দ্য ইকোনমিস্টের প্রতিবেদন

চীনকে মোকাবিলায় এশিয়ার মিত্রদের নিয়ে কাজ করছেন বাইডেন

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৫:০২ পিএম, ২৯ আগস্ট ২০২৩

শক্তিধর দেশগুলোর মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা বাড়ছে জোটকে কেন্দ্র করে। এই জোটের বাস্তবতা কি বা কারা এই প্রতিযোগিতায় জয় পাবে তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। গত মাসে এক্ষেত্রে কিছু বিষয় দৃশ্যমান হয়েছে। একটি হলো চীনের নেতৃত্বে পশ্চিমাদের বিপরীতে উদীয়মান অর্থনীতির দেশগুলো নিয়ে একটি ব্লক তৈরির চেষ্টা। দক্ষিণ আফ্রিকার জোহানেসবার্গে ব্রিকস জোটের ওই সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। অন্যটি হলো যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে পেসিফিক অঞ্চলে। এই দুই উদ্যোগের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছে।

ব্রিকস জোটের সম্মেলনে একত্রিত হয় ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত, চীন ও দক্ষিণ আফ্রিকা। এক্ষেত্রে তাদের মূল লক্ষ্য ছিল সদস্য সংখ্যা বাড়ানো। পাশাপাশি উন্নয়ন ও আর্থিক পেমেন্ট সক্ষমতা বাড়ানোর ক্ষেত্রেও নজর দেওয়া। সম্মেলনে পশ্চিমা বিশ্বের নীতির প্রতি কম ক্ষুধা দেখা গেছে। জোটে আর্জেন্টিনা, ইরান, সৌদি আরবসহ বেশ কিছু দেশকে যোগ দেওয়ার জন্য আহ্বান জানানো হয়েছে। কিন্তু জোটটির লক্ষ্য কার্যকর করার ক্ষেত্রে যে সংগ্রাম করতে হবে তাও দৃশ্যমান হয়েছে।

আরও পড়ুন>বিশ্বে খাদ্যসংকট কি চিরস্থায়ী হচ্ছে?

যেহেতু ব্রিকসে সদস্য সংখ্যা বাড়ছে। তাই আশঙ্কা করা হচ্ছে জোটের মধ্যে উত্তেজনাও বাড়তে পারে। ভারত মনে করছে তাদের অবস্থান ক্রমেই দুর্বল হতে পারে, অন্যদিকে প্রভাব বাড়তে পারে চীনের। তাছাড়া প্রতিরক্ষা সহযোগিতাও প্রশ্নের মুখে। অর্থনীতি ও রাজনীতিতে ভিন্নতা থাকা সত্ত্বেও একই ধরনের অর্থনৈতিক কাঠামো তৈরির চেষ্টাও বিলাসী হতে পারে। তবে তারা সমন্বয়ের মাধ্যমে কাজ করার পাশাপাশি বৈশ্বিক নীতি প্রতিষ্ঠা করতে পারে। এতে তাৎপর্যপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে ব্রিকস। কিন্তু সীমাবদ্ধ হতে পারে ভূমিকা।

অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বেও জোট তৈরি হচ্ছে। ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে ন্যাটো জোট পুনরুজ্জীবিত হয়েছে। এরই মধ্যে জোটের নতুন সদস্য হয়েছে ফিনল্যান্ড। অপেক্ষায় রয়েছে সুইডেন। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন চীনকে মোকাবিলার ক্ষেত্রেও এশিয়ায় কাজ করছেন। সম্প্রতি ক্যাম্প ডেভিড সম্মেলন করেছেন তিনি। এতে উপস্থিত ছিল জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়ার নেতারা। সেখানে তার সামরিক সহযোগিতার ব্যাপারে একমত হয়েছেন। এর আগে ফিলিপাইনও ও পাপুউয়া নিউগিনিতে আরও সামরিক ঘাঁটি ব্যবহারের জন্য চুক্তি করেছেন।

তাছাড়া অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গেও যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক গভীর হচ্ছে। গত মার্চে তাদের মধ্যে অকাস চুক্তি হয়। চীনের সঙ্গে বিরোধিতার ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষেই অস্ট্রেলিয়ার অবস্থান। অস্ট্রেলিয়ার ভূমি, সাগর ও আকাশে মার্কিন সেনাদের উপস্থিতি দিন দিন বাড়ছে। অকাস চুক্তির আওতায় দীর্ঘ পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্রও পাচ্ছে অস্ট্রেলিয়া। পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্র সমৃদ্ধ সাবমেরিনও পাবে দেশটি।

আরও পড়ুন>প্রিগোজিনের শেষকৃত্যে থাকছেন না পুতিন

এসব নিরাপত্তা চুক্তির ফলে বোঝা যাচ্ছে এশিয়ায় মার্কিন প্রভাব কতটা বাড়ছে। বাইডেন প্রমাণ করেছেন যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্ররা চীনকে মোকাবিলা করতে পারে। তবে আরও অনেক পথ পাড়ি দেওয়ার সম্ভাবনা আছে এক্ষেত্রে।

বাইডেনের নেত্বেতে যে জোট তৈরি হচ্ছে সেখানেও কিছু দুর্বলতা রয়েছে। একে অপরকে রক্ষার ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্র ও তাদের মিত্রদের প্রতিশ্রুতিতে ঘাটতি রয়েছে। তাছাড়া জোটের খরচের ব্যাপারে অস্ট্রেলিয়াকে আরও স্পষ্ট হতে হবে। ২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ট্রম্প নির্বাচিত হলেও সমস্যা বাড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

এমএসএম

 

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।