ওই চিঠিতে বাংলাদেশ থেকে ইলিশ আমদানির জন্য ৬০ দিন সময় চেয়ে কলকাতার ফিস ইমপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের আবেদনের বিষয় উল্লেখ করা হয়।
এ বিষয়ে কলকাতা ফিস ইমপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আনোয়ার মাকসুদ বলেন, ‘গত বছরের মতো এ বছরও আমরা কলকাতার বাংলাদেশের উপ-হাইকমিশনারের কাছে চিঠি দিয়েছি। আমরা অনুরোধ করেছি যেন ইলিশ আমদানির জন্য আমাদের পর্যাপ্ত সময় দেওয়া হয়। যেমন গতবছর আমরা ২ হাজার ৯০০ টন আমদানির অনুমতি পেয়েছিলাম, কিন্তু সময়ের অভাবে আমরা এক হাজার ৩০০ টন ইলিশ আমদানি করতে সক্ষম হয়েছি।’
তিনি বলেন, ‘এবছর পঞ্চম বছর হবে বাংলাদেশ সরকার দুর্গাপূজা উপলক্ষে আমাদের ইলিশ আমদানির অনুমতি দেবে। বাংলাদেশ সরকারের কাছে আমাদের আবেদন, আপনারা ইলিশ রপ্তানির যে অনুমতি দেবেন সেটা অন্তত দুই মাসের সময় দিয়ে দেওয়া হোক।’ একই সঙ্গে ইলিশ রপ্তানিতে বাংলাদেশ সরকারের যে নিষেধাজ্ঞা আছে, তা স্থায়ীভাবে তুলে দেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
তবে পশ্চিমবঙ্গের বাজারে ইলিশের আমদানি কম বা নিষেধাজ্ঞা অজুহাত মানতে নারাজ সাধারণ ক্রেতারা। কলকাতার পার্শ্ববর্তী শহরাঞ্চলের বাজারে মাছ কিনতে আসা গৌতম দাস বলেন, ‘প্রতিবছরই শুনি বাংলাদেশ থেকে টনকে টন ইলিশ ভারতে আসছে। এত ইলিশ আসলেও সেগুলো যখন কলকাতার বাজারে ওঠে তখন সেই ইলিশ মাছে হাত দেওয়া যায় না দামের জন্য। এবার আশা করবো আরও অধিক হারে ইলিশ কলকাতার বাজারে আসবে। তাহলে আমরা সাধারণ ক্রেতারা এবারের পূজায় বাংলাদেশের সুস্বাদু ইলিশের স্বাদ পাবো।’
এদিকে, এরই মধ্যে বাংলাদেশের ১০০ প্রতিষ্ঠান ইলিশ রপ্তানির অনুমোদন চেয়ে আবেদন করেছে। তবে কী পরিমাণ ইলিশ এ বছর রপ্তানির অনুমোদন দেওয়া হবে সে বিষয়ে এখনো চূড়ান্ত করেনি বাংলাদেশ সরকার।
ডিডি/কেএসআর