অনুপ্রবেশ করা মার্কিন সেনার বিষয়ে তথ্য দিয়েছে উত্তর কোরিয়া

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ০২:১৩ পিএম, ০৩ আগস্ট ২০২৩
ছবি সংগৃহীত

সম্প্রতি উত্তর কোরিয়ায় অনুপ্রবেশ করেন এক মার্কিন সেনা। তারপর থেকেই তাকে নিয়ে গুঞ্জন শুরু হয়। তার ভাগ্যে কী ঘটেছে তা নিয়ে চিন্তার অন্ত ছিল না। যুক্তরাষ্ট্র এ বিষয়ে কোনো তথ্যও জানতে পারছিল না। অবশেষে কিছুটা স্বস্তি মিলেছে। ওই সেনার বিষয়ে তথ্য দিয়েছে উত্তর কোরিয়া। পিয়ংইয়ংয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে, ট্র্যাভিস কিং নামের ওই সেনাকে নিরাপত্তা বাহিনীর হেফাজতে রাখা হয়েছে।

জাতিসংঘের কমান্ড জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে ওই সেনার অবস্থান সম্পর্কে তথ্য দেওয়ার অনুরোধ করা হলে এর প্রতিক্রিয়ায় পিয়ংইয়ং এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।

আরও পড়ুন: উত্তর কোরিয়ায় মার্কিন সেনার অনুপ্রবেশ, নিশ্চুপ পিয়ংইয়ং

গত ১৮ জুলাই দক্ষিণ কোরিয়া থেকে একটি গাইড ট্যুরে থাকার সময় সীমান্ত পেরিয়ে উত্তর কোরিয়ায় প্রবেশ করেন ওই মার্কিন সেনা। তবে জাতিসংঘ কমান্ড বলছে যে, তারা এই মুহুর্তে পিয়ংইয়ং এর প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে বিস্তারিত কোনো তথ্য জানাতে পারছে না। তাছাড়া ওই সেনাকে দেশে আনার ব্যপারে তারা হস্তক্ষেপ করতে চায় না বলেও জানানো হয়।

তবে পিয়ংইয়ং আলোচনা শুরু করতে প্রস্তুত বলেই মনে হচ্ছে। ডিমিলিটারাইজড জোন (ডিএমজেড) পরিচালনা করে জাতিসংঘের কমান্ড। দুই কোরিয়ার ওই যৌথ নিরাপত্তা এলাকায় পিয়ংইয়ংয়ের সেনাবাহিনীর কাছে সরাসরি ফোন লাইন ব্যবহার করে ট্র্যাভিস কিং সম্পর্কে তথ্য চাওয়া হয়।

উত্তর কোরিয়া এর আগে জানিয়েছিল জাতিসংঘের কমান্ড থেকে তাদেরকে অনুরোধ করা হয়েছে। কিন্তু এই প্রথম তারা এ বিষয়ে সাড়া দিয়েছে। তারা নিশ্চিত করেছে যে, ওই মার্কিন সেনা তাদের হেফাজতে রয়েছে।

এর আগে কোরিয়ায় মার্কিন সামরিক বাহিনীর এক মুখপাত্র নিশ্চিত করেন যে, ২৩ বছর বয়সী ওই ব্যক্তি একজন প্রাইভেট সেকেন্ড ক্লাস পদমর্যাদার মার্কিন সেনা সদস্য।

ট্র্যাভিস কিং সম্প্রতি দক্ষিণ কোরিয়ার একটি কারাগারে আটক ছিলেন। শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে তাকে যুক্তরাষ্ট্রে ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছিল। এজন্য তাকে দক্ষিণ কোরিয়ার সেনা ঘাঁটি ক্যাম্প হামফ্রেস থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়।

কিন্তু তিনি যুক্তরাষ্ট্রে ফেরার বিমানে ওঠেননি। দক্ষিণ কোরিয়ার ইনচেন বিমানবন্দরের কাস্টমস থেকেই হঠাৎ গায়েব হয়ে যান এই সেনা সদস্য। তিনি কোনোভাবে টার্মিনাল থেকে বেরিয়ে উত্তর কোরিয়া এবং দক্ষিণ কোরিয়ার জয়েন্ট সিকিউরিটি এরিয়ায় (জেএসএ) সীমান্ত সফরে যোগ দেন।

ওই এলাকাটি বিমানবন্দর থেকে প্রায় ৫৪ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। ওই সফরের সময়ই সীমান্ত অতিক্রম করেন তিনি। এরপর থেকে তার সঙ্গে কারও কোনো যোগাযোগ হয়নি।

উত্তর কোরিয়ার কারাগারে সাধারণত মার্কিন বন্দীদের সাথে নৃশংস আচরণ করা হয়। ২০১৮ সালে উত্তর কোরিয়া এক মার্কিন কলেজ ছাত্রকে মুক্তি দেয়। তিনি একটি হোটেল থেকে ব্যানার চুরির জন্য বন্দী হয়েছিলেন। তিনি কোমায় থাকা অবস্থায় যুক্তরাষ্ট্রে ফিরে আসেন এবং পরে মারা যান।

আরও পড়ুন: মুক্তির ৪ মাস আগে জেল পলায়ন, ফের মিললো ৪০ বছরের সাজা

১৯৯৬ সাল থেকে উত্তর কোরিয়া বেশ কয়েকবার মার্কিন নাগরিকদের আটক করেছে। তাদের মধ্যে পর্যটক, বিশেষজ্ঞ এবং সাংবাদিক ছিলেন। ২০১৭ সালের জুলাই মাসে মার্কিন সরকার তাদের নাগরিকদের উত্তর কোরিয়ায় যাওয়া নিষিদ্ধ করেছিল।

যুক্তরাষ্ট্রের এক প্রতিরক্ষা কর্মকর্তা এর আগে সিবিএসকে বলেন, ওই সেনা কর্মকর্তা ‌‘ইচ্ছাকৃতভাবে’ সীমান্ত অতিক্রম করেছেন। যদিও কেন তিনি এমনটা করলেন সে সম্পর্কে কিছু জানা যায়নি।

টিটিএন

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।