কোরআন পোড়ানো বন্ধ করতে পুলিশের ক্ষমতা বাড়াচ্ছে সুইডেন
কোরআন পোড়ানো বন্ধ করতে আইন সংশোধন করে পুলিশের ক্ষমতা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সুইডেন সরকার। আর আইন সংশোধন হলে যে কোনো বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিলের অনুমতি পাওয়া, না পাওয়ার বিষয়টি পুরোপুরি পুলিশের সিদ্ধান্তের উপর নির্ভর করবে।
শুক্রবার (১৯ আগস্ট) রাজধানী স্টকহোমে এক সংবাদ সম্মেলনে দেশটির বিচার বিষয়ক মন্ত্রী গানার স্ট্রমের জানান, কোরআন পোড়ানোর ধারাবাহিক কয়েকটি ঘটনায় সম্প্রতি দেশের অভ্যন্তর ও আন্তর্জাতিক পর্যায় থেকে অসন্তোষ প্রকাশ করা হয়েছে। এমনকি, নানা ধরনের হুমকিও আসছে, যা সুইডেনের জাতীয় নিরাপত্তা পরিস্থিতিকে ঝুঁকিপূর্ণ করে তুলেছে।
‘আমরা জানি না, এসব হুমকি আদৌ সঠিক, নাকি ফাঁকা বুলি। তবে জাতীয় নিরাপত্তাকে আমরা কোনোভাবেই ঝুঁকিতে ফেলতে পারি না।’
এদিকে, সরকারের এই উদ্যোগকে ইসলামপন্থী বিশ্বের সামনে ‘নতজানু হওয়া’ হিসেবে বিবেচনা করছে সুইডেনের বিভিন্ন রাজনৈতিক দল। এ তালিকায় রয়েছে সরকারের সমর্থক দল সুইডেন ডেমোক্র্যাটসও।
বিশ্বের উদারপন্থী দেশগুলো মধ্যে সুইডেনের অবস্থান উপরের দিকে। অনেক আগে থেকেই ধর্মসহ যে কোনো মতবাদের উন্মুক্ত সমালোচনা করার অনুমতি রয়েছে দেশটিতে। তবে চলতি বছরের ২৮ জুন পবিত্র ঈদুল আজহার দিন স্টকহোমের প্রধান মসজিদের বাইরে পবিত্র কোরআনের একটি কপিতে আগুন ধরিয়ে দেন সালওয়ান মোমিকা নামের এক ইরাকি অভিবাসী। এ ঘটনায় ক্ষোভে ফুঁসে ওঠে গোটা মুসলিম বিশ্ব।
ওই ঘটনায় কোরআন অবমাননাকারীদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় তীব্র সমালোচনার মুখে পড়ে সুইডেন সরকার। মুসলিম বিশ্বের দাবি, এ ঘটনা তাদের বিশ্বাসের ওপর আঘাত। ব্যক্তির অধিকার কতদূর পর্যন্ত মেনে নেওয়া হবে- এ বিষয়ে আলোচনা হওয়া প্রয়োজন।
প্রতিবাদস্বরূপ কয়েকটি মুসলিম অধ্যুষিত দেশে সুইডেন দূতাবাসে হামলার খবরও পাওয়া যায়। কোরআন অবমাননার প্রতিবাদে গত ১৯ জুলাই ইরাকে সুইডেনের দূতাবাসের সামনে বিক্ষোভ করে দেশটির মুসলিম নাগরিকরা। ১ আগস্ট তুরস্কের সুইডিশ দূতাবাসের এক কর্মী গুলিবিদ্ধ হন। গত ৯ আগস্ট লেবাননে দেশটির দূতাবাসে হামলার চেষ্টা চালায় আততায়ীরা।
তবে ঘটনাটির পর তাৎক্ষণিক নিন্দা জানালেও নাগরিকদের মতপ্রকাশ ও বিক্ষোভের স্বাধীনতার সাংবিধানিক অধিকার সুরক্ষিত রাখার কথাও জানায় সুইডেন সরকার। এক বিবৃতিতে দেশটির সরকার বলে, সংবিধানে সবাইকে বিক্ষোভ করার অধিকার দেওয়া হয়েছে। কোরআন পুড়িয়ে যারা বিক্ষোভ দেখিয়েছেন, তাদেরও সাংবিধানিক অধিকার রয়েছে। সে কারণেই তাদের বাধা দেওয়া হয়নি।
এদিকে, জঙ্গি হামলার আশঙ্কা বেড়ে যাওয়ায় এরই মধ্যে নিজ দেশের নাগরিকদের সুইডেন ভ্রমণে সতর্ক করেছে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য। অন্যদিকে, হামলার ঝুঁকি কমাতে নিজেদের সীমান্তে নিরাপত্তা জোরদার করেছে সুইডেন।
সূত্র: রয়টার্স
এসএএইচ