বিশ্লেষকদের মত

পুতিনের বিশ্বাসভঙ্গকারী প্রিগোজিনের এমন মৃত্যু ‘অনিবার্য ছিল’

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৯:১৫ এএম, ২৪ আগস্ট ২০২৩
ছবি সংগৃহীত

প্লেন দুর্ঘটনায় রুশ ভাড়াটে বাহিনী ওয়াগনার গ্রুপের প্রধান ইভজেনি প্রিগোজিনের মৃত্যুর খবরে অবাক নন বিশ্লেষকরা। তাদের মতে, গত জুনে প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বিরুদ্ধে বিদ্রোহের পর ওয়াগনারপ্রধানের এমন পরিণতি ‘অনিবার্য’ হয়ে উঠেছিল। কারণ, পুতিন কখনো বেঈমানদের ক্ষমা করেন না।

যুক্তরাজ্যের গোয়েন্দা সংস্থা এমআই৬-এর রাশিয়া ডেস্কের সাবেক প্রধান ক্রিস্টোফার স্টিল বিবিসি’কে বলেছেন, প্লেন দুর্ঘটনাটি সম্ভবত রুশ নিরাপত্তা ব্যবস্থার উচ্চপদস্থ কারও নির্দেশে সংঘটিত হয়েছে। হয়তো এতে পুতিনের ‘নীরব সম্মতি’ ছিল।

আরও পড়ুন>> প্লেন বিধ্বস্ত হয়ে ওয়াগনার গ্রুপের প্রধান প্রিগোজিন নিহত

ক্রিস্টোফার বলেন, কয়েক সপ্তাহ আগে আমাদের আগে বলা হয়েছিল, রাশিয়ায় ব্যবসায়ী সম্প্রদায়ের জ্যেষ্ঠ ব্যক্তিদের মধ্যে প্রিগোজিনের বিষয়ে একটি চুক্তি হয়েছে। সুতরাং, তার প্রচুর শত্রু ছিল। আসলে রুশ প্রশাসনের ভেতরে প্রিগোজিনের মিত্র ছিল খুবই কম এবং এভাবে (অকাল মৃত্যু) তার শেষ হবে, এটি অনিবার্যই ছিল।

সিআইএ’র সাবেক মস্কো স্টেশন চিফ ড্যানিয়েল হফম্যান বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেছেন, এটি যে পুতিনের নির্দেশে হয়েছে, সে বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই তার।

আরও পড়ুন>> পুতিনের বাবুর্চি থেকে বিদ্রোহের নেতা, কে এই প্রিগোজিন?

হফম্যান বলেছেন, তার বিশ্বাস, গত জুনে ব্যর্থ বিদ্রোহের পরেও প্রিগোজিনকে গ্রেফতার করা হয়নি। কারণ এটি তাকে এক ধরনের ভুল নিরাপত্তাবোধ বা চলাফেরার স্বাধীনতা দিতো, যার মাধ্যমে তাকে নিশানা করা যেতো।

দ্য ইকোনমিস্টের প্রতিরক্ষা সম্পাদক শশাঙ্ক যোশি বলেছেন, বিশ্বাসঘাতকতাকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার ইতিহাস রয়েছে রুশ সরকারের। আর সেটি করা হয় প্রকাশ্যেই।

ব্রিটিশ এমপি অ্যালিসিয়া কার্নস বলেছেন, প্লেন দুর্ঘটনার পর রুশ কর্তৃপক্ষ যে দ্রুততার সঙ্গে প্রিগোজিনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছে, সেটিই ‘আমাদের যা জানা দরকার তা বলে দিচ্ছে’।

আরও পড়ুন>> প্রিগোজিনের মৃত্যুর খবরে ‘আশ্চর্য নন’ বাইডেন

এর আগে, মস্কোর কাছাকাছি প্লেন বিধ্বস্ত হয়ে ওয়াগনার গ্রুপের প্রধান ইয়েভগিনি প্রিগোজিন নিহত হয়েছেন বলে খবর ছড়ায় বিভিন্ন মাধ্যমে। খবরে বলা হয়েছে, রাশিয়ায় একটি প্লেন বিধ্বস্ত হয়ে ১০ আরোহীর সবাই নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে প্রিগোজিনের নাম রয়েছে বলে জানিয়েছে দেশটির কেন্দ্রীয় বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ।

রুশ কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে বিবিসি জানিয়েছে, রাশিয়ার তেভর অঞ্চলে বিধ্বস্ত হওয়া একটি প্লেনের যাত্রীতালিকায় ছিলেন ওয়াগনার গ্রুপের প্রধান প্রিগোজিন। রাশিয়ার জরুরি মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়েছে প্রিগোজিনের ব্যক্তিগত প্লেন কুজেনকিনো গ্রামের কাছে বিধ্বস্ত হয় ও এর সব আরোহী নিহত হয়েছেন।

এদিকে, ওয়াগনারের ঘনিষ্ঠ একটি টেলিগ্রাম চ্যানেল গ্রে জোন জানিয়েছে, মস্কোর উত্তরে টিভের অঞ্চলে প্লেনটিকে গুলি করে ভূপাতিত করা হয়। স্থানীয় বাসিন্দারা দুর্ঘটনার আগে দুটি বিস্ফোরণের মতো শব্দ পান, এরপর ধোঁয়ার দুটি রেখা দেখতে পান।

আরও পড়ুন>> প্রিগোজিনের প্লেন দুর্ঘটনার সময় কোথায় ছিলেন পুতিন?

তবে ওয়াগনারপ্রধানের মৃত্যুর বিষয়টি আরও কোনো বিশ্বস্ত সূত্রে নিশ্চিত হতে না পেরে এ নিয়ে সন্দেহপ্রকাশ করেছেন বিশ্লেষকরা।

গত জুনে রুশ নেতৃত্বের বিরুদ্ধে একটি ব্যর্থ বিদ্রোহের নেতৃত্বে ছিলেন প্রিগোজিন। এরপর একপ্রকার লোকচক্ষুর আড়ালেই চলে যান তিনি। প্রায় এক মাস পরে গত ২০ জুলাই প্রথমবারের মতো ফের জনসম্মুখে আসেন তিনি। এর সপ্তাহ পার হতে না হতেই সামনে এলো প্রিগোজিনের মৃত্যুর খবর।

সূত্র: বিবিসি, আল-জাজিরা
কেএএ/

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।