সমালোচনার জেরে হাওয়াই দ্বীপ পরিদর্শনে যাচ্ছেন বাইডেন
ভয়াবহ দাবানলে তছনছ হয়ে গেছে যুক্তরাষ্ট্রের হাওয়াই দ্বীপ। এখন পর্যন্ত ১০১ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। তবে এখনো ১৩০০ মানুষ নিখোঁজ রয়েছে। মার্কিন সরকারে নিষ্ক্রিয় ভূমিকার কারণে ব্যাপক প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে বলে তীব্র সমালোচনা শুরু হয়েছে। প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন নিজেও এ বিষয়ে তেমন কোনো প্রতিক্রিয়া দেখাননি। খবর বিবিসির।
হাওয়াই দ্বীপের এক আইনপ্রণেতা অভিযোগ করেছেন যে, কর্মকর্তারা দাবানলের ভয়াবহতাকে অবহেলা করার কারণেই এত বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। রাজ্য কর্তৃপক্ষ বলছে, তারা এই অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত শুরু করছে।
আরও পড়ুন: দাবানলে তছনছ হাওয়াই দ্বীপ, মৃতের সংখ্যা প্রায় ১০০
এদিকে কর্তৃপক্ষের অবহেলা এবং সঠিক সময়ে পরিস্থিতি সামাল দিতে না পারার অভিযোগ নিয়ে ইতোমধ্যেই সাধারণ মানুষের মধ্যে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। এমন পরিস্থিতিতে প্রেসিডেন্ট বাইডেন বলেছেন, তিনি যত দ্রুত সম্ভব ওই দ্বীপ পরিদর্শন করতে যাবেন। এর আগে বাইডেন বলেন, ওই দ্বীপের জনগণের যা কিছু প্রয়োজন তাদের কাছে সেসব পৌঁছে দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করতে চান তিনি।
হাওয়াইয়ের বাসিন্দাদের অভিযোগ, ভয়াবহ এই দুর্যোগে যত দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার প্রয়োজন ছিল সেটা করেনি ফেডারেল সরকার। চলতি সপ্তাহে ডেলওয়্যারে রেহোবোথ বীচে এক সংবাদ সম্মেলনে বাইডেনকে হাওয়াই দ্বীপের দাবানলের কারণে ক্রমবর্ধমান মৃত্যুর সংখ্যা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি কোনো মন্তব্য করেননি।
মঙ্গলবার প্রেসিডেন্ট বলেন, উদ্বেগের কারণে তিনি এখনও ওই দ্বীপ পরিদর্শনে যাননি। তার মতে, তিনি এখন সেখানে গেলে মানবিক সহায়তার দিকে নজর কমে যাবে। তিনি সে সময় জানান যে, জিল বাইডেনও তার সঙ্গে হাওয়াই দ্বীপে যাবেন।
তিনি বলেন, আমি এখনই সেখানে যেতে চাই না। আমি অনেক দুর্যোগপূর্ণ এলাকায় গিয়েছি। আমি নিশ্চিত করতে চেয়েছি যে, আমাদের সফরের কারণে যেন চলমান উদ্ধার ও সহায়তা প্রচেষ্টা ব্যাহত না হয়।
ত্রাণ প্রচেষ্টায় সহায়তার জন্য এ পর্যন্ত পাঁচ শতাধিক ফেডারেল কর্মী মোতায়েন করা হয়েছে। যার মধ্যে ১৫০ জন অনুসন্ধান ও উদ্ধার বিশেষজ্ঞ রয়েছেন। এছাড়া মাউয়িতে অতিরিক্ত কর্মীও পাঠানো হচ্ছে।
মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। লোকজনকে উদ্ধারে কাজ করে যাচ্ছেন উদ্ধারকর্মীরা। হাওয়াই দ্বীপের ঐতিহাসিক মাউয়ি শহরটির বড় একটি অংশই দাবানলে পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গেছে। যারা সেখান থেকে বেঁচে ফিরেছেন তারা বলছেন, স্থানীয় কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে তাদেরকে কোনো প্রকার সতর্কবার্তা দেওয়া হয়নি।
গত মঙ্গলবার হাওয়াই দ্বীপে ওই দাবানলের সূত্রপাত হয়। পরে হারিকেন ডোরার প্রভাবে তৈরি হওয়া প্রচণ্ড বাতাসের কারণে দাবানল ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়তে শুরু করে। এরপর কর্তৃপক্ষ প্রায় ১৪ হাজার পর্যটককে সেখান থেকে সরিয়ে নেয়। তবে বিদ্যুৎ ও ইন্টারনেট যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙে পড়ায় এখনো অনেক মানুষের সন্ধান পায়নি কর্তৃপক্ষ।
আরও পড়ুন: হাওয়াইয়ে দাবানলে মৃত বেড়ে ৮৯, বাড়ছে ক্ষোভ
মাউয়ি দ্বীপের কর্তৃপক্ষ বলছে, এই দাবানলে যে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তা কাটিয়ে উঠতে কয়েক বছর লেগে যাবে এবং শত শত কোটি ডলার খরচ করতে হবে। গভর্নর গ্রীন বলেন, এটিই সম্ভবত হাওয়াই রাজ্যের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় প্রাকৃতিক বিপর্যয়।
টিটিএন